পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার ঢালাও অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত জোরদার করছে মনমোহন সিংহের সরকার।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, সহারা-র মতো প্রতিষ্ঠানকে সুপ্রিম কোর্ট ২৪ হাজার কোটি টাকা অবিলম্বে আমানতকারীদের ফেরত দিতে বলেছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা দেশেই কোন কোন আর্থিক সংস্থা অনিয়ম ও গরিব মানুষের টাকা লুঠে জড়িত, তা অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁরই নির্দেশে সেবির চেয়ারম্যান ইউ কে সিনহাও সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যসচিবদের এ বিষয়ে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় অর্থসচিব আর এস গুজরাল বলেন, “আইন তার নিজের পথে হাঁটবে, কোনও অবৈধ কার্যকলাপ কেন্দ্র বরদাস্ত করবে না।”
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাসমুন্সি আজ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন তুলেছেন, রাজ্য কেন চিট ফান্ডগুলির অনিয়ম আড়াল করেছে? কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এক দিকে গরিব মানুষ অন্ধ বিশ্বাসে টাকা জমা রাখছে। অন্য দিকে বেকার যুবক এই টাকা জোগাড়ের কাজে নেমে বিকল্প কর্মসংস্থানের রাস্তা খুঁজতে চাইছে। অথচ দু’টোর কোনওটাই হচ্ছে না। গরিবের টাকা লুঠ হচ্ছে। বেকাররাও কয়েক মাস পরে কাজ হারাচ্ছেন।” দীপা বলেন, গরিব মানুষের টাকা কোথায় জমা পড়েছে তা জানা প্রয়োজন। সেই অর্থ ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা টিভি চ্যানেলগুলিতে বিনিয়োগ হয়েছে কি না, তারও তদন্ত প্রয়োজন। দীপার বক্তব্য, তিনি আগেই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানান। প্রাক্তন ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী, প্রণব মুখোপাধ্যায় ও পি চিদম্বরমের কাছেও দরবার করেছেন। অর্থসচিব ও সেবি-র চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা হয়েছে। দীপা বলেন, “আমি খুশি যে কেন্দ্র বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করছে।”
সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ডি সুব্বারাও কলকাতায় গিয়েছিলেন। তিনিও জানিয়েছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক পশ্চিমবঙ্গে সন্দেহজনক টাকা তোলার সংস্থাগুলির বাড়বাড়ন্তে উদ্বিগ্ন। কারণ এ রাজ্যেই টাকা তোলা আর্থিক সংস্থার সংখ্যা সবথেকে বেশি। সেই উদ্বেগের কথা রাজ্য সরকারকে জানানোও হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে আবার বলা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের সব গ্রামে ব্যাঙ্কের শাখা নেই বলেই এই সব আর্থিক সংস্থার বাড়বাড়ন্ত। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কর্তারা বলছেন, ব্যাঙ্কের আমানত সংগ্রহেও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে এই সব সংস্থা। সেবি সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা আর্থিক সংস্থাগুলির অনিয়ম তদন্ত করে দেখছে। কিন্তু সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। সেই কারণেই রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অডিট রিপোর্ট জমা দিতে না পারলে আর্থিক সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। |