হুল্লোড়
ইন্দ্রাণী হালদার, লেখক
“সিনেমা চলতে গেলে শুধু তিনটে জিনিসের দরকার। এন্টারটেনমেন্ট এন্টারটেনমেন্ট আর এন্টারটেনমেন্ট। আর আমি এন্টারটেনমেন্ট দিতেই এসেছি দর্শকদের।”
যদি আপনি ভাবেন এই কথাগুলো ‘দ্য ডার্টি পিকচার’য়ের বিদ্যা বালন বলছেন তা হলে ভুল করছেন।
ওপরের কথাগুলো বলছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদার, যিনি সদ্যই শেষ করেছেন তাঁর প্রথম গল্প লেখার কাজ।
সামনের বছরেই এই গল্পটা রূপান্তরিত হবে সিনেমায়। নিজের লেখা গল্পের ওপর এত আত্মবিশ্বাসী ইন্দ্রাণী যে তিনি বলেই দিচ্ছেন, “এই ছবিটা হলে কিন্তু সুপারহিট হবে।”
গল্পটা নিজে লিখলেও এই মুহূর্তে সেটার চিত্রনাট্য নিজে লিখছেন না। চিত্রনাট্য লিখছেন ‘ক্যাকটাস’-এর সিধু। সিনেমার স্ক্রিন প্লে রাইটার হিসেবে এটা তাঁরও প্রথম কাজ। “আমি নিজে স্ক্রিন প্লে-টাও লিখতে পারতাম। এত দিন ধরে কাজ করছি আমি। অনেক সময় অনেক স্ক্রিন প্লে-তে কিছু বদলও আমি করে থাকি, যেগুলো আমার পরিচালকরা মেনে নেন। অতনু ঘোষ তো আমায় সব সময় বলে, আমার ইনপুট অনেক এফেক্টিভ। কিন্তু এই ছবিতে যেহেতু আমি অভিনয় করছি, কাস্টিংও অনেকটাই দেখছি। তাই স্ক্রিন প্লে-টা এখনই লিখতে চাই না। পরের বছর যদি কোনও গল্প লিখি, অবশ্যই স্ক্রিন প্লে লিখব,” জানাচ্ছেন ইন্দ্রাণী।
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল
যে সিনেমার গল্প লিখেছেন ইন্দ্রাণী, ইমপা-তে তার টাইটেলও রেজিস্টার্ড হয়ে গিয়েছে। ছবির নাম ‘দশভুজা অ্যাকাডেমি’।
“গত আট বছর ধরে আমি একটা অ্যাকাডেমি চালাচ্ছি। যে গল্পটা আমি লিখেছি সেটাও অ্যাকাডেমির ওপরেই। সত্যি বলতে কি, এটা আমার স্বপ্নের প্রজেক্ট। ২০১৩-তে শু্যটিং শুরু হবে। সংঘমিত্রা চৌধুরি পরিচালনা করবেন ছবিটা। টালিগঞ্জের অনেক অভিনেত্রী থাকবে এই ছবিতে। কাস্টিংয়ের কাজ ফাইনাল করা চলছে,” বলছেন তিনি।
‘ক্যাকটাস’-এর সিধু, যিনি এই ‘দশভুজা অ্যাকাডেমি’ ছবি দিয়েই প্রথম চিত্রনাট্য লিখিয়ে হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছেন, তিনিও যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত।
“স্ক্রিন প্লে লেখার কাজ আমার কাছে একটা দারুণ অভিজ্ঞতা। আমি গ্রেটফুল যে ইন্দ্রাণী আমাকে চিত্রনাট্য লেখার দায়িত্ব দিয়েছেন। কাজটা করতে দারুণ এনজয় করেছি। এবং সত্যি বলতে কী সুযোগ পেলে অনেক চিত্রনাট্য লিখতে চাই,” বলছেন ক্যাকটাসের সিধু।
কিন্তু যে প্রশ্নটা ইন্দ্রাণীকে না করলেই নয় তা হল উনি তো গত তিন বছর ধরে মুম্বইতে টানা কুড়ি ঘন্টা ধরে কাজ করছেন। তা হলে গল্প লেখার মতো সময় পেলেন কোথায়?
“মর্যাদা’ সিরিয়ালটার কাজ গত জুন মাসেই শেষ হয়েছে। টানা অনেক দিন কাজ করলাম ওটাতে। বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আই ওয়াজ ফ্লাডেড উইথ অফারস। কিন্তু ঠিক করলাম একটু ব্রেক নেব। এই অবসরেই লিখে ফেললাম গল্পটা,”
বললেন ইন্দ্রাণী।
গল্প লিখেছেন, স্ক্রিপ্টে ইনপুট দিচ্ছেন, কাস্টিং ঠিক করেছেন। তা হলে পরিচালনাটা নিজেই করলেন না কেন?
“খুব লোভ হচ্ছিল। কিন্তু যেহেতু আমি অভিনয়ও করছি তাই ভাবলাম এবারের মতো পরিচালনার দায়িত্বটা ছেড়েই দিই। ভবিষ্যতে দেখা যাবে।” ইন্দ্রাণীর সহাস্য উত্তর।
তা যে গল্পটা নিয়ে ইন্দ্রাণী ছবিটা লিখছেন, আনন্দ প্লাস-এর পাঠকদের সেই গল্প আর একটু সবিস্তারে কিছু কি জানাতে চান ইন্দ্রাণী?
“হ্যাঁ অবশ্যই। পুরো গল্পটা জুড়েই আছে বাঙালিয়ানা আর বাঙালি সংস্কৃতি। এখনকার বাঙালি যুব সমাজে এই বাঙালিয়ানা অনেকটাই হারিয়ে গিয়েছে। সেটাও এই ছবির বিষয়বস্তু। মুম্বইতে তো লোকজন আমাদের এই বাঙালি কালচার আর স্টাইলের ভীষণ ভক্ত। তাই
আমি এই ‘দশভুজা অ্যাকাডেমি’-র গল্পটা আজকের বাঙালিদের জন্যই লিখেছি। আমি বাংলার মেয়ে। এটা একটা বিশাল আশীর্বাদ। কাজেই যত বাঙালি আছেন সারা বিশ্বে তাঁদের উদ্দেশ্যেই আমার এই গল্প,” বলছেন তিনি।

আমরাও লিখি

শতাব্দী রায়

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত

কোয়েল মল্লিক
ইন্দ্রাণী হালদার একা নন।
টালিগঞ্জের অন্য নায়িকারাও কিন্তু গল্প, কবিতা, উপন্যাস লিখতে যথেষ্ট পটু।
যেমন ধরুন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি করছেন। শত ব্যস্ততার মধ্যেও এখনও লেখেন সময় পেলেই।
“আমার ভীষণ ভাল লাগে লিখতে। নিজের একটা ছোটগল্প আর কবিতার বই নিয়ে কাজ চলছে পুরোদমে। পরের বছরের মধ্যে সংকলনটা প্রকাশিত হবে। তা ছাড়াও আমার প্রোডাকশন কোম্পানি ‘ভাবনা, আজ ও কাল’-এর জন্য নানা রকম স্ক্রিপ্ট তো লিখেই চলেছি। এ ছাড়াও বিভিন্ন আইডিয়া নিয়ে ২০-২৫টা কনসেপ্ট নোট লেখা আছে আমার। এ ছাড়া পত্র-পত্রিকায় তো নিয়মিত লিখি।” তাইল্যান্ডে শু্যটিংয়ের মাঝখানে জানাচ্ছেন তিনি।
ঋতুপর্ণার মতোই নিয়মিত লেখার চর্চা বজায় রেখেছেন অভিনেত্রী সাংসদ শতাব্দী রায়।
“লিখতে তো ভীষণ ভাল লাগেই। কিন্তু এখন সাংসদ হওয়ার পর এত ব্যস্ত হয়ে গেছি যে আগের মতো সময় পাই না। তবে এটুকু বলতে পারি, লেখাটা আমার কাছে এখনও সবচেয়ে বড় স্ট্রেস-বাস্টার। মন খারাপ হলেই আজও তা কাটানোর জন্য লেখাই আমার ভরসা। এবারে বইমেলায় আমার কবিতা এবং উপন্যাসের ইংলিশ ট্রান্সলেশন করে বইও বেরোচ্ছে”, বলছেন তৃণমূল সাংসদ। লেখালেখি করেন কোয়েল মল্লিক ও। “জানেন, ক্লাস ইলেভেনে আমি একবার ইন্টার স্কুল কম্পিটিশনে লেখার জন্য সেকেন্ড প্রাইজ পেয়েছিলাম। আজও আমার মা, আমার শিক্ষকেরা আমাকে বলেন আমি যেন লেখাটা না ছাড়ি। আর সবচেয়ে ভাল লাগে ‘রিলেশনশিপ বেসড্’ ছোটগল্প লিখতে। আজও সুযোগ পেলে সেটাই লিখি”, বলছেন কোয়েল। যিনি আনন্দবাজারে শনিবারের ‘পত্রিকা’র জন্য মাঝেমাঝে লিখেও থাকেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.