ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে জমিহারাদের স্থায়ী চাকরির দাবিতে সম্প্রতি দু’দিন ধরে প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ-অবস্থান করেছিল জমিহারা কমিটি। সমালোচনা করেছিল সিপিএমের ভূমিকার। ঠিক তার পরেই ওই দাবিতে সেখানে গণ কনভেনশন করল সিপিএম। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদ তথা সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাসুদেব আচারিয়া।
রঘুনাথপুর ২ এবং নিতুড়িয়া ব্লকের একাংশে ১২০০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ছে ডিভিসি। জমি-সহ বিভিন্ন সমস্যায় প্রথম পর্যায়ের কাজ এখনও শেষ হয়নি। তারই মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১২০০ মেগাওয়াটের দু’টি ইউনিট রঘুনাথপুরেই অনুমোদন করেছেন ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। দ্রুত দ্বিতীয় পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।
অবস্থানে বসে এই প্রকল্পে জমিহারাদের স্থায়ী চাকরি পাওয়ার বিষয়ে বাসুদেববাবুর ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছিল জমিহারা কমিটি। তাদের অভিযোগ ছিল, শিল্যানাসের সময়েও বাসুদেববাবুরা স্থায়ী চাকরির বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বাস্তবে কিছু করেননি। এ দিনের কনভেনশনে সেই বিষয়ে ডিভিসি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন সিপিএম সাংসদ। তিনি বলেন “শিলান্যাসের সময়েও তৎকালীন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী জমিহারাদের স্থায়ী চাকরির বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েও পালন করেননি। পরে লোকসভায় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসাবে আমি এ ব্যাপারে মন্ত্রীকে বহু বার জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
এ দিন প্রকল্প এলাকার পাশের নিলডি, বড়রা, রায়বাঁধ ও নতুনডিসিপিএমের এই চারটি লোকাল কমিটির উদ্যোগে কনভেনশন হয়। সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, এলাকার দায়িত্বে থাকা প্রদীপ রায়ের অভিযোগ, প্রকল্পে জমিহারা পরিবারগুলির কর্মসংস্থানের বিষয়ে নির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন করার জন্য ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে বলার পরেও তাঁরা কিছুই করেননি। বাসুদেববাবু বলেন, “প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের ইউনিটগুলির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় থাকবেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী। জমিহারাদের স্থায়ী চাকরির বিষয়-সহ নিয়োগ নীতি প্রণয়নের জন্য তখন তাঁর কাছে দাবি জানাব।” ডিভিসি-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রকল্পে জমিহারাদের স্থায়ী চাকরির প্রসঙ্গটি নীতিগত বিষয় হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় ভাবে ওই বিষয়ে কিছু করা সম্ভব নয়।
রাজ্য সরকারের ভূমিকার জন্যও ডিভিসি-র প্রকল্পে কাজের অগ্রগতি হচ্ছে না বলে এ দিনের কনভেনশনে অভিযোগ করেছে সিপিএম। বাসুদেববাবু বলেন, “তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ‘রেল করিডর’ ও ‘ওয়াটার করিডর’-এর জন্য জমি পেতে সমস্যায় পড়ছে ডিভিসি।” যদিও রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরির দাবি, “সিপিএমের আমলেই ওই প্রকল্পের কাজে ঢিলেমি হয়েছে। প্রশাসনিক স্থবিরতা এবং সিপিএমের নেতিবাচক আন্দোলনের জন্যই নির্মাণ কাজ বারবার ব্যাহত হয়েছে। আমরা ক্ষমতায় আসার দেড় বছরের মধ্যে সমস্যা মিটিয়ে কাজে গতি এনেছি বলে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ এখানেই দ্বিতীয় পর্যায়ে ইউনিট গড়ছেন।” |