সংস্কৃতি যেখানে যেমন..

নন্দনমেলা

কলাভবনে নন্দনমেলায় ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
অসুস্থ এক ছাত্রের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে সঙ্কটে পড়েছিলেন কলাভবনের সহপাঠী ও শিক্ষকেরা। ওই ঘটনার পরের বছর, ১৯৭৩ সালে কলাভবনের তৎকালীন অধ্যক্ষ প্রখ্যাত শিল্পী সোমনাথ হোড় ও কলাভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ দিনকর কৌশিকের উদ্যোগে শুরু হয় একটি শিল্পমেলা। দিনকরবাবু যার নাম দেন ‘নন্দনমেলা’। কলাভবনের এই মেলা আসলে এমন একটি মঞ্চ, যেখানে কলাভবনের বর্তমান ও প্রাক্তনীরা সরাসরি নিজেদের শিল্পকর্ম বিক্রি করতে পারেন। মূল লক্ষ্য অবশ্য ছিল, শিল্পকর্ম বিক্রির দানের টাকায় একটি তহবিল (‘ছাত্র কল্যাণ ভাণ্ডার’) তৈরি করা। যার থেকে কলাভবনের বিপদগ্রস্ত পড়ুয়াদের আপৎকালীন সাহায্য দেওয়া যাবে।
তার পর থেকে নিয়মিত ভাবে ১-২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কলাভবনের চৌহদ্দিতে মেলা বসে। কলাভবনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুর জন্মদিন ৩ ডিসেম্বর। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই আগের দু’দিন জুড়ে নন্দনমেলা বসে। কলাভবনের পড়ুয়াদের বৈচিত্রময় শিল্পসামগ্রীতে সমৃদ্ধ এই নন্দনমেলায় দূরদূরান্তের শিল্পরসিকেরা আসেন। বিকিকিনি চলে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও ওই দু’দিন শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর বর্ষপঞ্জির অন্যতম এই উৎসবে ভিড় জমিয়ে ছিলেন দেশ-বিদেশে বহু মানুষ।

বিবেকানন্দ সংখ্যা
“এখানে আমার সঙ্গে আপনার কিছুই করণীয় নেই। এখানে তো সর্বত্র ত্যাগ। রবীন্দ্রনাথের সন্ধানে যান। তিনি এখনও জীবনের মধ্যে আছেন।” বিবেকানন্দ জানিয়েছিলেন বিখ্যাত জাপানি চিত্রশিল্পী কাকুজো ওকাকুরাকে (দেবকুমার দত্ত, ‘রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দ পারম্পরিক দর্পণে’)। এমন নানা অজানা তথ্য মিলবে জয়দেব থেকে প্রকাশিত ‘দেউল’ লিটল ম্যাগাজিনের ‘স্বামী বিবেকানন্দ সংখ্যা’য়। সম্পাদক সুভাষ কবিরাজ। অত্যন্ত যত্ন সহকারে প্রকাশিত এই সংখ্যায় প্রবন্ধ রয়েছে মোট ১২টি। সেখানে বিবেকানন্দের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের প্রথম দেখা হওয়া থেকে ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্ক নানা বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে।

তবলাবাদক

আবীর বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
মাত্র চার বছর বয়সে হাতে খড়ি। গুরু ছিলেন পৃথ্বীশ মজুমদার। সেই থেকে তবলাই ধ্যান ও জ্ঞান সিউড়ির আবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পরে আবীর দীর্ঘ দিন তালিম নিয়েছেন বিখ্যাত তবলাবাদক অশোক মৈত্রের কাছে। ক্রমে সব ধরনের গানে বিভিন্ন শিল্পীর সঙ্গে তবলা সঙ্গত করে শিল্পীমহলে নিজের একটা পরিচিতি গড়ে তুলেছেন এই শিল্পী। ইতিমধ্যেই স্বপ্না চক্রবর্তী, পিন্টু ভট্টাচার্য, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, অমৃক সিংহ অরোরা প্রমুখ প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীদের সঙ্গে তবলা বাজিয়ে বহু দর্শক-শ্রোতার মন জয় করেছেন আবীর।

সংক্ষেপে
• বিষ্ণুপুর কৃষ্ণগঞ্জ রাস উৎসবের সাংস্কৃতিক মঞ্চে গত বুধবার থেকে রবিবার পর্যন্ত হয়েছে নানা বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। ধ্রুপদ গানের পাশাপাশি ছিল আধুনিক গান, নাচ ও আবৃত্তির আসর। উদ্বোধন করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।

• গত ২৮-৩০ নভেম্বর মানবাজারের খড়িদুয়ারা কুমারী গ্রামে সৃজন উৎসব পালিত হয়েছে। মানবাজার-বান্দোয়ান রাস্তায় টিলার উপরে অনুষ্ঠিত তিন দিনের এই মেলায় মানভূম-সহ বিভিন্ন রাজ্যের লোকসংস্কৃতি পরিবেশিত হয়েছে। উৎসব কমিটির অন্যতম কর্তা সৈকত রক্ষিত বলেন, “শহর ও গ্রামীণ সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটানো এই মেলার মূল উদ্দেশ্য। এখানে বিভিন্ন রাজ্যের শতাধিক শিল্পী উপস্থিত হয়েছিলেন।” অন্য দিকে, রাস উৎসব উপলক্ষে মানবাজারের ঝাড়বাগদা, পেদ্দাও, মাঝপাড়াতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে ঝাড়বাগদা রাসমন্দির প্রাঙ্গণে। কমিটির সদস্যরা যাত্রাপালায় অভিনয় করেছেন।

• ‘ভারত নির্মাণ জনতথ্য অভিযান’ মেলা হল খাতড়ায়। সম্প্রতি তিন দিনের এই মেলা হয়েছে খাতড়া স্টেডিয়ামে। মেলার উদ্বোধন করেছিলেন বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক সুশান্ত চক্রবর্তী। জনসচেতনতা বিষয়ক ২০টি স্টল ছিল। বেতার ও দূরদর্শন শিল্পীদের পাশাপাশি স্থানীয় শিল্পীদের নিয়েও নাচ, গান-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

• সম্প্রতি সাঁতুড়ির গড়শিকা গ্রামে রাধাগোবিন্দ সেবায়েতবৃন্দের পরিচালনায় তিন দিন ধরে রাস উৎসব হয়েছে। ১৬৯ বছর ধরে চলছে এই উৎসব। মন্দিরের সামনের মাঠে স্থায়ী মঞ্চে যাত্রাপালা মঞ্চস্থ হয়েছে। ছিল নরনারায়ণ সেবা।

• বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব কল্লোল মুখোপাধ্যায়ের স্মরণে সম্প্রতি পুরুলিয়া শহরে হয়েছে নাটকের অনুষ্ঠান। শহরের হরিপদ সাহিত্য মন্দিরে এবং পুরুলিয়া নামের নাট্যগোষ্ঠীর প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হয়েছে ‘স্বরবর্ণ’ নাটক। উদ্যোক্তাদের তরফে রাজু রায় জানান, মূল নাটকটি জ্যোৎস্নাময় ঘোষের লেখা। কল্লোলবাবু সেটিকে মানভূমের ভাষায় ভাষান্তরিত করেছিলেন।

• কুলটি সারদা সঙ্ঘ, বিবেকানন্দ পাঠচক্র ও আসানসোলের প্রণতি সোসাইটির উদ্যোগে সম্প্রতি পুরুলিয়া ২ ব্লকের দুমদুমি ও পুঞ্চা ব্লকের পুনুড়া রামকৃষ্ণ সাধনা আশ্রমে দু’টি ভিন্ন অনুষ্ঠান পালিত হয়েছে। দুমদুমিতে হয়েছে ভক্তিগীতি এবং স্বামী বিবেকানন্দর জীবন ও কাজের উপরে আলোচনা। সেখানে স্বামীজির সেবাদর্শর উপরে আলোচনা করেছেন পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের শিক্ষক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। পুনুড়া গ্রামে আলোচনা করেছেন পুনুড়া রামকৃষ্ণ সাধনা আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী জপানন্দ।


হরিপদ সাহিত্য মন্দিরে মঞ্চস্থ হওয়া ‘স্বরবর্ণ’ নাটকের একটি দৃশ্য।


• রাজ্য সরকারের নারীবিকাশ ও সমাজকল্যাণ বিভাগ এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে বড়জোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ফুটবল ময়দানে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে একটি মেলা হয়েছে গত শনিবার। ব্যবস্থাপনায় বড়জোড়ার একটি প্রতিবন্ধী স্কুল আশার আলো। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক নীলিমা দাস চৌধুরী, বড়জোড়া বিডিও ইস্তেয়াক আহমেদ, বড়জোড়া পঞ্চায়েত প্রধান অলোক মুখোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। মেলায় বসে আঁকো-সহ নানান ধরনের খেলার আয়োজন করা হয়েছিল।

• পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের উদ্যোগে সম্প্রতি ‘খাদি ও গ্রামীণ শিল্প প্রতিযোগিতা’ হয়েছে বাঁকুড়ার গাঁধী বিচার পরিষদের গাঁধী ভবনে। শিল্পীদের উৎসাহ দিতে এবং পর্ষদের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে রাজ্য জুড়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল বলে জানান পর্ষদের বাঁকুড়া জেলা আধিকারিক দীপক ঘোষ।

• বাঁকুড়ার সোনামুখী বিধানচন্দ্র বয়েজ হাইস্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে দু’দিন ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষক অশোককুমার নাগ জানান, আগামী ১৯ জানুয়ারি প্রভাতফেরির মধ্য দিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন হবে। দু’দিন ধরেই হাইস্কুল প্রাঙ্গণে ছৌ নৃত্য, রণপা-সহ নানা অনুষ্ঠান হবে। উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু-সহ বিশিষ্ট জনেরা।


• বাঁকুড়ার ‘গাঁধী বিচার পরিষদ যুবদল’ ও ‘চিল্ড্রেন ইন্টারন্যাশনাল, কলকাতা’র যৌথ উদ্যোগে প্রজনন স্বাস্থ্য ও যৌন শিক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে শনিবার এক দিনের একটি বিশেষ মেলার আয়োজন করা হয় বাঁকুড়া শহরের স্কুলডাঙা এলাকার গাঁধী বিচার পরিষদে। পাশাপাশি মাদক বিরোধী প্রচারও করা হয়েছে মেলায়।

• প্রাক বিষ্ণুপুর মেলা ‘যাত্রা উৎসব’ আজ, সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে যদুভট্ট মঞ্চে। উদ্বোধন করবেন রাজ্যের শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক অদীপকুমার রায় বলেন, “জেলার মোট ৮টি যাত্রাদল যোগ দিয়েছে এ বারের প্রতিযোগিতায়। প্রথম পুরস্কার পাওয়া দলটি বিষ্ণুপুর মেলায় যোগদানের সুযোগ পাবে।”

তথ্য: অরুণ মুখোপাধ্যায়



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.