সম্পাদক সমীপেষু...
বিজ্ঞান যখন মেয়েদের হাতিয়ার
ভারতের প্রগাঢ় বিজ্ঞান প্রীতি প্রায় ভারতীয় সভ্যতার মতোই প্রাচীন। বেদে যে সৃষ্টিতত্ত্বের চমৎকার বর্ণনা আছে, তা আসা সম্ভব এক অনুপুঙ্ক্ষ, পুনরাবৃত্ত পর্যবেক্ষণ ও গণনা থেকেই, যা কিনা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির এবং আধুনিক বিজ্ঞানের মূল কথা। পরবর্তী কালে ভারতীয় জ্যোতির্বিদরা শূন্য ও অসীমের ধারণা আবিষ্কার করেন, যা ছাড়া আধুনিক গণিত ও সাইবার-বিষয়ক উদ্ভাবনগুলি হতই না। ভারতের বিজ্ঞানপ্রীতির দীপ্তি আমেরিকায় বিজ্ঞান নিয়ে পাঠরত অগণিত ভারতীয় শিক্ষার্থীর মধ্যে অম্লান।
অন্য দিকে, আমেরিকায় বিজ্ঞানচর্চা জাতীয় অগ্রাধিকারের মর্যাদা পাওয়ায় এই দেশ বিশ্বের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে। তার একটা দারুণ ফল হয়েছে এই যে, বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যাঁরা নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন তাঁদের প্রায় অর্ধেকই আমেরিকান। এই ঘটনার গুরুত্ব বলার অপেক্ষা রাখে না, কারণ বিজ্ঞানই আমাদের দুনিয়ার নানান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার শ্রেষ্ঠ সুযোগ করে দিচ্ছে।
একটি জাতির বা সমাজের সব সদস্যের জন্য সমান সুযোগ আমেরিকার প্রধান মূল্যবোধগুলির একটি। সুযোগের সমানাধিকার গণতন্ত্রের একটি মৌলিক নীতি, এবং আজকের বিশ্ব যে বিরাট সমস্যাগুলোর সম্মুখীন, এই সমানাধিকারের সাহায্যেই আমরা সেগুলির সমাধানের আশা করতে পারি। সমাজের শুধু একটি অংশ থেকেই বিজ্ঞানীদের নিয়োগ করা মানে আদতে আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ মানুষের প্রতিভাকেই অপচয় করা। মেয়েদের বিজ্ঞানী হতে উৎসাহ দিয়ে ও সক্ষম করে আমরা মানবসভ্যতার গুরুতর বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার মতো প্রতিভাবান ও যোগ্য লোকের সংখ্যাই বাড়ানোর চেষ্টা করছি। এতে যেমন এক দিকে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের পথে নানান আঙ্গিক, নতুন অন্তর্দৃষ্টি ও বহুবিধ সমাধান পাওয়া যাচ্ছে, অন্য দিকে তেমনই জনসাধারণের জীবনযাত্রার মানও উন্নততর হচ্ছে।
সারা বিশ্বে মেয়েরা যাতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও গণিতচর্চার মাধ্যমে নিজেদের প্রতিভা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয় এবং উপযুক্ত সুযোগও পায়, সে লক্ষ্যে আমেরিকা নানা কর্মকাণ্ডে সহায়তা করে চলেছে। এই কাজগুলোর মধ্যে যেমন আছে সংস্কৃতি-নির্বিশেষে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া গড়ে তোলার জন্য নেতৃত্বের প্রশিক্ষণ, তেমনই আছে বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ার ও আবিষ্কারক মেয়েদের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, যাতে তাঁরা একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গোষ্ঠীর অংশ হয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে এই পৃথিবীকে আরও সুন্দর করে তোলার কাজে সাহায্য করতে পারেন।
এই প্রচেষ্টার অঙ্গ হিসেবে আমেরিকা ও ভারতের বেশ কিছু প্রথম সারির বিজ্ঞান-প্রতিষ্ঠান মিলে একটি সম্মিলিত কমর্সূচি ও কাঠামো তৈরি করছেন যার মাধ্যমে বিজ্ঞানের নানান পেশায় মেয়েদের নিয়োগ করা, এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও বহাল রাখা যায়। এ ছাড়াও নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাস ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ এবং ইন্দো-ইউ এস টেকনোলজি ফোরাম-এর সঙ্গে একত্রিত হয়ে আজ ১০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে চতুর্থ বার্ষিক ‘ইউ এস-ইন্ডিয়া ওয়ার্কশপ অন বেস্ট প্র্যাকটিসেস ফর উইমেন ইন সায়েন্স’ করতে চলেছেন। এই বছর ওয়ার্কশপের মূল লক্ষ্য হল মেয়েদের বিজ্ঞান-অনুশীলনে সক্ষম, আগ্রহী ও ক্ষমতার অধিকারী করে তুলতে আমেরিকান ও ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলির অনুসৃত শ্রেষ্ঠ পদ্ধতিগুলি নিয়ে আলোচনা।
আমেরিকা ও ভারত যখন লিঙ্গ-নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য বিজ্ঞানের সমানাধিকার প্রদান করতে কাজ করে চলেছে, সেই শুভ ক্ষণে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর এই উক্তি স্মরণীয়: ‘ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানের, এবং তাঁদের, যাঁরা বিজ্ঞানকে বন্ধু করে নিয়েছেন।’
মুখ্যমন্ত্রীর ছবি
ইদানীং কোনও কোনও সভামঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর পারিষদদের সঙ্গে পিছনের পর্দায় মুখ্যমন্ত্রীর খুব বড় ছবি থাকছে। প্রকৃত মুখ্যমন্ত্রীকে পর্দায় তৈরি বিশাল মুখ্যমন্ত্রীর নিরিখে অতি ক্ষুদ্র দেখাচ্ছে।
পঙ্কজকুমার নন
কবীর সুমন (রবিবাসরীয়, ২৫-১১) লিখেছেন, ‘... বড়দের মুখে মাঝেমাঝেই শুনতাম: রবীন্দ্রনাথ নাকি পঙ্কজকুমার মল্লিককে বলেছিলেন, আমার গানের ওপর তুমি স্টিমরোলার চালিয়ো না।’
রবীন্দ্রনাথের ‘স্টিমরোলার’ সংক্রান্ত উপদেশটির স্থানকালপাত্র কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা। ১৬ আষাঢ়, ১৩৪৭ (৩০ জুন ১৯৪০) ‘গীতালি’ সংস্থার অনুষ্ঠান হয়েছিল জোড়াসাঁকো ঠাকুবাড়ির বিচিত্রা ভবনে। মূল উদ্যোক্তা ছিলেন প্রফুল্লচন্দ্র (বুলা) মহলানবিশ। এক ঝাঁক শিল্পী সেখানে রবীন্দ্রগান শুনিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে নিজের গান নিয়ে কথার সূত্রে কবি বলেছিলেন, “বুলাবাবু, তোমার কাছে সানুনয় অনুরোধ এঁদের একটু দরদ দিয়ে, একটু রস দিয়ে গান শিখিয়ো, এইটেই আমার গানের বিশেষত্ব। তার উপরে তোমরা যদি স্টিমরোলার চালিয়ে দাও, আমার গান চ্যাপ্টা হয়ে যাবে।...” (অনুলেখন। সূত্র: আ বা প, ১৭ আষাঢ় ১৩৪৭। দ্র. রাজ্য সরকার প্রকাশিত রবীন্দ্র রচনাবলী, পঞ্চদশ খণ্ড: ক, বিবিধ, প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০০০, পৃ ৯২১-২৩)
পঙ্কজকুমার মল্লিক সে অনুষ্ঠানে ছিলেন না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.