কেন্দ্রের উদারনীতির নিন্দা সিটুর সমাবেশে
ডিসত্রিপুরায় বিধানসভা ভোটের আগে আজ আস্তাবল ময়দানে বিশাল সমাবেশের আয়োজন করল সিআইিটিউ। সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ-র কেন্দ্রীয় সমাবেশে উপলক্ষে লাল টুপি, লাল গেঞ্জি পরে হাজার হাজার শ্রমিক লাল পতাকা নিয়ে হাজির হয়েছিলন। শহর কার্যত ভেসে যায় ‘লাল ঢেউয়ে’। সমাবেশে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার-সহ সব বক্তাই কেন্দ্রে ইউপিএ সরকারের বিভিন্ন নীতিকে শ্রমজীবী তথা সাধারণ মানুষের স্বার্থের পরিপন্থী বলে বর্ণনা করেন।
সিটু-র কেন্দ্রীয় সমাবেশে এ দিন উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি এ কে পদ্মনাভন, রাজ্য সভাপতি শ্রমমন্ত্রী মানিক দে, সিটুর সম্পাদক পীযূষ নাগ-সহ সিপিএমের বহু নেতা। মানিক সরকার বলেন, ‘‘রাজ্যের শ্রমজীবী মানুষেরা আজ সংগ্রামী ইতিহাস রচনা করল। এ যাবৎ কালের শ্রমজীবী মানুষের বৃহত্তম সমাবেশ। সভ্যতার ইমারতের মূল কারিগর শ্রমজীবী মানুষ। শ্রমিকদের বাদ দিয়ে সভ্যতা এগিয়ে যেতে পারে না।’’ কেন্দ্রীয় বিভিন্ন নীতির কড়া সমালোচনা করে মানিক সরকার বলেন, ‘‘নয়া উদারনীতি ভারতের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। আর ত্রিপুরা রাজ্যে স্বল্প ক্ষমতায় বামফ্রন্ট সরকার শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় বদ্ধপরিকর।’ ‘‘শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার রক্ষা করার জন্য গড়ব সপ্তম বামফ্রন্ট সরকার।’’ স্লোগানে আস্তাবল ময়দান আজ ভরে উঠল। দুপুর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহন প্রায় বন্ধ হয়ে যায় ঘণ্টা চারেকের জন্য।
সভাস্থলে কেন্দ্রীয় মঞ্চে শেষ বক্তা ছিলেন মানিক সরকার, ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বিকেল গড়িয়ে গিয়েছে। সিটুর সদস্যরা তখনও দলবেঁধে মাদলের তালে তালে শ্রমজীবীদের অর্জিত অধিকারের রক্ষায় সপ্তম বামফ্রন্ট গড়ার’ স্বপ্ন নিয়ে আস্তাবলের দিকে এগিয়ে চলেছেন। রাস্তার ধারে বাড়ির ছাদ, জানলা দিয়ে চিত্রার্পিতের মতো দেখছেন শহরবাসী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন,“এ রাজ্যে ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার সুরক্ষিত। শ্রম দফতরকে নির্দেশ দেওয়া রয়েছে, শুধু মালিকপক্ষের স্বার্থের কথা বললে চলবে না। শ্রমিকদের ‘যুক্তিসঙ্গত’ দাবিও যাতে মালিক পক্ষ মানতে বাধ্য হন, সে ভাবেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। নরেন্দ্রপুর চা-বাগানের সমস্যা ‘ত্রিপাক্ষিক’ বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে।”
ভারতের লাভজনক সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে ‘নবরত্ন’ প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে সিটুর সর্বভারতীয় সভাপতি এ কে পদ্মানাভন বলেন, ‘‘ওই প্রতিষ্ঠানগুলিতেও ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ঠিকা শ্রমিক চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছে। ঠিকা শ্রমিক নিয়োগের তীব্র বিরোধী সিটু। শ্রমিক-বিরোধী আর্থিক নীতির প্রতিবাদে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ১১টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
পরিষদের মেয়াদবৃদ্ধি। নির্বাচনে না গিয়ে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের বর্তমান কার্যকালের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়ে দিল সরকার। রাজ্যের পার্বত্য এলাকা উন্নয়ন দফতরের পরামর্শে রাজ্যপাল জানকীবল্লভ পট্টনায়ক এ সংক্রান্ত নির্দেশে সই করেছেন।
ডিমা হাসাও-এর (পূর্বতন উত্তর কাছাড়) জেলাশাসক বরুণ ভুইয়াঁ জানিয়েছেন, ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল এই পরিষদের মেয়াদ। কিন্তু ডিমাসাদের প্রধান উৎসব বুসুডিমার জন্য এখনই ভোট করানো সম্ভব হচ্ছে না। পরে ভোট করাতে গেলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটবে। তা ছাড়াও ডিএইচডি-র দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারের যে চুক্তি হয়েছে, তার শর্ত হিসেবে স্বশাসিত পরিষদের বদলে গঠন করা হবে ডিমা হাসাও আঞ্চলিক পরিষদ। এর আগে ছয় মাসের মধ্যে দুই গোষ্ঠীকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে সংগঠন ভেঙে দিতে হবে। জুয়েল গোষ্ঠী গতমাসে এ কাজ সেরে নিলেও দিলীপ নুনিসা গোষ্ঠী এখনও তা করে উঠতে পারেনি।
বর্তমান পরিষদের মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বিরোধী সংগঠনগুলি। রাজ্যপালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে গিয়েছে হিলস স্টেট ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। সংগঠনের পক্ষে মনোজিৎ কারিকাপসার বক্তব্য, সরকার নির্ধারিত সময়ে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। মেয়াদ পূর্তির ঠিক আগে সরকার দেবজিৎ থাওসেনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান পরিষদকে আরও ছয় মাস ক্ষমতাভোগের সুযোগ করে দিল, যা গণতন্ত্রবিরোদী। মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব হয়েছে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতিও।
এ দিকে, ধরা পড়ল দুই ডিমাসা জঙ্গি। পুলিশ জানিয়েছে, গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে কাল রাতে ডিমা হাসাও জেলার ডিটকছড়ায় পুলিশ ও আসাম রাইফেলস যৌথ অভিযান চালায়।
তখনই গ্রেফতার করা হয় ডিমা জাদিকে নাইসো আর্মির ক্যাডার হিরণ বর্মন ও বিশ্বনাথ বর্মনকে। তাদের কাছে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র না থাকলেও ৬টি বুলেট পাওয়া গিয়েছে। মিলেছে একটি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটও।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.