ঋণের অভাবে মালদহে সঙ্কটে অর্থকরী মাখনা চাষ
ণের অভাবে সঙ্কটে অর্থকরী ফসল মাখনার চাষ। এমনই অভিযোগ উঠেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ও চাঁচল মহকুমা এলাকায়। জেলা পরিষদ ও জেলা শিল্প দফতরের পাল্টা অভিযোগ, মাখনা চাষের নামে ঋণ নিয়ে তা অন্য ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হচ্ছে। তাই ঋণ দেওয়া হচ্ছে বিশদে খোঁজ নেওয়ার পরেই।
১৯৯৯ সালে প্রথম মাখনা চাষ শুরু হয়েছিল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে। পরের এক দশকে হরিশ্চন্দ্রপুর তো বটেই চাঁচল মহকুমা এলাকাতেও চাষিদের কাছে অন্যতম অর্থকরী ফসল হয়ে ওঠে মাখনা। এলাকার পাঁচ হাজার হেক্টরেরও বেশি জলাশয়ে মাখনা চাষ হয়। মাখনার ফল লাবা থেকে মাখনা খই প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট রয়েছে ৪০টি। মাখনা চাষ ও তা থেকে খই তৈরির কারখানায় প্রত্যক্ষ ভাবে জীবিকা নির্বাহ হয় ১০ হাজার শ্রমিকের। পরোক্ষে নির্ভরশীল আরও প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক। কিন্তু ঋণ না মেলায় সেই মাখনা চাষ সঙ্কটের মুখে পড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাখনা চাষি ও ব্যবসায়ী শেখ খলিল ও মহম্মদ ইব্রাহিম বলেন, “এক বছর ধরে ঋণ দেওয়া বন্ধ। ফলে, মাখনা চাষ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।”
মাখনার খই। -ফাইল চিত্র
জেলা শিল্প কেন্দ্র থেকে মাখনা চাষ ও ব্যবসার জন্য আগে ঋণ দেওয়া হত। গত এক বছর ধরে সেই ঋণ দেওয়া বন্ধ বলে অভিযোগ মাখনা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। চাষিদের পাশাপাশি আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরাও। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা পরিষদের ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দফতরের কর্মাধ্যক্ষ সৈয়দ মাঞ্জারুল ইসলাম। তিনি বলেন, “মাখনার মতো অর্থকরী চাষকে অগ্রাধিকার না দিয়ে আজও পিছনে ফেলে রাখা হয়েছে। গত এক বছর ধরে কাউকেই ঋণ দেওয়া হয়নি। জেলা শিল্পকেন্দ্র অধিকর্তাকে বিষয়টি দেখতে বলেছি।”
মাখনা চাষ শুরু করেছিলেন প্রয়াত ব্যবসায়ী পুরুষোত্তম ভগত। পরে মাখনার পেটেন্টও পান তিনি। তাঁর হাত ধরে খুব অল্প দিনেই হরিশ্চন্দ্রপুরে চাষিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল মাখনা চাষ। কারণ, জলাশয় থেকে মাখনা ফল তোলার কাজ শুরু হয় বর্ষাকালে। তখন শ্রমিকদের হাতে কাজ থাকে না। ফলে, অসময়ে শ্রমিকদের উপার্জনের পথ দেখায় মাখনা। পতিত জমি, খাল, বিলে যেখানে কোনও ফসল হত না তা মাখনা চাষিরা লিজ নিয়ে চাষ শুরু করেন। অনেকেই অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেন মাখনার দৌলতে। একে একে গড়ে ওঠে খই প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটও। উচ্চ প্রোটিনযুক্ত ও স্বাস্থ্যকর মাখনার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে পাকিস্থান-সহ আরব দেশগুলিতে। প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার মাখনা পাঠানো হয় দিল্লি, লখনউ, কানপুর, পঞ্জাবে। সেখান থেকে রফতানি হয় বিদেশে। গোটা রাজ্যের মধ্যে চাঁচল মহকুমা ছাড়া হালে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর মহকুমায় কিছু চাষ শুরু হয়েছে।
মাখনা চাষ শুরু হওয়ার পরে তা কৃযি দফতর না উদ্যানপালন দফতরের আওতায় যাবে তা নিয়েই দীর্ঘ দিন টানাপোড়েন চলেছিল। কিছু দিন উদ্যান পালন দফতরের অধীন ছিল মাখনা চাষ। এখন তা কৃষি দফতরের অধীনে। চাঁচল মহকুমা কৃষি দফতরের আধিকারিক অরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “মাখনা চাষ কৃষি দফতরের মধ্যেই পড়ে। ফলে, ঋণ না দেওয়ার তো কারণ নেই।”
জেলা পরিষদ ও জেলা শিল্প দফতর সূত্রে জানা যায়, এক সময় মাখনা চাষ ও ব্যবসায় ঢালাও ঋণ দেওয়া হয়েছিল। পরে দেখা যায় সেই ঋণ নিয়ে তা অন্য ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হচ্ছে। তার পর থেকেই ঋণের ব্যাপারে জেলা শিল্প কেন্দ্র বিশদে খোঁজখবর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঋণ বন্ধ রাখার বিষয়টি মানতে চাননি মালদহ জেলা শিল্পকেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার তন্ময় ব্রহ্ম। তিনি বলেন, “মাখনা চাষ ও ব্যবসায় ঋণ দেওয়া হচ্ছে না, বলাটা ঠিক নয়। আবেদন করলে সব বিবেচনা করে যাঁরা ঋণ পাওয়ার যোগ্য তাঁদের অবশ্যই ঋণ দেওয়া হবে।”

নয়া মূল্যায়ন সংস্থা গড়তে চায় কেয়ার
একটি আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে ভারতের রেটিং সংস্থা ক্রেডিট অ্যানালিসিস অ্যান্ড রিসার্চ লিমিটেড (কেয়ার)। এটি তারা গঠন করবে আরও চারটি বিদেশি রেটিং সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে। কেয়ার চারটি দেশের রেটিং সংস্থার সঙ্গে চুক্তিও করেছে। দেশগুলি হল দক্ষিণ আফ্রিকা, পোর্তুগাল, মালয়েশিয়া এবং ব্রাজিল। শেয়ার ছাড়ার কথা জানাতে গিয়ে সম্প্রতি এ কথা বলেন কেয়ারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অনুরাগ মল্লিক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.