ভারতীয় বংশোদ্ভূত নার্স জেসিন্থা সালডানহার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তাঁর বৃদ্ধা শাশুড়ি। ব্রিটেনের ‘কিং এডওয়ার্ড সেভেন’ হাসপাতালে দুই অস্ট্রেলীয় রেডিও সঞ্চালকের ফোনটা জেসিন্থাই রাজপরিবারের ছোটবধূ কেটের কেবিনে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। এর পরে শুক্রবার হাসপাতালের অদূরে মেরিলবোনের নার্স আবাসনে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
৮০ বছরের শাশুড়ি কারমাইন বারবোজা ভারতে থাকেন। বৃদ্ধার আক্ষেপ, “সপ্তাহে অন্তত এক বার ও আমাকে ফোন করত। এ বার কে আমার খোঁজ নেবে!” শুক্রবার ছেলেই তাঁকে ফোন করে বৌমার মারা যাওয়ার খবর দেন। কেন এমন করলেন জেসিন্থা, সে নিয়ে এখনও ধন্দে পরিবার। যদিও পুলিশ জানাচ্ছে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন।
ভেঙে পড়েছেন জেসিন্থার স্বামী বেনেডিক্ট বারবোজাও। বছর কুড়ি আগে ম্যাঙ্গালোরে তাঁদের দেখা। ’৯৩-এ বিয়ে। এত বছরের সঙ্গীকে হারিয়ে বেনেডিক্ট বলছেন, “এমন মর্মান্তিক ভাবে জেসিন্থার মৃত্যু হল, আমি পুরো ভেসে গেলাম।” ভারতের শিরবাতে কবর দেওয়া হবে জেসিন্থাকে, জানালেন তিনিই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অস্ট্রেলীয় সঞ্চালকদের ফোন না বুঝে কেটের ওয়ার্ডে পাঠানোয় কোনও রকম খারাপ ব্যবহার করা হয়নি জেসিন্থার সঙ্গে। তবু কেন এমন করলেন? দাবি, তাঁর ফোন ধরা থেকে কেটের ওয়ার্ডে সহকর্মীকে ফোন ট্রান্সফার,ও সবশেষে গোটা ঘটনাটা রেকর্ড হয়ে যাওয়ায় ভীষণ আঘাত পেয়েছিলেন জেসিন্থা। বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে ফেলেন তিনি। গত কাল একাই চ্যারিটি শোয়ে গিয়েছিলেন উইলিয়াম। কেটের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায়, তাঁকে মোটে বিব্রত দেখায়নি। বরং কৌতুক করে বলেন, “আমি জানি না সবাই কেন ‘মর্নিং সিকনেস’ বলছেন, বলা উচিত দিন-রাত সর্বক্ষণের দুর্বলতা।” এ দিকে, তাঁদের রসিকতায় জেসিন্থার মৃত্যু হয়েছে জানার পর, মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন দুই সঞ্চালকই। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। এমন কী হল যাতে এক রাতের মধ্যে আত্মহত্যা করতে হল জেসিন্থাকে। ওই রেডিও স্টেশনের তরফে জানানো হয়েছে, সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে ব্রিটিশ পুলিশকে। তা ছাড়া, রেডিওতে যে ধরনের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়, তাতেও কোনও বদলের প্রয়োজন আছে কি না, ভেবে দেখা দরকার। |