মমতা নয়, উন্নয়ন করছে কেন্দ্রই: জয়রাম
ন্নয়ন হয়নি, তাই আবার পরিবর্তন চাই। শনিবার লালগড়ের সভায় এই আহ্বানই জানালেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। তাঁর কথায়, “পুনর্পরিবর্তন জরুরি। ২০১৬ সালে তা হবে। আর এটা কংগ্রেসের পক্ষেই সম্ভব।”
দেড় বছরে উন্নয়ন দিয়ে জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরানোকে সাফল্য হিসেবে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মমতা যে আসলে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ, জঙ্গলমহলে যা উন্নয়ন হয়েছে, তার সবটাই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে এই বিষয়টিকেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে তুরুপের তাস করতে চাইছে কংগ্রেস। এ দিন লালগড়ের সভায় তাই কংগ্রেস নেতৃত্ব রাজ্যের ব্যর্থতার কথা বলেন। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি বলেন, “দেড় বছরে মানুষের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে।”
পঞ্চায়েত ভোটের জন্য সভা। জয়রাম তাই বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে আমরা রাজনৈতিক সন্ন্যাস নিইনি। তৃণমূল চলে যাওয়ার পর কংগ্রেস নতুন প্রাণ পেয়েছে। নব উদ্যমে ভোটে লড়ব।” প্রদীপ ভট্টাচার্যও বলেন, “পঞ্চায়েতে জঙ্গলমহলের প্রতিটি বুথে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে। লালগড় থেকে সেই যাত্রা শুরু হল।”
জয়রাম, দীপা ছাড়াও ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী ও আবু হাসেম খান চৌধুরী, প্রদীপ ভট্টাচার্য, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, মানস ভুঁইয়া-সহ জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব।
কিন্তু এত নেতা-নেত্রী সত্ত্বেও সজীব সঙ্ঘের মাঠে তেমন ভিড় ছিল না। পুলিশের হিসেবে হাজার চারেক মানুষ ছিলেন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবের অভিযোগ, “সভায় না আসার জন্য মানুষকে ভয় দেখানো হয়েছে।”
সভায় সকলেই উন্নয়ন প্রশ্নে তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করেন।
লালগড়ে কংগ্রেসের সভায় জয়রাম রমেশের সঙ্গে শিলাদিত্য চৌধুরী। সঙ্গে দীপা দাশমুন্সি। —নিজস্ব চিত্র
স্পষ্ট করেন, সিআরপি’র উপস্থিতিতে জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরানো থেকে ‘ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যান’, ‘ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্রান্ট ফান্ডে’ উন্নয়ন, সবেতেই মুখ্য অবদান কেন্দ্রের। ফলে, মমতার সরকার সাফল্যের একক দাবিদার নয়। প্রসঙ্গক্রমে ‘আনন্দধারা’ প্রকল্পের কথা বলেন জয়রাম। মূল কেন্দ্রীয় প্রকল্পটির নাম ‘আজীবিকা-ন্যাশনাল রুরাল লাইভলিহুড মিশন’ হলেও এ রাজ্যে তার নাম ‘আনন্দধারা’। এতে ৭৫% অর্থ দেয় কেন্দ্র, বাকি ২৫% রাজ্যের। এ নিয়ে জয়রামের তীর্যক মন্তব্য, “এই প্রকল্পে ধারা কেন্দ্রের, কিন্তু আনন্দ ভোগ করবে রাজ্য। কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে, আর রাজ্য নিজের নাম জুড়ে দিচ্ছে।” সমস্যা সমাধানে আগামী দিনে প্রকল্পের টাকা উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই জমা হবে বলে জানান মন্ত্রী। তাঁর কথায়, “কংগ্রেস চায় আপনার টাকা আপনাতে হাতে।”
কংগ্রেসের অভিযোগ, বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্র টাকা দিলেও খরচ করতে পারছে না এই রাজ্য। রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেন, “এক জন মানুষের জন্মের আগে থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যা যা দরকার, সব ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রকল্প আছে। জননী সুরক্ষা যোজনা-সহ ৪৫টি প্রকল্প রয়েছে। টাকাও বরাদ্দ হচ্ছে। অথচ মানুষ সুফল পাচ্ছেন না।” রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতার হাজারও প্রকল্পের ঘোষণা যে আসলে অবাস্তব, তা-ও মনে করিয়ে দেন অধীর। তিনি গোপীবল্লভপুরে কম্পিউটারচালিত রেল টিকিট সংরক্ষণ কেন্দ্র তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন।
দীপা দাশমুন্সিও মমতা ও তাঁর সরকারের সমালোচনা করেন। নথিপত্র হাতে নিয়ে দীপা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, শালবনি, ডেবরায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হবে। শুধু শিলান্যাসই হয়েছে। ৬০ বছরের উর্ধ্বে আদিবাসীরা ভাতা পাননি। অথচ প্রতিটি জেলায় কেন্দ্রের টাকায় মুখ্যমন্ত্রীর সভা হচ্ছে।”
এফডিআই প্রসঙ্গে বাম-বিজেপি-তৃণমূলের একজোট হওয়া এবং ইউপিএ সরকারকে ‘সংখ্যালঘু’ বলা নিয়ে জয়রাম বলেন, “গ্রাম সড়ক যোজনায় ১৩ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এটা সংখ্যালঘু সরকারই দিয়েছে। একশো দিনের কাজে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এটাও সংখ্যালঘু সরকারই দিয়েছে।”
অভিযোগ মানতে নারাজ রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর ব্যাখ্যা, “রাজ্য থেকে টাকা নিয়ে তার সামান্য অংশ রাজ্যকে ফেরত দেয় কেন্দ্র। খরচের হিসেব দিলে তবেই টাকা ফেরত দেয়। জয়রাম নিজে আমাদের কাজের প্রশংসা করে চিঠি দিয়েছিলেন। আমরা কাজ করতে পেরেছি কি না, ওই চিঠিই তার প্রমাণ।” সুব্রতবাবুর অভিযোগ, “বাইরে থেকে লোক এনে জয়রামকে দিয়ে সঙ্কীর্ণ রাজনীতির কথা বলানো হয়েছে।” এই সভার পাল্টা আজ, রামগড়ে সভা করছে তৃণমূল। মুখ্য বক্তা সুব্রত বক্সী ও শুভেন্দু অধিকারী।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.