কেট-কাণ্ডে মৃত নার্স ভারতীয় বংশোদ্ভূত
ক্ষোভের মুখে বন্ধ অস্ট্রেলীয় রেডিও
ভারতীয় বংশোদ্ভূত নার্সের দেহ উদ্ধার নিয়ে পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হচ্ছে। অস্বস্তিতে ব্রিটিশ রাজপরিবার। বিপাকে অস্ট্রেলীয় রেডিও স্টেশন।
৪৬ বছর বয়সী নার্স জেসিন্থা সালডানহা ভারতীয় বংশোদ্ভূত। গত চার বছর ধরে তিনি ‘কিং এডওয়ার্ড সেভেন’ হাসপাতালে চাকরি করতেন। বুধবার হাসপাতালের রিসেপশনে ছিলেন জেসিন্থা। সকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ রানি এলিজাবেথ ও যুবরাজ চার্ল সের গলা নকল করে অস্ট্রেলিয়ার দুই রেডিও সঞ্চালক মেল গ্রেগ এবং মিশেল ক্রিশ্চিয়ান যখন ফোন করেছিলেন, রিসেপশনে ফোনটা ধরে ছিলেন তিনিই। কেটের শরীর কেমন আছে জানতে চাইলে, জেসিন্থা ফোনটা উইলিয়াম-পত্নীর ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন। সেখানেই অন্য এক নার্স সবিস্তার জানান কেটের হাল-হকিকত। আর ওই এক ফোনেই সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ‘ব্রেকিং নিউজ’ ব্রিটিশ রাজপরিবারের ছোটরানি অন্তঃসত্ত্বা।
আর তার দু’দিনেই শিরোনামে চলে আসেন জেসিন্থা। শুক্রবার হাসপাতালের কাছেই অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মনে করা হয়, আত্মঘাতী হয়েছেন জেসিন্থা।
জেসিন্থা সালডানহা মেল গ্রেগ মিশেল ক্রিশ্চিয়ান
এ ঘটনা জানাজানি হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই, মেল ও মিশেলের শাস্তি চেয়ে সরব হয়েছেন অনেকে। সে দাবি অবশ্য খারিজ করে দিয়েছেন রেডিও চ্যানেলটির প্রধান রিস হলেরান। তিনি বলেন, “ভীষণই দুঃখজনক। এর আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি। তবে, রেডিও স্টেশন কোনও রকম নিয়ম ভাঙেনি। গলা নকল করে মজা করা মোটেই কোনও নতুন ঘটনা নয়। বছরের পর বছর ধরে এ ধরনের অনুষ্ঠান চলে আসছে। শুধু আমাদের চ্যানেলই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন চ্যানেলে।” তবে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করার আগে ওই নার্সের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে মুখে খোলেননি তিনি। হলেরান আরও বলেন, “অস্বীকার করার জায়গা নেই, জানার পরে দুই সঞ্চালকই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন।” সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে নিজেদের অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। এমন কাজের জন্য ধিক্কার জানিয়ে একের পর এক বার্তায় ভরে গিয়েছিল তাঁদের অ্যাকাউন্ট। ফেসবুকে এক ব্যক্তি লিখেছেন, “এটা কি আর মজার ঘটনা রইল? ওই ফালতু মস্করায় এক নার্সকে মরতে হয়েছে। তোমাদের লজ্জা পাওয়া উচিত!”
ক্ষমা চেয়ে নিয়ে সিডনি রেডিও স্টেশনের দুই সঞ্চালক বলেন, “আমাদের ফোনটা কেটের ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়ায় খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের যা ভয়াবহ উচ্চারণ, ভেবেছিলাম ধরা পড়ে যাব। আমাদের জন্যই যদি এ রকম ঘটনা ঘটে থাকে, তা হলে আমরা সত্যিই ভীষণ দুঃখিত।”
কিন্তু সে সব শুনছে কে? ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার বড় বড় সংস্থা ওই চ্যানেলটিতে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। হলেরান জানান, সংস্থা এবং নির্দেশকরা যৌথ ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যত দিন না ঘটনার কারণ জানা যাচ্ছে, তাদের অনুষ্ঠান সম্প্রচার বন্ধ রাখা হবে।
রাজপ্রাসাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “জেসিন্থা সালডানহার মৃত্যুতে ভীষণ ভাবে দুঃখিত ডিউক এবং ডাচেস অফ কেমব্রিজ। কিং এডওয়ার্ড সেভেন হাসপাতালের সবাই খুব ভাল করে দেখাশোনা করেছিলেন রাজকুমারীর। জেসিন্থার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মীদের জন্য সমবেদনা রইল।” জেসিন্থার ঘটনায় হাসপাতালের পক্ষ থেকেও দুঃখপ্রকাশ করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া জিলার্ডও বলেন, “আমরা জেসিন্থার পরিবারের পাশে আছি।”
কিন্তু কেন এমন করলেন তিনি?
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে জানা গিয়েছে, যে অবস্থায় তাঁকে পাওয়া গিয়েছে, মনে করা হচ্ছে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। মেট্রোপলিটান পুলিশের বক্তব্য, “৭ ডিসেম্বর, শুক্রবার, সকাল ৯টা ২৫ নাগাদ পুলিশ জানতে পারে, ওয়েমাউথ স্ট্রিটে অচৈতন্য অবস্থায় এক মহিলা পড়ে রয়েছেন। অ্যাম্বুল্যান্স এলে চিকিৎসকরা জানান, তিনি মারা গিয়েছেন। তদন্ত চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত সন্দেহজনক কোনও তথ্য মেলেনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.