নদিয়া জেলার কালীগঞ্জ থানার গোকুলনগর গ্রামটি এককালের বিখ্যাত কবি হেমচন্দ্র বাগচির জন্মভূমি। গ্রামটি এক সময় বর্ধিষ্ণু ছিল। কবিকে উপলক্ষ করে এক সময় ওই গ্রামে বাংলা তথা ভারতের বিখ্যাত কবি, সাহিত্যিক ও বিশিষ্টদের আনাগোনা ছিল। কিন্তু বর্তমনে ওই গ্রামের সব রাস্তাগুলির দশা করুণ। বিশেষ করে গ্রামের প্রধান রাস্তা যেটিকে অবলম্বন করে দেবগ্রাম, কাটোয়া ও কৃষ্ণনগর যাতায়াত করা হয় সেই রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে। রাস্তাটি বড় বড় গর্তে ভরে গিয়েছে। গাড়ি তো দূরের কথা, সাইকেল ও রিকশাও নিয়ে যাওয়া যায় না। হাঁটার সময়ও আছাড় খেতে হয়। রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কি কষ্টের তা কথায় বোঝানো অসম্ভব। বেহাল রাস্তার কারণে অতিথিরা গ্রামে আসতে চায় না, ছেলমেয়েরা স্কুলে যেত চায় না। ওই রাস্তায় এক যুগ আগে ইট ও ঘেঁষ পড়েছিল। সে সবের আাজ আর কোনও চিহ্ন নেই। সংশ্লিষ্ট সব দফতরের কর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনুরোধ আমাদের দিকে দয়া করে একটু নজর দিন। |
স্বল্প ব্যবধানে হলেও জঙ্গিপুর লোকসভার উপনির্বাচনে জিতে রাষ্ট্রপতিপুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় আমাদের সাংসদ। অভিনন্দন আপনাকে। রঘুনাথগঞ্জ বিধানসভা এলাকার গিরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে বলছি। স্বাধীনতার এত বছর পরেও ঐতিহাসিক গিরিয়া ভৌগলিক থেকে এখনও একটি ছিটমহল। নদীনালা পেরিয়ে বি এস এফ শাসিত পদ্মাতীরবর্তী একটি বিচ্ছিন্ন সীমান্ত অঞ্চল। মহকুমা শহর জঙ্গিপুর থেকে আপনি যে পথে আহিরণ ব্যারাজের উপর দিয়ে চারচাকা নিয়ে গিরিয়া ঢুকে ছিলেন, আপনি হয়তো জানেন না, সেই ব্যারাজের উপর দিয়ে গিরিয়া, নুরপুরের মানুষের হালকা চারচাকা নিয়ে মহকুমা শহরে যাওয়ার অনুমতি নেই। প্রহরারত সি আই এস এফের জওয়ানরা অদ্ভুত ও অজ্ঞাত কারণে শুনিয়ে দেয়, ‘পারমিশন’ নেই। একই সময়ে একই প্রযুক্তিতে তৈরি ফরাক্কা ব্যারাজের উপর দিয়ে শত সহস্র বাস ট্রাক ট্রেন যাচ্ছে আর এখানে হালকা ফোর-হুইলার যেতেই ‘না’! আমাদের একান্ত অনুরোধ, প্রথমেই আপনি উদ্যোগী হন ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে এই ‘গেট ওয়ে অব গিরিয়া’কে সর্বসাধারণের জন্য মুক্ত করতে। গিরিয়ার নিকটবর্তী রেলস্টেশন ও বাসস্টপ ‘আহিরণ’। কিন্তু ফিডার ক্যানালে কোনও ব্রিজ নেই। ঝড় তুফানে রাত বিরেতে সি আই এফের নৌকাই ভরসা। একটি ব্রিজের আন্তরিক আশ্বাস চাই। এই দুটো কাজ হলে গিরিয়ার গায়ে একটু হাওয়া লাগবে। তারপর না হয় হাসপাতাল, কলেজ, ব্যাঙ্ক ও রাস্তাঘাটের আব্দার পরের পাঁচ বছরে তুলব। |
মুর্শিদাবাদ জেলার অন্তর্গত দৌলতাবাদ থানার গুরুদাসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন মহারাজপুর মোড় হ’তে গৌরীঘাট পর্যন্ত মোরাম বিছানো রাস্তাটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বড় বড় খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। অথচ ওই রাস্তাটি ওই এলাকার মানুষদের জেলা সদর বহরমপুরে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা। ওই রাস্তাটি মেরামত করার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধানকে বলেও কোনও লাভ হয়নি। জেলাপরিষদের সভাধিপতি, স্থানীয় বিধায়ক ও সাংসদের কাছে তাই দু’টি অনুরোধ— প্রথমত রাস্তাটি আপাতত চলাচল যোগ্য করে দিন। দ্বিতীয়ত, অতি প্রয়োজনীয় ওই রাস্তাটি অদূর ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় পিচ-পাথরের পাকা সড়কে রূন্তারিত করুন। |
কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়েছে শ্রম সংগীত ছাদ পেটানোর গান। ওই গান সাজানো গোছানো পরিপাটি মানুষের গান নয়। ওই গান শ্রমিক তথা মেহনতি মানুষের। রবীন্দ্রনাথ সহজপাঠেও ওই গানের উল্লেখ করেছেন। নির্মাণ শিল্পে যখন সিমেন্ট, ইট ও স্টোন চিপসের প্রচলন হয়নি তখন চুন সুরকি দিয়ে গাঁথুনি ছাড়াও ছাদ পেটানো হত। পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও ওই ছাদ পেটানোর কাজ করতেন। কাজ করার সময় শারীরিক পরিশ্রমের ভার লাঘব করতে তাঁরা গান গাইতেন। ছাদ পেটানোর জন্য শ্রমিকদের হাতে থাকত কাঠের পিটুনি। পিটুনির আওয়াজের মধ্যে থাকত একটা ছন্দ। শ্রমজীবী নারীপুরুষদের ব্যক্তি জীবনের দুঃখ যন্ত্রণাই ফুটে উঠতো ওই গানের কথায়। ছাদ পেটানোর গানের কোনও খাতা নেই, নেই স্বরলিপিও। নির্মাণ শিল্পে আধুনিকতার সঙ্গে ফুরিয়েছে ছাদ পেটানোর প্রয়োজনীয়তা। শরীর ও শ্রমের সঙ্গে যে সমস্ত গান অভিন্ন হয়ে আছে, বা ছিল তার মধ্যে এই গান অন্যতম। রাস্তাঘাট ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে যেমন পাল্কির গান অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, অনুরূপ ভাবে নির্মাণ শিল্পের বির্বতনের পরিণতি স্বরূপ আজ অবলুপ্ত ছাদ পেটানোর গান। |