|
|
|
|
আজ লালগড়ে সভা |
নেতাইয়ের রাস্তা হতে পারে কংগ্রেসের অস্ত্র |
কিংশুক গুপ্ত • ঝাড়গ্রাম |
নেতাই অস্বস্তিতে ফেলেছিল সিপিএমকে। এ বার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে কংগ্রেস বেছে নিচ্ছে সেই নেতাইকে।
রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে আজ, শনিবার ‘লালগড় চলো’র ডাক দিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। লালগড়ের সজীব সঙ্ঘের মাঠে ওই সভায় থাকবেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী জয়রাম রমেশ। থাকার কথা তিন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীঅধীর চৌধুরী, দীপা দাশমুন্সি ও আবু হাসেম খান চৌধুরীর। কংগ্রেস সূত্রের খবর, ওই সভায় জঙ্গলমহলে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলির ‘প্রকৃত অবস্থা’ নিয়ে তথ্যভিত্তিক সমালোচনা করা হবে। তালিকায় উপর দিকে থাকছে নেতাইয়ের রাস্তার দশা।
২০১১-র জানুয়ারিতে লালগড়ের নেতাই গ্রামে সশস্ত্র-শিবির থেকে গুলি চালিয়ে ন’জন গ্রামবাসীকে হত্যায় অভিযুক্ত সিপিএম। সে ঘটনাকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি যখন তোলপাড়, তখন গ্রামে গিয়ে নেতাইয়ের বেহাল কাঁচা রাস্তা দেখে গিয়েছিলেন মমতা। সেই সময় রাজ্যে ক্ষমতায় এলে ওই রাস্তাটি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পাকা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। গত বছর অক্টোবরে দ্বিতীয় দফায় জঙ্গলমহলে গিয়ে নেতাইয়ের রাস্তাটি পাকা করা হবে বলে আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। গত ২৪ এপ্রিল লালগড়ে প্রশাসনিক জনসভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন নেতাইয়ের রাস্তা পাকা করার কাজ চলছে। কিন্তু সে দিন নেতাইয়ের বাসিন্দা এক তরুণী মঞ্চে উঠে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, সাময়িক মোরাম ছড়ানো হলেও পাকা রাস্তার কাজ শুরুই হয়নি। দৃশ্যতই অস্বস্তিতে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। তার সাত মাস পরেও নেতাই রয়েছে সেই তিমিরেই। |
বেহাল রাস্তা
|
নেতাই গ্রামের সেই রাস্তা এখনও কাঁচাই। —নিজস্ব চিত্র |
প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় লালগড়ের বাঘাকুলি থেকে নেতাই হয়ে ডাইনটিকরি পর্যন্ত এই ছয় কিলোমিটার রাস্তাটি পিচের হওয়ার কথা। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদার নিয়োগ হলেও কাজ সে ভাবে এগোয়নি। গুটিকয়েক জায়গায় মাটি পড়েছে শুধু। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবে বলেন, “নেতাই গ্রামের রাস্তা এখনও হল না। গড়িমসি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ টাকায় জঙ্গলমহলে কী কাজ হয়েছে, তা মানুষকে জানানো প্রয়োজন।” কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, জঙ্গলমহলের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ‘স্পেশ্যাল’ প্যাকেজের মধ্যে যে সব প্রকল্প রয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তার অর্থ বরাদ্দ হয়েছে কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের অনগ্রসর এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে। লালগড়ের সভায় এটাই প্রচার করা হবে। কেন্দ্রের টাকাতে উন্নয়ন আনায় ব্যর্থতার অভিযোগ তোলা হবে রাজ্য সরকারের দিকে। ঝাড়গ্রামের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা অবশ্য দাবি করেছেন, “চার দিকে কাজ হচ্ছে। নেতাইয়ে রাস্তার কাজও হচ্ছে। অযথা কুৎসা রটাচ্ছে কংগ্রেস।” |
|
|
আজ লালগড়ে কংগ্রেসের
সভার প্রস্তুতি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
রামগড়ে পাল্টা সভার প্রস্তুতি
তৃণমূলেরও। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
|
রেলমন্ত্রী থাকাকালীন লালগড়ে রেলপথ হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছিলেন মমতা। লালগড়ের সভায় এই প্রসঙ্গে অধুনা রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী কোনও মন্তব্য করেন কি না তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে কংগ্রেস-অন্দরে। দল সূত্রে খবর, মাওবাদীদের সম্পর্কে তৃণমূলের অবস্থান নিয়েও সুর চড়াতে পারেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “জঙ্গলমহলে মাওবাদী সন্ত্রাসের পর্ব শেষে এখন তৃণমূলের সন্ত্রাস-পর্ব চলছে। এই ভণ্ডামির বিরুদ্ধেই আমাদের প্রতিবাদ।”
পক্ষান্তরে কাল, রবিবার লালগড়ের রামগড়ে সভা ডেকেছে তৃণমূল। ওই সভায় থাকার কথা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ও রাজ্য যুব তৃণমূলের সভাপতি শুভেন্দু অধিকারীর। |
|
|
|
|
|