ফের কেঁপে উঠল জাপান। আর কয়েক মুহূর্তেই ফিরে এল ২০১১-র ভয়াবহ স্মৃতি। তবে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ৭.৩ হলেও তেমন ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উৎসস্থলের গভীরতা বেশি না হওয়ায়, ভয়াবহ রূপ নেয়নি ভূকম্প।
ঘড়িতে তখন বিকেল ৫টা বেজে ১৮। সবে অফিস ছুটি হয়েছে। ঘরে ফেরার পালা। হঠাৎই প্রচণ্ড ঝাঁকুনি। সংবাদ চ্যানেলের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, থরথর করে কাঁপছে গোটা সেনদাই শহর। সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলি প্রচার করতে শুরু করে, যে কোনও মুহূর্তে সুনামি আছড়ে পড়তে পারে। সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলগুলো এখনই খালি করে দিন। আতঙ্কিত বাসিন্দারা আশ্রয় নেন স্কুলগুলোয়। এ দিকে, ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনের আশঙ্কায় বন্ধ করে দেওয়া হয় ট্রেন। জাপানের ভূতত্ত্ববিদরা জানিয়েছেন, মিয়াগি উপকূল থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে, প্রশান্ত মহাসাগরের ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পের উৎস। |
দু’মিটার পর্যন্ত উঁচু ঢেউ উঠতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এক মিটারের বেশি জলোচ্ছ্বাস ওঠেনি। ঘণ্টা দুয়েক বাদে সতর্কবার্তা তুলে নেওয়া হয়।
গত বছরের স্মৃতি এখনও ম্লান হয়নি। সে বার কম্পনের মাত্রা ছিল ৯। কুড়ি মিটার উঁচু ঢেউ ভেঙে-গুঁড়িয়ে দিয়েছিল মিয়াগির তীর। মারা গিয়েছিলেন প্রায় ১৯ হাজার মানুষ। ঘর-বাড়ি-প্রিয়জনদের হারিয়ে তিন লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন অস্থায়ী শিবিরে। বছর পেরিয়েই সেই ভয়াবহ স্মৃতির পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে মুহূর্তের মধ্যেই এই আতঙ্ক দানা বাঁধতে শুরু করে। মিনামি-শানরিকু শহরের বাসিন্দা আইকো হিবিয়া বলেন, “কত ক্ষণ ধরে কাঁপছিল।”
গত বার ফুকুশিমা-দাইচির পরমাণু কেন্দ্র ঘিরে সব চেয়ে বেশি আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। শুধু জাপানই নয়, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের আশঙ্কায় কপালে
ভাঁজ পড়েছিল প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোরও। এ দিন অবশ্য ঘটনার পরপরই টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরমাণু কেন্দ্রের কোনও ক্ষতি হয়নি। ৫০টি পরমাণু চুল্লির মধ্যে এই মুহূর্তে মাত্র দু’টি চুল্লি কাজ করছে। রক্ষণাবেক্ষণ ও সারাইয়ের জন্য বাকিগুলো বন্ধ। |