বাসে, ট্রেনে মাদক মেশানো খাবার খাইয়ে বেহুঁশ যাত্রীর সর্বস্ব লুঠের ঘটনা আগে ঘটেছে। এ বার রোগীর আত্মীয়দের জিনিসপত্র একই ভাবে লুঠ করার ঘটনা ঘটল বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে।
বৃহস্পতিবার সকালে বাঁকুড়া মেডিক্যালের স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি বিভাগের সামনে থেকে ছয় অচৈতন্য ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অভিযোগ, বুধবার রাতে এক ব্যক্তি বিস্কুট ও জল খাওয়ানোর পরেই তাঁরা জ্ঞান হারান। তাঁদের সঙ্গে থাকা টাকা ও জিনিসপত্রও খোয়া গিয়েছে। ওই ব্যক্তিই জিনিসপত্র সব নিয়ে গিয়েছে। তবে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের কাছে তাঁরা অভিযোগ করেননি। অসুস্থ ৬ জনকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। পরে ২ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “অচৈতন্য থাকা ৬ জনের মধ্যে ২ জন সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। বাকি ৪ জন ভর্তি থাকলেও তাঁদের বিপদ কেটে গিয়েছে।” তিনি জানান, ঘটনার কথা হাসপাতালের ফাঁড়ির পুলিশকর্মীদের জানিয়ে রাতের নিরাপত্তায় জোর দিতে বলেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছয় ব্যক্তির মধ্যে মঙ্গল বাউরি ও দীপক বাউরি ইঁদপুর থানা এলাকার, উমাপদ সূত্রধর বড়জোড়া, মাধব বাউরি খাতড়া, বাহাদুর বাউরি ও উত্তমকুমার রায় ছাতনা থানা এলাকার বাসিন্দা। হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগে তাঁদের আত্মীয়েরা ভর্তি রয়েছে। ওই ছ’জনের মধ্যে উত্তমবাবু ও মাধববাবু কিছুটা সুস্থ ছিলেন। হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে তাঁরা বলেন, “হাসপাতালের প্রতীক্ষালয়ে জায়গা না মেলায় বুধবার রাতে ওয়ার্ডের বাইরে একটি গাছতলায় রাত কাটাচ্ছিলাম আমরা। কয়েকদিন আগে এই হাসপাতালেই এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন এখানে তাঁর ভাইয়ের মেয়ে ভর্তি রয়েছেন। রতনপুরে তাঁর বাড়ি বলে জানিয়েছিলেন। নামও ঠিকমতো জানতাম না।” তাঁদের অভিযোগ, “সেই ব্যক্তিই বুধবার রাতে বিস্কুট খাওয়ায়। সঙ্গে থাকা বোতল থেকে আমাদের জল খেতে দেয়। সরল বিশ্বাসেই সে সব খেয়েছিলাম। তারপর কখন যে অচৈতন্য হয়ে যাই জানি না।” এ দিন সকালে জ্ঞান ফিরতে সকলেই দেখেন সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র উধাও হয়ে গিয়েছে। ওই ব্যক্তিই জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছে বলে তাঁদের দাবি। সকালে অনেকক্ষণ ধরে তাঁদের ঘুমাতে দেখে আত্মীয় ও অন্য রোগীর পরিজনেরা তাঁদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
সম্প্রতি লোকপুর ক্যাম্পাসে নার্সিং হোস্টেলের দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের পর এ বার হাসপাতাল চত্বরের এই ঘটনায় রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অচৈতন হয়ে পড়া দীপকবাবুর মা অঙ্গুরা বাউরির অভিযোগ, “সকালে ছেলে-সহ পাঁচ জনকে ওই অবস্থায় দেখে হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে সাহায্য চাইতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কর্মীরা আসেননি।” এ নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে। |