|
|
|
|
১৪ই আসছেন মহাকরণে |
জোট-জল্পনা উস্কে মমতার কাছে নীতীশ |
জয়ন্ত ঘোষাল • নয়াদিল্লি |
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করতে মহাকরণে যাচ্ছেন নীতীশ কুমার। এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, ১৪ ডিসেম্বর দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হবে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর। মমতা রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে এই প্রথম অন্য কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহাকরণে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন।
মমতা-নীতীশ এই বৈঠকের তাৎপর্য কী?
নীতীশ নিজে বলছেন, “এক দিনের জন্য কলকাতা যাচ্ছি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাওয়াটা তো প্রাথমিক সৌজন্য।” সরকারি সূত্রে জানানো হচ্ছে, কলকাতায় একটি পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত শিল্প সম্মেলনে যোগ দিতে ১৪ তারিখ সকালে কলকাতা যাবেন নীতীশ। সেই সম্মেলনে মমতাও থাকবেন। তবু আলাদা করে মমতার সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারে প্রাথমিক ভাবে নীতীশই আগ্রহ দেখিয়েছেন। সাড়া দিয়েছেন মমতা।
সূত্রটি আরও বলছে, গত কয়েক মাস ধরেই তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন নীতীশ। পটনা থেকে ফোনে তিনি সরাসরি এক বার মমতার সঙ্গে কথাও বলেছেন। নীতীশ চাইছেন, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ওড়িশা এই তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মিলে একটা জোট গড়ে তুলতে। যে জোটের কাজ হবে কেন্দ্রের কাছ থেকে গোটা পূর্বাঞ্চলের জন্য দাবিদাওয়া আদায় করা। নীতীশের কথায়, “বিহার-বাংলা ভাই-ভাই। আজকের সম্পর্ক তো নয়। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে চাই।”
মমতাও আজ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ তথা পূর্বাঞ্চলের জন্য আমাদের হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে। দিল্লি গিয়েও তো আমি সবার সঙ্গে দেখা করি। বাংলাকে নিয়ে কথা বলি। সেটাই আমার কাজ।” উল্লেখ্য, ১৪ তারিখই সন্ধ্যায় পাঁচ দিনের সফরে দিল্লি আসছেন মমতা। পরের দিন ফিকির বার্ষিক সভায় যোগ দেবেন তিনি। সেই সভায় প্রধানমন্ত্রীরও থাকার কথায়। এ দিকে, নীতীশও আজ দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
মমতা-নীতীশ অর্থনৈতিক প্রয়োজনে জোট গড়ার কথা বললেও দিল্লির রাজনীতির কারবারিদের একাংশ কিন্তু মনে করছেন, এর আড়ালে রাজনীতিও আছে। দুই মুখ্যমন্ত্রীই অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি দলগুলিকে নিয়ে একটি জোট গঠনে আগ্রহী। তাদের মতে, সংসদে যখন এফডিআই রাজনীতি চলছে, ঠিক তখনই আগামী লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে চলছে এই আঞ্চলিক রাজনীতি। যে জল্পনায় ইন্ধন জুগিয়ে আজ রাজনীতিক মমতার ভূয়সী প্রশংসা করে নীতীশ বলেন, “মমতা ৩৪ বছরের বাম শাসনের ইতি ঘটিয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছেন, এ তো মুখের কথা নয়। তা ছাড়া, দিল্লির রাজনীতিতেও তো তিনি গরিব মানুষের স্বার্থ রক্ষার মুখপাত্র।”
রাজনীতির কারবারিদের এই অংশের বক্তব্য, মমতা কংগ্রেসের হাত ছেড়েছেন। রাজ্যে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কের কারণে তাঁর পক্ষে বিজেপি-র হাত ধরা কঠিন। অন্য দিকে নীতীশ এনডিএ-তে থাকলেও বিজেপি-র সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল নয়। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদীর তিনি ঘোর বিরোধী। যে মোদী পরের লোকসভা ভোটে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড়ে খানিকটা হলেও এগিয়ে। ফলে আঞ্চলিক জোট গড়ার আগ্রহ দুই মুখ্যমন্ত্রীরই রয়েছে। মহাকরণের বৈঠকে সেই চেষ্টার সলতে পাকানো হবে বলে মনে করা হচ্ছে। |
|
|
|
|
|