|
নয়া প্রবেশিকা |
উঠে গেল এআইইইই। নতুন জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মাধ্যমে এখন থেকে আইআইটি
এবং এনআইটি, দু’টি প্রতিষ্ঠানেই ভর্তি হতে পারবেন পড়ুয়ারা। লিখছেন কৌলিক ঘোষ। |
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এনআইটি)-তে ভর্তির জন্য এখন থেকে আর আলাদা আলাদা প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে না। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন আয়োজিত নতুন সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন আইআইটি, এনআইটি, কেন্দ্রীয় সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কারিগরি-প্রযুক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজ্য সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাড়াও অন্যান্য একাধিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবেন পড়ুয়ারা। এত দিন আইআইটি-তে ভর্তি হওয়ার জন্য বসতে হত আইআইটি জয়েন্ট এন্ট্রান্সে। আর এনআইটি-সহ অন্যান্য কলেজগুলিতে ভর্তির জন্য এআইইইই-তে। নতুন জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মাধ্যমে এ বার একই ছাতার তলায় নিয়ে আসা হল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দু’টি জাতীয় স্তরের প্রবেশিকাকে। |
|
দু’টি পর্যায়ে পরীক্ষা
এই প্রথম অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগ্জামিনেশন। পরীক্ষাটিকে দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে মেন এবং অ্যাডভান্সড। দ্বাদশের পর যাঁরা আইআইটি-তে পড়তে চান এবং যাঁদের লক্ষ্য এনআইটি বা অন্য কোনও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়া, তাঁদের সকলকেই প্রথমে জেইই-মেন পরীক্ষায় বসতে হবে। পাশ করলে এনআইটি বা অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি মোটামুটি পাকা। তবে আইআইটি-তে ভর্তি হওয়ার জন্য মেন পরীক্ষার পর পেরোতে হবে অ্যাডভান্সড পরীক্ষা।
|
মেন পরীক্ষার ধরন
যেহেতু প্রথমবার, তাই অনেক ছাত্র-অভিভাবকই চিন্তিত এই নতুন সর্বভারতীয় জয়েন্ট নিয়ে। জেনে রাখুন মেন পরীক্ষাটির খুঁটিনাটি
দু’ভাবে দেওয়া যাবে পরীক্ষাটি। পরীক্ষা কেন্দ্রে বসে খাতায়-কলমে। এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে অনলাইনে। দু’টির মধ্যে একটি বেছে নিতে হবে।
মেন পরীক্ষা দু’টি পত্রে বিভক্ত। প্রথমটিতে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন এবং অঙ্ক। প্রশ্নের ধরন পুরোপুরি অবজেকটিভ। আর দ্বিতীয় পত্রটি তাঁদের জন্য, যাঁরা আর্কিটেকচার নিয়ে পড়তে আগ্রহী। এই পত্রে থাকছে অঙ্ক, অ্যাপ্টিটিড টেস্ট এবং ড্রয়িং টেস্ট। এই পরীক্ষাটি খাতায়-কলমেই দিতে হবে, অনলাইনে দেওয়া যাবে না। প্রার্থীর যদি ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কোনও শাখা ছাড়াও আর্কিটেকচার নিয়ে পড়ার আগ্রহ থাকে, তা হলে দু’টি পত্রের জন্য বসতে পারেন। কিন্তু যদি কোনও প্রার্থীর আর্কিটেকচার নিয়ে পড়ার ইচ্ছে না-থাকে তা হলে দ্বিতীয় পত্রে বসার কোনও প্রয়োজন নেই।
|
পরীক্ষা কবে
যাঁরা অফলাইনে অর্থাৎ নির্দিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে বসে খাতায়-কলমে পরীক্ষা দিতে চান, তাঁদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে তিন ঘণ্টা। আগামী ৭ এপ্রিল পরীক্ষাটি হবে সকাল সাড়ে নটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত। দ্বিতীয় পত্র অর্থাৎ আর্কিটেকচার পড়তে আগ্রহী হলে তিন ঘণ্টার পরীক্ষা দিতে হবে একই দিনে দুপুর দুটো থেকে বিকেল পাঁচটা অবধি।
যাঁরা অন লাইনে পরীক্ষা দিতে চান, তাঁরা প্রথম পত্রটির জন্য নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবেন ৮ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল-এর মধ্যে যে কোনও একটি দিনে। অনলাইন পরীক্ষা কেন্দ্র কোথায় কোথায় হবে তা জানিয়ে দেওয়া হবে ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।
|
সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মাধ্যমে কোনও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বি ই কিংবা বি-টেক স্তরে ভর্তির জন্য ১০+২ স্তরে পদার্থ বিজ্ঞান ও অঙ্ক থাকাটা আবশ্যিক। সেই সঙ্গে রসায়ন, বায়োটেকনোলজি, কম্পিউটার সায়েন্স বা বায়োলজি এই চারটির মধ্যে একটি থাকলেই হবে। সব মিলিয়ে প্রার্থীকে ১০+২ স্তরে ৫০% নম্বর পেতে হবে। ২০১৩-তে যাঁরা ১০+২ দিচ্ছেন, তাঁরাও পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্য। তবে নির্দিষ্ট সময়ের ১০+২ উত্তীর্ণ হওয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে।
|
৭ মে-র মধ্যে ফল প্রকাশের পর শুরু হবে কাউন্সেলিংয়ের পালা। মেধা তালিকা প্রস্তুতির সময় শুধুমাত্র জয়েন্ট এন্ট্রান্সে প্রাপ্ত নম্বরই নয়, গুরুত্ব দেওয়া হবে ১০+২-এ পরীক্ষার্থী কত নম্বর পেয়েছেন সেটাকেও। অনলাইনে jeemain.nic.in ওয়েবসাইটে প্রার্থীরা তাঁদের পছন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিষয় জানাতে পারবেন।
|
|
এই জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করা বা অন্যান্য সহযোগিতা করার জন্য দেশ জুড়ে একাধিক কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে রাজ্যে রয়েছে বেশ কতগুলি। যার মধ্যে অন্যতম হল কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় (নিকো পার্কের বিপরীতে), লক্ষ্মীপত সিংহানিয়া অ্যাকাডেমি (আলিপুর), ভবন্স গঙ্গাবক্স কানোরিয়া বিদ্যামন্দির (সল্টলেক), ডি এ ভি মডেল স্কুল (দুর্গাপুর), ডি এ ভি পাবলিক স্কুল (আসানসোল), ডি এ ভি মডেল স্কুল (আই আই টি, খড়্গপুর), ডি পি এস (প্রধাননগর, শিলিগুড়ি), কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় (বামনগাছি, হাওড়া)।
অনলাইনে আবেদন করার শেষ তারিখ ১৫ ডিসেম্বর। jeemain.nic.in ওয়েবসাইটটিতে আরও বিস্তারিত তথ্য মিলবে এই জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা সংক্রান্ত। প্রসঙ্গত, ৩০টি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, ৫টি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইনফর্মেশন টেকনোলজি, ১৩টি সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২৩টি সেল্ফ ফিনান্সড শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-সহ আরও বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়া যাবে মেন পরীক্ষায় পাশ করলে।
|
জেইই-অ্যাডভান্সড
দেশের ১৬টি আইআইটি-তে ভর্তির জন্য অবশ্য শুধু জেইই-মেন পরীক্ষার বাধা টপকালেই চলবে না। পেরোতে হবে দ্বিতীয় ধাপটি অর্থাৎ জেইই-অ্যাডভান্সড পরীক্ষা। এটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী জুন মাসের ২ তারিখে। মেন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মেধা তালিকার ভিত্তিতে দেড় লক্ষ ছেলেমেয়ে এই অ্যাডভান্সড পরীক্ষায় বসতে পারবেন।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগ্জামিনেশন (মেন)-এর ফলাফল ৭ মে প্রকাশিত হওয়ার পর ৮ থেকে ১৩ মে-র মধ্যে jeeadv.iitd.ac.in-এ নাম নথিভুক্ত করতে হবে। জে ই ই-মেন-এর মেধা তালিকায় প্রথম দেড় লক্ষ ছাত্রছাত্রীই এই পরীক্ষায় বসতে পারেব, কিন্তু দ্বাদশ স্তরে তাদের ৬০ শতাংশ নম্বর থাকাটাও আবশ্যিক।
|
এখানে একটা কথা বলে রাখি, রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের সঙ্গে কিন্তু সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষাকে কোনও ভাবেই গুলিয়ে ফেলবেন না। প্রতিবার রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা যেমন হয় এবং যে সময় হয়, এ বারও ঠিক তেমনই হবে। দুটোর মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন, ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান ভাস্কর গুপ্ত। |
|
|
খেয়াল রাখুন |
|
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে প্রবেশনারি অফিসার ও ক্লার্ক পদে নিয়োগের পরীক্ষার জন্য নতুন প্রস্তুতি পাঠ্যক্রম শুরু করছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ব্যাঙ্কিং অ্যান্ড সার্ভিসেস (আই আই বি এস)। মেয়াদ সাড়ে ৫ মাস। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের দাবি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উত্তর বের করার বিশেষ পদ্ধতি শেখান তাঁরা। মূল পরীক্ষার আদলে নিয়মিত মক টেস্টও নেওয়া হয়। ফোন করতে পারেন ২৪৬১-০৩৬১ নম্বরে। |
|
আপনার প্রশ্ন
বিশেষজ্ঞের উত্তর |
|
|
|
প্রশ্ন: বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক পড়ছি পাসে। অনার্স নেই। বিষয় হিসেবে রয়েছে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন। ভবিষ্যতে এমসিএ পড়তে চাই। এখন প্রশ্ন হল, আমার যা যোগ্যতা, তাতে কি আমি এমসিএ পড়ার জন্য আয়োজিত প্রবেশিকা পরীক্ষায় আদৌ বসতে পারব?
শম্পা জানা, নামখানা |
|
উত্তর: আপনার যা যোগ্যতা, তাতে এমসিএ-র প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। আসলে এমসিএ পড়ার আসল শর্ত হল স্নাতকে অঙ্ক থাকতে হবে। আপনার যখন সেটা রয়েছে, তখন এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই। অন্তত প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে পারবেন। এমসিএ পড়ার জন্য রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড নেয় জেকা প্রবেশিকা পরীক্ষা, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি নেয় নিমসেট। এ ছাড়া জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকাতেও বসতে পারবেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে স্নাতকে ৫০% নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক। |
|