অন্ডালের বিমাননগরী প্রকল্পে লগ্নি বাড়াতে চায় সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি ইন্টারন্যাশনাল। রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের দাবি, সেই মর্মে তারা রাজ্যকে আশ্বাস দিয়েছে। পাশাপাশি, আগামী ১ বৈশাখ ওই বিমাননগরী থেকে উড়ান চালু হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, চাঙ্গি অংশীদারি বাড়াতে চাইলেও তা অবশ্য নির্ভর করছে রাজ্য সরকার কত দ্রুত বিভিন্ন জট কাটিয়ে প্রকল্পটিকে সবুজ সঙ্কেত দিচ্ছে তার উপর। বিমাননগরীর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিন্তু সেখানে বিমান চলাচলের জন্য সহায়ক পরিবেশ ও পরিকাঠামো নির্মাণের বেশ কিছুটা প্রশাসনের উপর নির্ভরশীল। সেগুলি যত দ্রুত সম্পন্ন হবে, প্রকল্পটিও তত তাড়াতাড়ি চালু হবে। নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, বর্তমান আইনের মধ্যে থেকেই রাজ্য পূর্ণ সহায়তা দেবে।
২০০৭-এর সেপ্টেম্বরে এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রস্তাবিত ওই বিমাননগরীতে বিমানবন্দর ছাড়াও উপনগরী, লজিস্টিক হাব, শিল্পতালুক, তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে সব মিলিয়ে ১০ হাজার কোটি টাকা লগ্নি হওয়ার কথা। প্রথমে অবশ্য তৈরি হবে বিমাননগরীটি।
এই প্রকল্পের নির্মাতা সংস্থা বেঙ্গল এরোট্রোপলিসে চাঙ্গির এখনও পর্যন্ত ২৬% অংশীদারি রয়েছে। এ ছাড়া রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের ১.২%, আইএলঅ্যান্ডএফএস-এর ১২.৬৫% এবং বাকিটা ভারতীয় অংশীদারদের হাতে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, নতুন সরকার এই বিমাননগরীটিকে রাজ্যের শিল্পায়নের মানচিত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। সে জন্যই রাজ্য চায় চাঙ্গি এই প্রকল্পে তাদের অংশীদারি বাড়াক। কারণ বিমানবন্দর নির্মাণে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাদের খ্যাতি রয়েছে। সম্প্রতি মিলন মেলা প্রাঙ্গণে ‘বেঙ্গল বিল্ডস’-এর অনুষ্ঠানে বেঙ্গল এরোট্রোপলিস-এর কর্তাদের পাশাপাশি উপস্থিত চিলেন চাঙ্গির দুই কর্তা লিম এবং থ্যাম। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেন।
শনিবার বেঙ্গল বিল্ডস-এর অনুষ্ঠানের ফাঁকেই ফিরহাদ হাকিম বলেন, “চাঙ্গি ওই প্রকল্পে তাদের অংশীদারি বাড়িয়ে ৫১% করতে চায়। প্রকল্পটি খুব ভাল হচ্ছে। তারা ১ বৈশাখ থেকে বিমানবন্দরটি চালুও করতে চায়।” চাঙ্গির মালিকানা বাড়লে লগ্নির অঙ্ক কতটা বাড়বে, তা নিয়ে অবশ্য বেঙ্গল এরোট্রোপলিস-এর কর্তারা মুখ খুলতে চাননি। প্রকল্পটি আসানসোল-দুর্গাপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র (এডিডিএ) এলাকায়। নগরোন্নয়ন মন্ত্রী জানান, এডিডিএ তাদের এক্তিয়ারের মধ্যে যা সাহায্য করতে পারে, তা করবে। তাঁর কথায়, “রাজ্য সরকার শিল্পের জন্য জমি নিয়ে ফেলে রাখার বিরোধী। কিন্তু যাঁরা জমিতে শিল্প করছেন, আইনের মধ্যে তাঁদের সব রকম সাহায্য করা হবে।”
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। তবে প্রশাসনিক স্তরে বাকি সব ছাড়পত্র মিললে মার্চের মধ্যেই তা চালুর উপযুক্ত হয়ে যাওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থার সঙ্গে কথা বলছে চাঙ্গির বিশেষ টিম।
পাশাপাশি প্রকল্পে শিল্প তালুকের কাজও চলছে। ৩৮০ একর জমি জুড়ে এই শিল্প তালুকের ৭ শতাংশ জমি এখনও পর্যন্ত বিনিয়োগ টানতে পেরেছে। নির্মাতা সংস্থাটির দাবি, ইতিমধ্যেই আরও বেশ কয়েকটি সংস্থা এখানে লগ্নির আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি সেখানে জয় মাইনিং গোষ্ঠী ২৪ একর জমি নিয়েছে। এবং বেঙ্গালুরুর সংস্থা আরডেক্স এনডুরা নিয়েছে ৩ একর জমি। |