ফের বিএসএফ-গরু পাচারকারীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত কোচবিহারের সীমান্ত এলাকা। বৃহস্পতিবার রাতে শীতলখুচি থানার লালবাজার এলাকায় ওই ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম মফিজুল মিঁয়া (২৫)। বাড়ি গীতালদহের বড়মরিচায়। ওই ঘটনায় ডি শ্রীনিবাসন নামে এক জওয়ান জখম হন। বিএসএফের দাবি, মৃত যুবক গরু পাচারচক্রের অন্যতম পান্ডা। ঘটনাস্থল থেকে ৬টি গরু উদ্ধার হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “গরু পাচারে বাঁধা দেওয়ায় জওয়ানদের ওপর পাচারকারীরা হামলা চালায়। তাতে এক জওয়ান জখম হন। পরিস্থিতির জেরে বিএসএফ গুলি চালালে পাচারচক্রে যুক্ত ওই যুবকের মৃত্যু হয়। বিএসএফের তরফে অভিযোগ জমা পড়েছে। পুরো বিষয়টি বিশদে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
বিএসএফ সূত্রেই জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারে একদল পাচারকারী লালবাজার বিওপি এলাকায় কাঁটাতারের দুই পারে ঘাঁটি করেন। ভারত ও বাংলাদেশের দুই দিকে থাকা ওই পাচারকারীরা কাঁটাতারের বেড়ার ওপর মই বসিয়ে গরু পাচারের ওই কারবার চালাচ্ছেন খবর পেয়ে বিএসএফ জওয়ানদের একটি দল এলাকা ঘিরে ধরে। সেই সময় পাচারকারীরা জওয়ানদের লক্ষ করে ধারালো অস্ত্র, পাথর ছুড়ে হামলা করে। চোখে আঘাত পান কনস্টেবল ডি শ্রীনিবাসন। বাংলাদেশের দিকে থাকা পাচারকারীদের লক্ষ করে গুলি চালান এক জওয়ান। পরে ওই যুবকের দেহ সীমান্তের শীতলখুচি থানা এলাকায় উদ্ধার হয়। বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, “জওয়ান জখম হওয়ার পর আত্মরক্ষার জন্য বাংলাদেশের দিকে থাকা পাচারকারীদের এক জনের গুলি লাগে। ওই ব্যাক্তি বাংলাদেশ সীমানায় ঢুকেও পড়েন। পরে সেখানে জখম ওই যুবকের মৃত্যু হলে পাচারচক্রের অন্য পান্ডারা চুপিসারে নদী পেরিয়ে দেহ এনে এ দেশের সীমানায় ফেলে যান। এই নিয়ে এক মাসে বিএসএফের গুলিতে কোচবিহারের সীমান্ত এলাকায় চার জনের মৃত্যু হল। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শীতলখুচির পুটিয়া বারমাসিয়াতে বিএসএফের গুলিতে দুই ভাই ইমতিয়াজ আলি ও আলি আহমেদের মৃত্যু হয়। ওই মাসের ২৫ তারিখে মেখলিগঞ্জে বাংলাদেশের বাসিন্দা আব্দুল লতিফ নামের এক অনুপ্রবেশকারীরা মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার রাতে চতুর্থ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বিএসএফের দাবি, মৃতরা পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জওয়ানদের ওপর হামলায় আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে হয়। পুটিয়া বারমাসিয়ায় মৃতদের পরিবার ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বিএসএফের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করে। সম্প্রতি চ্যাংরাবান্ধায় পাচারকারী ও জওয়ানদের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৫ জন জখম হন। বাসিন্দাদের দাবি, সেখানেও শূন্যে গুলি চালায় জওয়ানরা। বিএসএফ অবশ্য আগে তা অস্বীকার করেছে। |