এ যাবৎ মুর্শিদাবাদের জন্য রেল দফতরের যেটুকু দাক্ষিণ্য জুটেছে, সবটুকুই জেলা সদর বহরমপুরের জন্য। বহরমপুরের সঙ্গে কলকাতার রেল যোগাযোগ এখন যথেষ্ট ভাল। এক দিনেই কলকাতার কাজ সেরে ফেরা যায়। কিন্তু মুর্শিদাবাদ মানে তো শুধু বহরমপুর নয়। ভাবুন ধুলিয়ান, অরাঙ্গাবাদ, জঙ্গিপুরের কথা। ধরা যাক জঙ্গিপুরের গিরিয়া থেকে সামান্য কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় যেতে হলে আগের দিন বহরমপুরে গিয়ে থাকতে হয়। পরের দিন কাজকর্ম সেরে ভাগীরথী, বা ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ধরলে আবার বহরমপুরে রাত্রিবাস করতে হবে। আবার সড়কপথ ছাড়া বহরমপুরে যাওয়ার কোনও সুবিধাজনক ট্রেন নেই। ডবল লাইন তো দূরের কথা, গত ১০০ বছরে ফরাক্কা থেকে খাগড়া পর্যন্ত ১০৫ কিলোমিটার রেলপথের তিলমাত্র উন্নতি হয়নি। নেই কোনও ভাল ট্রেনও। অন্তত এই দূরত্বের জন্য একটি লোকাল ট্রেন যদি চলাচল করে, তাহলে জেলার মধ্যাঞ্চলের দৈনন্দিন কাজ সেরে জেলা সদর বহরমপুরে বা বহরমপুর হয়ে কলকাতায় যাতায়াত করা যায়। তেমনি অনায়াসে ফরাক্কা গিয়ে দূরপাল্লার মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেন ধরতে পারে। আর মুর্শিদাবাদ রেল মানচিত্রের চেহারা সত্যিই বদলে যাবে, যদি এই এলাকার বহু দিনের স্বপ্ন সফল হয়। সেটি হল, লালগোলা থেকে ময়া ও সম্মতিনগর হয়ে অ্যাফ্লাক্স বাঁধ বরাবর ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সংযোগকারী রেলপথ যদি সুজনিপাড়া স্টেশনে মিলিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে জঙ্গিপুর মহকুমার ভাগীরথীর পূর্বতীরস্থ প্রত্যন্ত এলাকাগুলি প্রত্যক্ষ ভাবে রেল পরিষেবার আওতায় আসবে। এবং শিয়ালদহ-লালগোলা শাখার সঙ্গে হাওড়া-ফরাক্কা শাখার স্বচ্ছন্দ সংযোগ গড়ে উঠবে। রেলপ্রতিমন্ত্রী অন্তত সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাবগুলি তুললেই আমরা খুশি। বাস্তবায়িত না হলেও তাঁকে দায়ি করব না। আবার আমরা আমাদের ভাগ্যেরই দোহাই দেব। |
জঙ্গিপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, জঙ্গিপুর রোড স্টেশন থেকে ভোর ৫টার মধ্যে শিয়ালদহ অথবা হাওড়া যাওয়ার একটি দ্রুতগামী ট্রেন চালু করা হোক। কিন্তু সেই দাবি পূরণ করা হল না পরিবর্তে এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে একটি নতুন শিয়ালদহ-জঙ্গিপুর প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালু করা হয়। তার ফলে জঙ্গিপুরবাসীর দাবি আংশিক পূরণ হয়। কিন্তু ট্রেনটি সপ্তাহে ছয় দিন চলে। ট্রেনটিকে প্রাত্যহিক হিসাবে চালু করার আবেদন জানাই। সর্বোপরি ট্রেনটি যাতে রাত ৮টা মধ্যে শিয়ালদহ পৌঁছয় সে ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হলে আমরা উপকৃত হব। |