|
|
|
|
রাষ্ট্রদ্রোহে অভিযুক্ত প্রশান্ত দাস |
আরও তিন দিনের পুলিশি হেফাজত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
ধৃত সিপিএম নেতা প্রশান্ত দাসের বিরুদ্ধে এবার রাষ্ট্রদ্রোহের ধারায় পৃথক একটি মামলা রুজু করল পুলিশ।
তৃণমূল সমর্থকদের উপর হামলা, মারধর, খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুত রাখার অভিযোগে দু’দফায় সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে থাকার পর এ বার মাওবাদী-সংক্রান্ত ওই মামলায় শুক্রবার প্রশান্তবাবুকে আরও সাত দিন নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য শুক্রবার ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। আদালত অবশ্য প্রশান্তবাবুকে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সুপার ভারতী ঘোষের দাবি, “প্রশান্তবাবুর বিরুদ্ধে মাওবাদী-কার্যকলাপে যুক্ত থাকার স্বপক্ষে যথেষ্ট তথ্য মিলেছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে ফের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
আদালতে ঢোকার সময় প্রশান্তবাবু অবশ্য বলেন, “আমি চক্রান্তের শিকার।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “পুলিশ-প্রশাসনে বেআব্রু ভাবে দলতন্ত্র চলছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে আমাদের লোকজনকে পরিকল্পিত ভাবে সাজানো মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।” আর তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ বলেন, “গোড়া থেকেই বলে আসছি মাওবাদী ও সিপিএম অভিন্ন। এ বার সিপিএম জেলা সম্পাদক দীপক সরকারকে জেরা করলে আরও প্রমাণ পাওয়া যাবে।” |
|
কুশবনিতে মিলল কম্পিউটার।—নিজস্ব চিত্র। |
গত ২২ নভেম্বর ঝাড়গ্রামের চন্দ্রি অঞ্চলে সিপিএমের একটি মিছিলকে ঘিরে তৃণমূল সমর্থকদের সঙ্গে গোলমালের পরে রাতেই গ্রেফতার করা হয় সিপিএমের আগুইবনি লোকাল কমিটির সম্পাদক প্রশান্তবাবুকে। প্রশান্তবাবুর বিরুদ্ধে তৃণমূল সমর্থকদের উপর হামলা, মারধর, খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুত রাখার অভিযোগে মামলা রুজু করে পুলিশ। গত ২৩ নভেম্বর প্রশান্তবাবুকে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে তোলা হলে পুলিশের আবেদনক্রমে প্রথম দফায় চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন গত সোমবার রাতে চন্দ্রির আউসপাল গ্রামে প্রশান্তবাবুর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি পাইপ গান, গুলি ও কিছু মাওবাদী পোস্টার উদ্ধারের দাবি করে পুলিশ। আরও অস্ত্র উদ্ধারের স্বার্থে গত মঙ্গলবার পুলিশের আবেদনক্রমে প্রশান্তবাবুকে আরও তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায় ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালত।
দু’দফায় মোট সাত দিন পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষে শুক্রবার প্রশান্তবাবুকে ফের আদালতে তোলা হয়। তাঁর বাড়িতে অস্ত্র ও মাওবাদী পোস্টার উদ্ধারের ঘটনায় রাষ্ট্রদ্রোহের ধারায় ও অস্ত্র আইনে পৃথক একটি মামলা রুজু করেছে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ। এ দিন ওই মামলায় প্রশান্তবাবুকে সাত দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে দাবি করা হয়, মাওবাদীদের সঙ্গে প্রশান্তবাবুর প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে।
অভিযুক্তের আইনজীবী সুমন দাস মহাপাত্র আদালতে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা হওয়ার কারণেই আমার মক্কেলকে পরিকল্পিত ভাবে সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।” উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক প্রিয়জিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রশান্তবাবুকে তিন দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এ দিনই বিকেলে জামবনির কুশবনির জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়ে মাটিতে পোঁতা থাকা একটি ক্যান-মাইন ও বস্তাবন্দি একটি কম্পিউটার উদ্ধারের দাবি করেছে সিআরপিএফ-এর ১৮৪ নম্বর ব্যাটালিয়ান। |
|
|
|
|
|