খুন, সংঘর্ষ-সহ নানা অপরাধে অভিযুক্ত অঞ্জন মুন্সিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার ভোরে মঙ্গলকোটের আড়াল গ্রাম থেকে তাকে ধরা হয়। মঙ্গলকোটের তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী আজাদ মুন্সির ভাই এই অঞ্জন। তার আরও তিন সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের থেকে দু’রাউন্ড গুলি ও চারটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। নানা দুষ্কর্মে অভিযুক্ত আজাদ অবশ্য এখনও অধরা।
|
অঞ্জন মুন্সি।
—নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আড়াল গ্রামের বাসিন্দা অঞ্জন মঙ্গলকোটের তৃণমূল কর্মী কচি শেখ খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কচি শেখকে তৃণমূল অফিসের কাছ থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে আজাদ, তার ভাই অঞ্জন ও তাদের দলবলের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গে গোলমাল, সংঘর্ষের অভিযোগও রয়েছে অঞ্জনের বিরুদ্ধে। অন্য তিন ধৃত দেউলিয়া গ্রামের বুলু মোল্লা ও খোকন শেখ এবং মঙ্গলকোটের জাহিরুল শেখের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের দাবি, কচি শেখ খুন হওয়ার পর থেকে অঞ্জন পলাতক ছিল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ খবর পায়, অঞ্জন-সহ চার জন আড়াল গ্রামে ফিরেছে। তার পরেই শুক্রবার ভোরে মঙ্গলকোটের ওসি দীপঙ্কর সরকার পুলিশ নিয়ে গ্রামে যান। বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় অঞ্জনকে। পুলিশ জানায়, কয়েক সপ্তাহ আগে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে অশান্ত হয়ে উঠেছিল মঙ্গলকোটের লাখুরিয়া গ্রাম। সেই সময়ে আজাদ-গোষ্ঠীর সঙ্গে সাইফুল-গোষ্ঠীর লড়াই বাধে। পুলিশ গেলে লাখুরিয়া থেকে ঝিলেরা গ্রামে যাওয়ার মোরাম রাস্তার তিন জায়গায় কেটে দেওয়া হয়। সে কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে দেরি হয় পুলিশের। আজাদ ও তার দলবল অজয় পেরিয়ে বীরভূমে আশ্রয় নেয়। পরে আধা সামরিক বাহিনী মঙ্গলকোটে টহল দেয়। তবে তখনও আজাদকে ধরতে পারেনি পুলিশ। শুক্রবার অঞ্জনকে গ্রেফতারের পরে জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “লাগাতার তল্লাশি চালিয়ে অঞ্জনকে ধরা হয়েছে। আশা করি, এ বার আজাদও ধরা পড়বে।”
সিপিএমের ভাগীরথী-অজয় জোনাল কমিটির সম্পাদক দুর্যোধন সরের দাবি, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই পুলিশ অঞ্জনকে গ্রেফতার করল। এলাকায় দাপিয়ে বেড়ানো সত্ত্বেও এত দিন কেন ধরেনি, তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।” তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর পাল্টা দাবি, “পুলিশ আইনমাফিক কাজ করেছে। সিপিএমের মতো পুলিশের উপরে চাপ সৃষ্টি আমরা করি না।” শুক্রবার আদালতে তোলা হলে অঞ্জনকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। |