মালিকানার দাবি নিয়ে কোচবিহার জেলা পরিষদ ও তুফানগঞ্জ-২ পঞ্চায়েত সমিতির চাপানউতোরে রসিকবিলের পর্যটক আবাসে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বিল না মেটানোয় পর্যটক আবাসের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছে পর্ষদ। ফলে রসিকবিলে গিয়ে রাত্রিবাসের সমস্যায় পড়ছেন পর্যটকরা।
এ পরিস্থিতিতে পর্যটক আবাস নিজেদের হাতে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বন দফতর। বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির চাপান উতোরে পর্যটক আবাস নিয়ে সমস্যার কথা শুনেছি। তাই প্রস্তাব এলে ওই আবাস বন দফতরের আওতায় নিতে আগ্রহী। বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলব।”
কোচবিহারের জেলাশাসক জেলা পরিষদে এক্সিকিউটিভ অফিসার মোহন গাঁধী বিষয়টি নিয়ে সভাধিপতির সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, বাম জমানায় রসিকবিলে পর্যটকদের রাত্রিবাসের সুবিধের কথা মাথায় রেখে দ্বিতল ওই আবাস গড়া হয়। তুফানগঞ্জ-২ পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষ ওই কাজ সম্পূর্ণ করেছে।
গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির তরফে পর্যটক আবাস চালানোর খরচ নিয়ে সমস্যার কারণ দেখিয়ে সেটির দায়িত্ব জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয় সিপিএমের দখলে থাকা তকালীন পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা। পঞ্চায়েত ভোটের পর তৃণমূল জোট সমিতির ক্ষমতায় এসে হস্তান্তর প্রক্রিয়া বেআইনি বলে দাবি করেন। তার পরেই মালিকানা নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত। সম্প্রতি তা চরম আকার নেওয়ায় পর্যটক আবাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী পঞ্চায়েত সমিতির জেনারেল মিটিং করে কোনও সম্পত্তি জেলা পরিষদের হাতে হস্তান্তর করার কথা। গত পঞ্চায়েত ভোটে হেরে সিপিএম অফিসারদের একাংশের মদতে পুরানো তারিখে বন বিষয়ক স্থায়ী সমিতির অবৈধ বৈঠকের রেজোল্যুশন করে তা জেলা পরিষদের হাতে দেওয়ার একটা চিঠি করে। জমির দলিল পঞ্চায়েত সমিতির, এক লক্ষ টাকার বিদ্যুৎ বিলও সমিতির নামেই এসেছে। ওটার মালিকানা আমাদের। জটিলতা কাটলে নতুন চেহারায় সেটি গড়া হবে। কোচবিহার জেলা পরিষদের সিপিএম সভাধিপতি দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়ে পর্যটক আবাসের দায়িত্ব জেলা পরিষদের হাতে দেয়। ওটা আমাদের মালিকানাধীন। বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ কেটে যাওয়ায় সাময়িক সমস্যা হলেও সে সব মিটিয়ে পর্যটক আবাস সাজিয়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। আবাসের এক কর্মী বলেন, “অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ কেটে দিয়েছে পর্ষদ। রাতের অন্ধকারে ভূত-বাড়ির চেহারা নিচ্ছে আবাসটি।” |