কংগ্রেসের ১২ ঘণ্টা বনধ
দু’পক্ষেরই মিছিল, পুলিশে ছয়লাপ বলরামপুর
র আগে মাওবাদীদের ডাকা বনধ প্রত্যাখ্যান করেছে বলরামপুর। দোকানপাট, স্কুল, বাজার-হাট, সরকারি দফতর খোলা রেখে মাওবাদী উপদ্রুত বলরামপুরের মানুষ বুঝিয়েছেন, তাঁরা বনধ রাজনীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু, বৃহস্পতিবার সেই বলরামপুরেই কংগ্রেসের ডাকা বনধের ভাল প্রভাব পড়ল।
বনধ সফল না ব্যর্থ, তা নিয়ে কংগ্রেস-তৃণমূলের চাপানউতোর চললেও এলাকা ঘুরে এ দিন দেখা গিয়েছে, ব্লক সদরে যানবাহন বিশেষ চলেনি, খোলা ছিল না বেশির ভাগ দোকানপাটও।
বলরামপুর ব্লকের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি, সব গ্রামে অবিলম্বে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা, স্পঞ্জ-আয়রন কারখানার দূষণ রোধ, পঞ্চায়েত এলাকায় ধান কেনার ব্যবস্থা-সহ নানা দাবিতে এ দিন ১২ ঘণ্টার বলরামপুর বনধের ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস। বনধ ঘিরে দিনভর উত্তেজনা থাকলেও অঘটন কিছু হয়নি। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “দু’পক্ষই (বনধ সমর্থক ও বিরোধী) মিছিল করেছে। পুলিশ তৎপর ছিল। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, কেউ গ্রেফতার হয়নি।”
বন্ধ সফল করতে রাস্তায় কংগ্রেস।
জেলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসার কথা আগামী সোমবার। তার ঠিক আগে রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর নিবার্চনী কেন্দ্র বলরামপুরে কংগ্রেস বনধ ডাকায় গোটা জেলারই নজর ছিল সেদিকে। পাশাপাশি কংগ্রেস বনধ ঘিরে প্রচার তুঙ্গে তোলায় এবং বনধ ব্যর্থ করতে আগের দিন থেকে তৃণমূলও রাস্তায় নামায় রাজনৈতিক উত্তেজনাও ছিল যথেষ্ট। বৃহস্পতিবার সকালে বনধ সমর্থকদের মোটরবাইক মিছিল বলরামপুর কলেজ ময়দান থেকে শুরু হয়ে গোটা বলরামপুর পরিক্রমা করে। পরে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা স্থানীয় চকবাজার মোড়ে জমায়েত হয়ে পিকেটিং শুরু করেন। মোড়ে পিকেটিং চললেও পুরুলিয়া-জামশেদপুর ৩২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেননি তাঁরা।
বেলা বাড়তেই থানার দিক থেকে স্থানীয় তৃণমূল নেতা অঘোর হেমব্রমের নেতৃত্বে একটি মিছিল চকবাজারের দিকে আসার পথে চকবাজার মোড়ে পৌঁছোনোর আগেই পুলিশ মিছিলকে কর্ডন করে ফেলে। অন্য দিকে, স্টেশনের দিক থেকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সৃষ্টিধর মাহাতোর নেতৃত্বে অন্য একটি মিছিল শুরু হয়। ওই মিছিলও চকবাজারের কাছে পৌঁছোনোর আগে পুলিশ এলাকার দখল নেয়। ভোর থেকেই বাসস্ট্যান্ড, চকবাজার মোড়, পোস্ট অফিস মোড়, স্টেশন সহ বলরামপুরের বিভিন্ন এলাকা ছিল পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ।
বন্ধ বিরোধী মিছিল তৃণমূলের।
সকাল থেকে বলরামপুরের দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বেলা বাড়তে বনধ-বিরোধীদের মিছিল দেখে কেউ কেউ দোকান খুলেছিলেন। কিছু ক্ষণ পরে বনধ সমর্থকদের মিছিল দেখে অবশ্য অনেক দোকান ফের বন্ধ হয়ে যায়। এই ভাবেই দিনভর দোকান খোলা-বন্ধের যেন লুকোচুরি খেলা চলেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, “আমাদের উভয় সঙ্কট। বন্ধ করলে মুশকিল। খোলা রাখলেও। আমরা কোন দিকে যাব?”
বলরামপুর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সুভাষ দাস বলেন, “বলরামপুরের মানুষ আমাদের ডাকা বন্ধে সাড়া দিয়েছেন। আমরা বন্ধ করতে জোর খাটাইনি।” পাশাপাশি তাঁর দাবি, মানুষ বন্ধে সাড়া দিলেও তৃণমূল কর্মীদের একাংশ বন্ধ ভাঙার জন্য জবরদস্তি করেছে।
ব্লক তৃণমূল সভাপতি অবশ্য বলেন, “আমরা বন্ধ ভাঙতে জবরদস্তি করিনি। মানুষের কাছে বন্ধে সাড়া না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মিছিল করেছি শুধু।” তাঁর আরও দাবি, এ দিন কোনও বন্ধই হয়নি! এমনিতেই বৃহস্পতিবারে বলরামপুরের অনেক দোকানপাট বন্ধ থাকে। তৃণমূলের দাবি, এ দিন যানবাহন চলাচলও প্রায় স্বাভাবিক ছিল। যদিও ঘটনা হল, এ দিন দূরপাল্লার কয়েকটি যান ছাড়া অন্য গাড়ি বড় একটা চোখে পড়েনি। জেলা বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্তও জানিয়েছেন, বন্ধের জেরে এ দিন বলরামপুর রুটে কোনও বাস চলেনি।
ছবি: সুজিত মাহাতো।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.