|
|
|
|
মিলনের সূত্রে গাঁথা স্মরণ-মঞ্চ |
গৌতম চক্রবর্তী |
তিনি নেই। তবু মৃত্যুর ৩৭ দিন পর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনিই মেলালেন। ঋতুপর্ণ ঘোষ এবং তরুণ মজুমদার, সমীর আইচ এবং ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়, পবিত্র সরকার এবং হিরণ মিত্র একই সঙ্গে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিতে ফুল দিলেন। মঞ্চে উঠলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। দর্শকাসনে ফিসফিসানি, মোহরকুঞ্জের সংস্কৃতি সমন্বয় মঞ্চের ‘প্রাণের প্রহরী’ শীর্ষক সুনীল স্মরণসভায় আমরা-ওরা ব্যবধান কিছুটা ঘুচল। |
|
সুনীল-স্মরণ। বৃহস্পতিবার। |
পুরো ব্যবধান হয়তো ঘোচেনি। চন্দন সেন, অশোক মুখোপাধ্যায়দের ‘সংস্কৃতি সমন্বয় মঞ্চ’-এর উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণসভায় আমন্ত্রণ পেয়েও ‘আসতে পারেননি’ ব্রাত্য বসু, অর্পিতা ঘোষ। মৃত্যুর কয়েক মাস আগে ‘যা দেখি যা শুনি একা একা কথা বলি’ শীর্ষক কলমে সুনীল দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের একটি নাটকের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। ‘নতুন নাটকের রিহার্সালে ব্যস্ত থাকায়’ সেই নাট্য পরিচালকও আসতে পারেননি।
কিন্তু যাঁরা এলেন, কম কী? শঙ্খ ঘোষ রবীন্দ্রসদনের অনুষ্ঠানে যাননি, এ দিন দর্শকাসনে প্রথম সারিতেই তিনি বসে। তিনি অবশ্য মঞ্চে উঠবেন না বলে উদ্যোক্তাদের জানিয়েছিলেন। কাঁটাতারের ব্যবধান ঘুচিয়ে ঢাকা থেকে এসেছিলেন শামসুল হক, বেলাল চৌধুরী। |
|
অলক্ষ্যে থেকে তিনি মেলালেন। সুনীল-স্মরণে এক মঞ্চে সব পক্ষ। |
ছিল না কবি-লেখক-চিত্রতারকা ব্যবধান। কখনও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের স্মৃতিচারণে এল ‘মুক্তধারা’ দেখার পরে সুনীল কী ভাবে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। কখনও বা অসমের ঔপন্যাসিক লক্ষ্মীনন্দন বরা জানালেন, সুনীল তাঁর কাছে সেরা দশ ভারতীয় ঔপন্যাসিকের অন্যতম। জীবনবোধ ও রচনার মধ্যে কোনও বৈপরীত্য ছিল না। নবনীতা দেবসেন পড়ে শোনালেন সুনীলের কবিতা, ‘আমার কিছু ভাল্লাগে না।’ যাবতীয় ব্যবধান ঘুচিয়ে কবি সুনীল, ঔপন্যাসিক সুনীল, বন্ধুবৎসল মানুষ সুনীল সকলেই হাজির হলেন মোহরকুঞ্জের স্মৃতিচারণে।
সামনের কাট আউটে তখনও সাদা জুলফি হাসিমুখ। স্মৃতির শহর মাড়িয়ে ঘরে ফেরে একা এবং কয়েকজন।
|
—নিজস্ব চিত্র |
|
|
|
|
|