বিদেশ-বিভুঁইয়ে সাইনবোর্ডের লেখা দুর্বোধ্য মনে পকেট থেকে মোবাইল বের করে ছবি তুলুন। স্ক্রিনে তাকালেই দেখবেন, বিদেশি ভাষায় লেখা সাইনবোর্ডের কথাগুলি আপনার ভাষার চেনা হরফে ফুটে উঠেছে।
দু’টি ভিন্ন ভাষার মানুষ অথচ একে অন্যের কথা সহজেই বুঝতে পারছেন। এর জন্য দরকার একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম, যা শুধু কথাই বুঝতে পারবে না, শরীরী অঙ্গভঙ্গিও ধরতে পারবে।
বিষয়গুলি কল্পবিজ্ঞানের মতো হলেও আদতে তা নয়। বাস্তবে এমনই দু’টি ‘আশ্চর্য প্রোগ্রাম’ তৈরি করার কথা ভেবেছেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গবেষকেরা। প্রথমটি তৈরি করবে শিলচরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এনআইটি)। পরেরটির দায়িত্বে রয়েছেন গুয়াহাটি আইআইটি-র গবেষকেরা।
পিছিয়ে নেই কলকাতাও। ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের (আইএসআই) গবেষকেরা তৈরি করবেন ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের ক্ষেত্রে নতুন এক প্রযুক্তি। যার সাহায্যে উৎপাদনের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য অসুবিধার কথা আঁচ করা যাবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
সমাজ ও শিল্পক্ষেত্রের উপযোগী প্রযুক্তি তৈরিতে কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট-সহ দেশের পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা আইবিএম। বুধবার কলকাতায় একটি পাঁচতারা হোটেলে ওই সংস্থাগুলির হাতে শংসাপত্র তুলে দিলেন সংস্থার কান্ট্রি ম্যানেজার ভূষণ কেলকার। তিনি বলেন, “১৯৯৭ সাল থেকে ‘শেয়ার্ড ইউনিভার্সিটি রিসার্চ’ নামে এই প্রকল্প চলছে। দেশের নামী প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে সমাজের উন্নতি করার চেষ্টা করি।” শংসাপত্রের পাশাপাশি আর্থিক পুরস্কারও দেওয়া হবে প্রতিষ্ঠানগুলিকে।
সংস্থা জানিয়েছে, এর আগে দেশের একাধিক আইআইটি-সহ প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা হয়েছে। যার মধ্যে খড়্গপুরের আইআইটি-র ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির (ডায়াবেটিস থেকে রেটিনায় যে সংক্রমণ হয়। যার জেরে অন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।) কাজ বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। তাদের তৈরি একটি সফটওয়্যারে চোখের ছবি উঠবে, যার জেরে চোখের ভিতরে সংক্রমণ ও তার চরিত্র ধরা সম্ভব। এ বারেও এমন কিছু প্রকল্প তুলে ধরেছে দেশের গবেষণা সংস্থাগুলি। এনআইটি, আইআইটি বা আইএসআই তো রয়েইছে, দেশের ব্যাঙ্ক ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত করার জন্য নতুন প্রকল্পের কথা জানিয়েছে পঞ্জাবের পিইসি বিশ্ববিদ্যালয় ও হায়দরাবাদের ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপমেন্ট ও রিসার্চ ইন ব্যাঙ্কিং টেকনোলজির গবেষকেরা। পঞ্জাবের বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষিকা দিব্যা বনশল জানিয়েছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে অনলাইন লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে। এই অবস্থায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রত্যেক ব্যাঙ্ককে বিশেষ নির্দেশিকা দিয়েছে। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী এই নতুন সিস্টেমটি তৈরি করা হবে। যা দিয়ে ব্যাঙ্কগুলি লেনদেনকে সুরক্ষাকবচে মোড়ার পাশাপাশি নিজেদের তথ্যভাণ্ডারকেও নিরাপদ রাখতে পারবে। সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক কালে ব্যাঙ্কে লাগাতার হ্যাকার হানার দিক দিয়ে এই প্রকল্প খুবই উপযোগী। |