|
|
|
|
|
দু’টি সরকারি চাকরির পরীক্ষা |
ডব্লিউবিসিএস কিংবা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা দিতে দ্রুত
আবেদনপত্র জমা দিন। পরীক্ষা দুটি সম্পর্কে জানাচ্ছেন কৌলিক ঘোষ। |
আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দফতরে আধিকারিক নিয়োগের পরীক্ষা ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসেস (ডব্লিউবিসিএস)-এ। পাশাপাশি, বিভিন্ন জেলার সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত/স্পনসর্ড প্রাইমারি/জুনিয়র বেসিক স্কুলে সহ-শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার জন্য আবেদনপত্র জমার শেষ দিনও ৩০ তারিখ।
ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস-সহ রাজ্যের ১৯টি দফতরে আধিকারিক পদে নিয়োগ করা হয় ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে। পদগুলিকে গুরুত্ব অনুযায়ী মোট চারটি শ্রেণিতে ভাগ করে পরীক্ষা নেওয়া হয়।
• ‘এ’ গ্রুপে রয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস (এগ্জিকিউটিভ), কমার্শিয়াল ট্যাক্স সার্ভিস, এগ্রিকালচারাল ইনকাম ট্যাক্স, এক্সাইজ সার্ভিস, কো-অপারেটিভ সার্ভিস, লেবার সার্ভিস, ফুড অ্যান্ড সাপ্লাইজ সার্ভিস, এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিস, রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড স্ট্যাম্প রেভিনিউ সার্ভিস।
• গ্রুপ ‘বি’-তে রয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ সার্ভিস।
• গ্রুপ ‘সি’-তে রয়েছে জয়েন্ট ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার, ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অফ কনজিউমার অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ফেয়ার বিজনেস প্র্যাক্টিসেস, জুনিয়র সোশ্যাল ওয়েল ফেয়ার সার্ভিস সাব-অর্ডিনেট ল্যান্ড রেভিনিউ সার্ভিস, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যানাল রেভিনিউ অফিসার, চিফ কন্ট্রোলার অফ কারেকশনাল সার্ভিসেস।
• ‘ডি’ গ্রুপে আছে ইনস্পেকটর অফ কো অপারেটিভ সোসাইটিজ, পঞ্চায়েত ডেভেলপমেন্ট অফিসার, রিহ্যাবিলিটেশন অফিসার।
যোগ্য কারা: ডব্লিউবিসিএস দিতে গেলে যে কোনও বিষয় সাম্মানিক (অনার্স) বা সাধারণ (পাস) স্নাতক হতে হয়। বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে। ২০১২-র পরীক্ষায় তাঁরাই বসতে পারবেন, যাঁদের জন্ম ১৯৮১-র ২ জানুয়ারির পর এবং ১ জানুয়ারি ১৯৯২-এর আগে। তবে পুলিশ সার্ভিস-এর ক্ষেত্রে বয়স হতে হবে ২০ বছর। সব ক্ষেত্রেই তফসিলি জাতি-উপজাতিরা পাঁচ বছরের ছাড় ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্তরা তিন বছরের ছাড় পান। |
|
পরীক্ষার ধরন: পরীক্ষার তিন ভাগ। দুটি লিখিত। আর তার পরে ইন্টারভিউ।
লিখিত পরীক্ষায় প্রথমে হয় প্রিলিমিনারি। যেটি সম্ভবত মার্চ নাগাদ হবে। অবজেক্টিভ পরীক্ষা। আড়াই ঘণ্টায় এক নম্বরের ২০০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। বিষয় ইংরেজি কম্পোজিশন, সাধারণ বিজ্ঞান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দুনিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাবলি, ভারতের ইতিহাস, ভূগোল (বেশি গুরুত্ব পশ্চিমবঙ্গে), ভারতের রাজনীতি ও অর্থনীতি, ভারতের জাতীয় সংগ্রাম এবং জেনারেল মেন্টাল এবিলিটি। প্রত্যেকটি বিষয় থেকে ২৫ নম্বর করে প্রশ্ন থাকে।
‘প্রিলিমিনারি’ পরীক্ষা পেরোতে পারলে বসা যায় ‘মেন’ পরীক্ষায়। তবে প্রিলিমিনারির নম্বর মেন-এর নম্বরের সঙ্গে যোগ হয় না।
মেন পরীক্ষায় পাঁচটি আবশ্যিক পত্র। আর ‘এ’ এবং ‘বি’ গ্রুপের জন্য দুটি ঐচ্ছিক বিষয় এবং ‘সি’ এবং ‘ডি’ গ্রুপের জন্য একটি ঐচ্ছিক বিষয় বাছতে হয়। ঐচ্ছিক বিষয়ে এক একটি পত্রে বরাদ্দ ২০০ নম্বর। আবশ্যিক বিষয়ের পাঁচটি পত্র হল বাংলা/হিন্দি, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান ও সাম্প্রতিক বিষয়াবলি, ভারতের সংবিধান ও পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, পাটিগণিত ও রিজনিং। প্রতিটি পত্রে ১০০ নম্বর অর্থাৎ মোট ৫০০ নম্বর। অন্য দিকে, মোট ৩৬টি বিষয়ের মধ্যে থেকে ঐচ্ছিক হিসেবে বাছতে হয়।
লিখিত পরীক্ষায় সফল হতে গেলে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এই প্রসঙ্গে জর্জ স্কুল অফ কম্পিটেটিভ এগ্জামিনেশনের অভিজিৎ কুণ্ডুর পরামর্শ
(১) একই সঙ্গে প্রিলিমিনারি ও মেন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিন। যাঁরা ভাবেন, প্রথম পর্বটি পেরলে মেন-এর প্রস্তুতি শুরু করব, তাঁরা ভুল। দুটি পরীক্ষার মাঝখানে বেশি সময় থাকে না। ফলে অতটুকু সময়ে মেন-এর জন্য তৈরি হওয়া অসম্ভব।
(২) মেন পরীক্ষার ঐচ্ছিক বিষয় বাছার ক্ষেত্রে সতর্ক হোন। স্নাতকে পড়েছেন এমন বিষয়ই যে বাছতে হবে, তার কোনও মানে নেই।
(৩) যে বিষয় সহজে, কম সময়ের মধ্যে পড়ে আয়ত্তে আনা যায়, সেটিই বাছুন।
মেন-এ সফল হলে পার্সোনালিটি টেস্ট বা ইন্টারভিউ। ‘এ’ ‘বি’ এবং ‘সি’ গ্রুপের জন্য বরাদ্দ ২০০ নম্বর। ‘বি’ গ্রুপের জন্য ১০০ নম্বর। মেন ও পার্সোনালিটি টেস্টের নম্বরের ভিত্তিতে চূড়ান্ত মেধা তালিকা তৈরি হয়॥
মনের রাখার বিষয়: ৩০ তারিখের মধ্যে আবেদনপত্র ২১০ টাকার ইন্ডিয়ার পোস্টাল অর্ডার সমেত পাঠাতে হবে ১৬১-এ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রোডে পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের দফতরে। দেখুন www.pscwb.org.in ওয়েবসাইট। |
রাজ্য সিভিল সার্ভিস |
• প্রিলিমিনারিতে পাশ করলে মেন-এ বসতে পারবেন। তবে নম্বর যোগ হবে না।
• ডব্লিউবিসিএস-এর প্রিলিমিনারি ও মেন পরীক্ষার জন্য একই সঙ্গে তৈরি হোন।
• মেন পরীক্ষায় এমন ঐচ্ছিক বিষয় বাছুন, যা কম পড়ে সহজে আয়ত্তে আসবে। তা স্নাতকে পড়ে আসা বিষয় না-ও হতে পারে।
• মেন এবং ইন্টারভিউয়ের নম্বরের ভিত্তিতে তৈরি হবে চূড়ান্ত তালিকা। |
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ |
• টেট-এ ৬০% পেলে ইন্টারভিউ।
• প্রথম থেকেই খুব পরিকল্পনা করে পড়াশোনা করুন।
• নিয়মিত মক টেস্ট দিন। |
|
ছোটদের পড়াতে চান যাঁরা
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য রাজ্য যে পরীক্ষাটি নেয়, সেটি হল টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট (টেট)। পরীক্ষার সম্ভাব্য দিন ডিসেম্বরের শেষাশেষি।
যোগ্য কারা: ৫০% নম্বর নিয়ে ১০+২ পাশ করলে বসা যায়। দু’বছরের ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টরি এডুকেশন থাকলে ভাল, না-থাকলেও অসুবিধা নেই। তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি, অনগ্রসর শ্রেণি, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ৪৫% থাকলেই চলবে। বয়স হতে হবে ১৮-৪০ বছর।
পরীক্ষার ধরন: লিখিত পরীক্ষা টেট-এ ন্যূনতম ৬০% নম্বর পেলে ডাকা হয় ইন্টারভিউয়ে।
১০০ নম্বরের অবজেকটিভ ধরনের টেট-এর পাঁচটি ভাগ। চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট, প্রথম ভাষা (যে ভাষায় স্কুলে পড়াবেন), দ্বিতীয় ভাষা (ইংরেজি), গণিত এবং পরিবেশ বিজ্ঞান। প্রতিটিতে ২০ নম্বর।
টেট প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আইআইজিএস-এর বেণীমাধব সরকার জানিয়েছেন খুব পরিকল্পনামাফিক পড়াশোনা করতে হবে। সড়গড় হতে নিয়মিত ‘মক টেস্ট’ দিতে হবে।
মনে রাখার বিষয়: এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই আবেদনপত্র তুলতে এবং জমা দিতে হবে। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই তারিখ সম্পর্কে ভিন্ন তথ্য দেওয়ার দরুন কিছু ধন্ধ তৈরি হয়েছে। তাই নজর রাখুন ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অফ প্রাইমারি এডুকেশনের www.wbbpe.org ওয়েবসাইটে এবং সংবাদপত্রের বিজ্ঞপ্তির দিকে। আবেদনপত্র মিলছে কলকাতা-সহ জেলাগুলির বিভিন্ন ব্যাঙ্কে। পরীক্ষার দিন এখনও সরকারি ভাবে জানানো হয়নি। এর জন্যও ওয়েবসাইটটিতে চোখ রাখবেন। |
|
আপনার প্রশ্ন
বিশেষজ্ঞের উত্তর |
|
|
|
প্রশ্ন: রসায়নে অনার্স। স্নাতকোত্তরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সে (বেঙ্গালুরু) পড়তে চাই। আইআইটি এবং আইআইএসসি-তে ভর্তির জন্য একটিই পরীক্ষা হয়, না আলাদা? এই সব প্রবেশিকা দেওয়ার জন্য স্নাতকে কত নম্বর চাওয়া হয়? পরীক্ষাগুলির পুরনো প্রশ্ন কোথায় পাব?
প্রশান্ত মিশ্র, চন্দ্রকোণা টাউন
উত্তর: দেশের আটটি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আই আই টি) এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সে (আইআইএসসি) স্নাতকোত্তরে ভর্তির জন্য আলাদা আলাদা পরীক্ষা দিতে হয়। রসায়নে অনার্স পড়ার পর আইআইটি-গুলিতে এম এসসি পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। এর জন্য দিতে হয় জ্যাম অর্থাৎ জয়েন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট ফর এম এসসি। প্রসঙ্গত, শুধু রসায়নে এম এসসি-ই নয়, মুম্বই আইআইটি-তে পড়ানো হয় আরও দু’টি পাঠ্যক্রম জয়েন্ট এম এসসি-পিএইচডি প্রোগ্রাম ইন কেমিস্ট্রি এবং এম এসসি-পি এইচ ডি ডুয়াল-ডিগ্রি প্রোগ্রাম ইন কেমিস্ট্রি। |
|
জ্যাম পরীক্ষাটি দেওয়ার জন্য স্নাতক স্তরে ৫৫% নম্বর প্রয়োজন। (তফসিলি জাতি এবং উপজাতিদের ক্ষেত্রে ৫০% পেলেই চলে)। প্রসঙ্গত জ্যাম পরীক্ষা নেওয়া হয় প্রত্যেক বছর ফেব্রুয়ারি নাগাদ। তিন ঘণ্টার পরীক্ষা।
অন্য দিকে, আইআইএসসি-তে রসায়নে এম এসসি পাঠ্যক্রম চালু নেই। বেঙ্গালুরুর এই প্রতিষ্ঠানটিতে পড়ানো হয় ইন্টিগ্রেটেড পি এইচ ডি প্রোগ্রাম ইন কেমিক্যাল সায়েন্স। স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে পাশ করাটা এ ক্ষেত্রে জরুরি। লিখিত পরীক্ষায় পাশ করলে ইন্টারভিউ হয়।
আর, আইআইটি এবং আই আই এসসি-র প্রবেশিকা পরীক্ষার পুরনো বছরের প্রশ্নগুলি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে দেওয়া থাকে। |
|
|
|
|
|