|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
আর কবে সাবালক হইব? |
বইপোকা |
‘দল বাড়াও, দল বাড়াও, দল বাড়ালেই বল বাড়ে।’ ‘মানিক’ ছবিতে পকেটমারদের ক্লাসে আসিয়া তাহাদের নেতা চরিত্রে শম্ভু মিত্র কার্যকর এই উপদেশটি দিয়াছিলেন। বঙ্গসাহিত্যের মননবিশ্বেও যে তাহা এমন অক্ষরে অক্ষরে পালিত হইবে তাহা কে জানিত? ‘আমি’ শব্দটি সে বিশ্বে যেন ব্রাত্য। অধিকাংশ আলোচক প্রায় কখনও ‘আমার মনে হয়’ কিংবা ‘আমি মনে করি’ বলেন বা লেখেন না। তেমন লিখিলে পরীক্ষক নাকি ক্ষুব্ধ হন, ভাবেন তুমি কে হে ছোকরা মনে করিবার! অভ্যাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হইয়াও আলোচক বঙ্গসন্তান ছাড়িতে পারেন না। এই প্রবণতাকে নিছক বিনয় ভাবিলে ভুল হইবে। নিজের পায়ে দাঁড়াইয়া ভাবিবার শক্তি যে বহু কালের ‘প্র্যাকটিস’-এর অভাবে পঙ্গু হইয়া যাইতেছে ইহা তাহারই প্রমাণ। সে কারণেই গিরিশ করনাড যখন নাট্যকার রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে নিজস্ব কিছু মতামত দেন তখন তাহার প্রতিবাদের একটা যুক্তি হইয়া উঠে, রবীন্দ্রনাথের নাটক সম্পর্কে অমুক মহান সমালোচক তমুক বলিয়াছেন, আর উনি কি না...। ইহা গভীর দুঃখের। অবশ্য ইহার বাহিরেও একদল নবীনের আলোচনা আছে যাহার প্রায় সকলই অন্যের মতামত ‘আমাদের’ বলিয়া চালাইয়া দেওয়া। গ্রাম উজাড় হইবার আশঙ্কা আছে, সুতরাং একটি ক্ষুদ্র দৃষ্টান্ত দিয়াই ক্ষান্ত হইব। অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়ের বাংলা নাটকে রবীন্দ্রনাথ, গণনাট্য ও শম্ভু মিত্র (রত্নাবলী) গ্রন্থের ছত্রে ছত্রে শঙ্খ ঘোষের কালের মাত্রা ও রবীন্দ্রনাটক গ্রন্থে প্রকাশিত ভাবনার স্বীকৃতিহীন আক্ষরিক প্রকাশ। অথচ সকলই ‘আমরা’ আর ‘আমাদের’-এর পক্ষপুটে আশ্রিত। বাংলা সমালোচনার তারুণ্য এই বহুবচনের ছত্রচ্ছায়াটি ছাড়িয়া সাবালক হইবে কবে? |
|
|
|
|
|