বনাঞ্চল এক্সপ্রেসের (হাটিয়া-নয়াদিল্লি) ধাক্কায় কাটা পড়া দুই বালিকার দেহ মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করল পুলিশ। বুধবার বিকেলে কোটশিলা-মুরি শাখার রেললাইনে ওই ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায় কোটশিলার কানুডি গ্রামের বাসিন্দা প্রিয়া কুমার (১০) ও পূজা কুমার (৯)। সম্পর্কে তারা মামাতো-পিসতুতো বোন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার দুই বোন স্কুল ছুটির পরে ওই রেললাইন পেরিয়ে বাড়ি ফিরছিল। হাটিয়ার দিক থেকে আসা বনাঞ্চল এক্সপ্রেসের ধাক্কায় দু’জনেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ রেলপুলিশ বা রাজ্য পুলিশ না আসায়, রাতে গ্রামের লোকজনই মৃতদেহ তুলে মাটির নীচে পুঁতে ফেলেন। স্থানীয় রীতি অনুসারে অপঘাতে বা দুর্ঘটনায় অপ্রাপ্তবয়স্ক কারও মৃত্যু হলে মাটির নীচে পুঁতে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার জয়পুরের বিডিও মেঘনা পালের উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে দু’টি দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ওই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে।” |
দুই বালিকার দাদু সত্যবান কুমার বৃহস্পতিবার বলেন, “ওরা যখন লাইন পার হচ্ছিল, তখন ডাউন লাইন দিয়ে খড়গপুর-হাটিয়া যাচ্ছিল। সেই ট্রেন বেরিয়ে যাওয়ার পরে ওরা লাইনে পা দেয়। উল্টো দিক থেকে যে বনাঞ্চল এক্সপ্রেস আসছে, ওরা বুঝতেই পারেনি। লাইনের পাথর ডিঙিয়ে পেরনো খুব অসুবিধার।” স্থানীয় বাসিন্দা নির্মল কুমারের কথায়, “লাইনের এক দিকে আমাদের গ্রাম। গ্রামের মানুষের কাজকর্ম সবই লাইনের ও-পারে। ব্লক সদর কোটশিলা অথবা বামনিয়া কিংবা আদারডির স্কুল, বাজার-হাট, বাসস্ট্যান্ড সবই ও-পারে। রোজই লোকজনকে লাইন পেরিয়ে সেখানে যেতে হয়। অথচ যাতায়াতের রাস্তায় সিমেন্টের স্ল্যাব বা চেকরেল নেই। যেমন লেভেল-ক্রসিংয়ে থাকে। আমরা এলাকায় পরিদর্শনে আসা রেলের এক পদস্থ কর্তার কাছে এই দাবি করেছিলাম। তা পূরণ হয়নি।” পূজা ও প্রিয়ার স্কুলেরই পড়ুয়া জয়গুরু কুমার, বিভীষণ কুমাররা বলে, “কী আর করব, এ ভাবেই পার হতে হয়। এ ছাড়া রাস্তা কোথায়?”
রাঁচির ডিআরএম গজানন মালিয়া বলেন, “ওখানে প্রহরী বিহীন লেভেল-ক্রসিং করা যাবে না। কারণ রেল ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০১৫ সালের মধ্যে প্রহরী-বিহীন লেভেল-ক্রসিং তুলে দেওয়ার।” সিমন্টের স্ল্যাব দিয়ে যাতায়াতের রাস্তা করা যায় কি না, তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ডিআরএম। |