রাজ্য পরিবেশ দফতরের নির্দেশ পাওয়ার প্রায় দু’মাস পরে শহরকে হোর্ডিং মুক্ত করতে উদ্যোগী হল বাঁকুড়া পুরসভা। পুরপ্রধান শম্পা দরিপার নেতৃত্বে মঙ্গলবার সকালে বাঁকুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র মাচানতলার মোড়ের বেশ কিছু হোর্ডিং পুরসভার কর্মীদের খুলে দিতে দেখা গিয়েছে। যদিও পুরপ্রধানের এই উদ্যোগকে ‘দেখনদারি’ বলে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, শহরকে হোর্ডিং মুক্ত করা নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরে আসার খবর পেয়েই তড়িঘড়ি পুরপ্রধান হোর্ডিং সরাতে উদ্যোগী হয়েছেন। |
দৃশ্যদূষণ এড়াতে পুরসভা এলাকার ঐতিহাসিক ভবন, সরকারি ভবন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষাকেন্দ্র, গাছপালা ও উদ্যান এলাকায় বিজ্ঞাপন বা হোর্ডিং দেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য পরিবেশ দফতর। গত সেপ্টেম্বরেই বাঁকুড়া পুরসভায় এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে ওই দফতর থেকে। ঘটনা হল, বাঁকুড়া শহর জুড়েই বেআইনি হোর্ডিং-এর দাপাদাপি। বাঁকুড়া পুরসভার রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ১৬৩টি হোর্ডিং রয়েছে। যেগুলির মধ্যে প্রায় ৪০টি পুরোপুরি বেআইনি ভাবে পুরসভার অনুমতি ছাড়াই লাগানো হয়েছে।
নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে শহরের নানা এলাকায় গাছেও পেরেক মেরে বিজ্ঞাপনের বোর্ড লাগানো হয়েছে। জেলা আদালত ও হাসপাতাল চত্বর এলাকার গাছগুলিতে এই দৃশ্য বেশি চোখে পড়ে। আবার বহু এলাকায় রাস্তার ধারের গাছেও এ ভাবে বিজ্ঞাপনের বোর্ড আটকানো হয়েছে। |
বাঁকুড়া পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী তথা ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর শিউলি মিদ্যা বলেন, “পুরপ্রধান থাকাকালীন শহরকে হোর্ডিং মুক্ত করার বিষয়টি আমি একাধিকবার বোর্ড মিটিং-এ বলেছি। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী আসছেন শুনে তড়িঘড়ি সাময়িক ভাবে শহরের একাংশের বিজ্ঞাপন ও হোর্ডিং খোলা হচ্ছে।” পুরপ্রধান শম্পা দরিপা বলেন, “অনাস্থার কারণে মাসচারেক পুরসভা একেবারে অচল হয়ে পড়ে ছিল। আমি সবে পুরপ্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেছি। এই জন্য হোর্ডিং সরানোর কাজও শুরু হয়নি।” তাঁর বক্তব্য, “রাজ্য পরিবেশ দফতরের নির্দেশ মতোই হোর্ডিং সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। শহরের কোনও এলাকাতেই বেআইনি হোর্ডিং বা বিজ্ঞাপন রাখা হবে না।”
পুরপ্রধানের আশ্বাস কতটা ফলপ্রসূ হয়, সেটাই এখন দেখার।
|