সাত বছরের ছেলে সাহেবকে খুঁজে পাচ্ছেন না তার মা সায়রা বিবি। অগ্নিদগ্ধ ঝুপড়ির ছাই সরিয়ে পাগলের মতো ছেলেকে খুঁজে চলেছেন তিনি। একই অবস্থা ষোলো বিঘা বস্তির আরও তিনটি পরিবারের। খোঁজ মেলেনি তাঁদের বাড়ির শিশুদেরও। ঘটনাস্থল মহেশতলা পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রা-সন্তোষপুর রোডের অগ্নিদগ্ধ বস্তি। মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ আগুন লেগে যেখানকার প্রায় ৮০টি ঝুপড়ি ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে বলে দমকল জানিয়েছে।
দমকল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পরে অবশ্য একটি ঝুপড়ি থেকে বার করা হয়েছে এক অগ্নিদগ্ধ শিশুর দেহ। কিন্তু সেই শিশুটির পরিচয় উদ্ধার করতে পারেননি এলাকার বসিন্দারা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, দেহটি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিনের আগুনে পুড়ে হাসপাতালে ভর্তি দুই মহিলা-সহ পাঁচ জন। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকায় পাশাপাশি দু’টি বস্তি রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন বস্তির একটি ঝুপড়িতে রান্না করার সময়ে উনুন থেকে আগুন লাগে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায় একটি বস্তি। পুলিশ জানায়, বেশির ভাগ ঝুপড়িই ছিল হোগলা ও প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। দমকলবাহিনী ঘণ্টা দু’য়েকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিদগ্ধ ঝুপড়ির বাসিন্দাদের আপাতত এলাকারই একটি মাঠে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করে রাখা হয়েছে।
পরে মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান দুলাল দাস ঘটনাস্থলে এলে বস্তির বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বস্তি উন্নয়নে পুরসভার কোনও নজরদারি নেই। দুলালবাবু বলেন, “ওই বস্তি উন্নয়নের প্রক্রিয়া বছরখানেক আগেই শুরু হয়েছে। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু সমস্যা আছে। তাই উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। তবে শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”
রেললাইন সংলগ্ন ওই বস্তিতে আগুন লাগার জেরে দুপুরের পর থেকে শিয়ালদহ (দক্ষিণ) বজবজ শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ট্রেন চলাচল শুরু হয় বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। |