তৃণমূল নেতাকে ঘুষি মারার অভিযোগে ধৃত সিপিএম নেতা তথা রায়নার নাড়ুগ্রাম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মফিজুর রহমানকে আগামী ২২ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিল সিজেএম আদালত। তবে তাঁকে মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি।
সোমবার সকালে সিপিএমের রায়না জোনাল কমিটির সদস্য মফিজুর রহমানের সঙ্গে বচসা বাধে এলাকার তৃণমূল নেতা বাপ্পা চন্দ ও তাঁর দলবলের। সিপিএম নেতা উত্তেজিত হয়ে বাপ্পাকে ঘুষি মারেন, এই অভিযোগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু ওই সময়েই বাপ্পার নেতৃত্বে তৃণমূলের লোকজন প্রধান শিক্ষককে মাটিতে ফেলে মারে বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্ধমান জেলা পরিষদের সিপিএম সভাধিপতি উদয় সরকার বাঁচাতে গেলে উত্তেজিত জনতা তাঁর উপরেও চড়াও হয়। |
উদয়বাবুকে বাঁচাতে রিভলভার বের করে হুঁশিয়ারি দেওয়ায় তাঁর দেহরক্ষী, জেলা পুলিশের কনস্টেবল মধুসূদন ঘোষকে আগেই পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছিল। এ দিন পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। দুপুরে ওই কনস্টেবলকে জেরা করার পরে তিনি বলেন, “যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির দেহরক্ষীর উচিত, ঝামেলার সময়ে প্রথম সুযোগেই তাঁকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া। এমন কোনও কাজ করা উচিত নয়, যাতে আইনশৃঙ্খলা বিপন্ন হতে পারে। কিন্তু উনি সেটাই করেছেন। কর্তব্যে গাফিলতির কারণে ওঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।”
উদয়বাবুকে ইতিমধ্যেই নতুন দেহরক্ষী দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি তাতে নারাজ। সিপিএম নেতার বক্তব্য, “আমি নতুন দেহরক্ষীকে বলেছি, আপনি তো আমাকে বাঁচাতে আর পিস্তল বের করতে পারবেন না? একজন তা করে সাজা পেয়েছেন। তা হলে দেহরক্ষী থেকে লাভ কী?” মধুসূদনবাবুকেই দেহরক্ষী চেয়ে পুলিশ সুপারকে চিঠিও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু পুলিশ সুপারের বক্তব্য, “যে কনস্টেবল নিজের ভূমিকা কী হবে তা জানেন না, রিভলবার বের করে ভিড়ের মধ্যে গুলি চালানোর ভয় দেখান, তাঁকে ভিআইপি-র দেহরক্ষী রাখা সম্ভব নয়।”
এ দিন দুপুরে রায়না থানার পুলিশ মফিজুর রহমানকে সিজেএম আদালতে হাজির করে। বিচারক ইয়াসমিন আহমেদ তাঁকে জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ২৩ নভেম্বর তাঁর চোট-আঘাতের রিপোর্ট এবং কেস ডায়েরি পেশ করতেও পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার সন্ধ্যাতেই তৃণমূলের লোকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, “আমরা ওই অভিযোগ খতিয়ে দেখছি। প্রাথমিক তদন্তে যদি ঘটনার সত্যতা মেলে, অবশ্যই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হবে।” |