মাতৃগর্ভে থাকা ১৭ সপ্তাহের শিশুটি মারা যাচ্ছে, বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে গোটা দেহে, মাকে বাঁচাতে অবিলম্বে গর্ভপাত প্রয়োজন। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটাই কথা, “গর্ভপাত হবে না। এটা আয়ার্ল্যান্ড, ক্যাথলিক দেশ!” কিন্তু যে মায়ের প্রাণ বাঁচাতে চিকিৎসা, তিনি আইরিশও নন, ক্যাথলিক তো ননই। তাঁর গর্ভপাত কেন করা হবে না? চিকিৎসকেরা কোনও যুক্তি শুনতে নারাজ। তাঁদের সাফ কথা, গর্ভস্থ সন্তানের হৃদস্পন্দন যত ক্ষণ শোনা যাচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁরা কিছুতেই গর্ভপাত করবেন না। কারণ ক্যাথলিক ধর্মে ভ্রুণ হত্যা পাপ। আয়ার্ল্যান্ডের গ্যালওয়ে ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে শেষ পর্যন্ত মারাই গেলেন ৩১ বছরের সবিতা হালাপ্পানাভার। ৩১ বছরের এই ভারতীয় এ দেশে এসেছিলেন দাঁতের ডাক্তারি করতে। আইরিশ সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশের পরে হইচই শুরু হয়েছে। আয়ার্ল্যান্ড সরকার প্রশাসনিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু স্ত্রীর এ ভাবে মৃত্যুকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না গ্যালওয়ের বস্টন সাইন্টিফিকের ইঞ্জিনিয়ার প্রবীণ। স্বামীর আক্ষেপ, নিজে চিকিৎসক হওয়ায় তিনি যে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছেন, বুঝতে পারছিলেন সবিতা। নিজেও ডাক্তারদের কাছে আকুল আবেদন করেছিলেন, সন্তানের বাঁচার যখন কোনও আশা নেই গর্ভপাত করে দিন। কিন্তু ধর্মান্ধ ডাক্তারদের মন তাতে গলেনি। প্রবীণের অভিযোগ, ভ্রুণ হত্যা না করে ধর্ম রক্ষার ব্যাপারে ডাক্তাররা যতটা তৎপর ছিলেন, তার কিছুটা যদি তাঁরা মায়ের প্রাণ রক্ষার ক্ষেত্রে দেখাতেন, সবিতা মারা যেতেন না। গত মাসের ২৮ তারিখে সবিতা মারা গিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনও গাফিলতি মানতে নারাজ। তবে সংবাদমাধ্যম বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরে তাঁরাও একটা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
|