শহর পরিচ্ছন্ন রাখার প্রয়াস পুর-বাসিন্দার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বালুরঘাট |
বালুরঘাট শহর জুড়ে এক ব্যক্তি আবার্জনা ফেলার জন্য রাস্তায় সিমেন্টের রিং বসানোর ঘটনায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে। পুরসভার অনুমতি না নিয়ে রঘুনাথপুর ট্যাঙ্ক মোড় এলাকার বাসিন্দা দুলালকান্তি ঘোষ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ডাস্টবিন হিসাবে ওই রিং বসিয়েছেন বলে অভিযোগ। বুধবার শহরের অধিকাংশ রাস্তার পাশে ওই রিং দেখে পথচারি থেকে ব্যবসায়ীরা কার্যত অবাক হয়ে যান। রাস্তার ধারে বাড়ি, হোটেল ও অফিসের সামনে ইতিমধ্যে ৫৪ টি সিমেন্টের রিং বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টিতে পুর কর্তৃপক্ষের নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারপার্সন সুচেতা বিশ্বাস বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। ওই ব্যক্তি এসব করার আগে আলোচনা করতে পারতেন। তাকে পুরসভায় ডাকা হচ্ছে।” দুলালবাবুর অবশ্য সাফ জবাব, “নাগরিক হিসাবে শহর পরিচ্ছন্ন রাখতেই আমার এই প্রয়াস। জনগণের স্বার্থে এটা করেছি। এরজন্য পুরসভার অনুমতি চাই না। ইচ্ছা করলে পুর কর্তৃপক্ষ রিংগুলি ভেঙে আত্রেয়ী নদীর জলে ফেলে দিতে পারেন।” দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার পদ থেকে দুলালবাবু ২০০৫ সালে অবসর নেন। বালুরঘাটের বাসিন্দা হলেও ৬৮ বছরের দুলালবাবু কলকাতাতেই বেশি থাকেন। তিনি জানান, বিদেশ ঘুরে পরিচ্ছন্ন শহর দেখে আমার মনে হয়েছে কাজ ঘর থেকেই শুরু করতে হয়।” |
১০ দিন আগে দুলালাবাবু নিজের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তার ধারে ১০ টি রিং বসিয়ে দেন। রিং বসানো ও রং করার জন্য তিনি চুক্তিতে লোকও ঠিক করেন। প্রতিটি রিঙে রংও করা থাকছে। প্রতিটি রিঙে তাঁর দুই হাজার টাকা খরচও হয়েছে। তিনি বলেন, “রাস্তার পাশে থাকা রিংগুলির মধ্যে পথচারিরা নোংরা ফেললে রাস্তাঘাট অনেক পরিষ্কার থাকবে। পুরসভা রাস্তার মোড়গুলিকে আলোকিত করছে জঞ্জাল দেখানোর জন্য। এত নোংরা শহর দেখিনি।” দুলালবাবুর উদ্যোগকে ঘিরে অবশ্য বাসিন্দাদের মধ্যে নানা প্রশ্নও উঠেছে। অফিসপাড়ার ব্যবসায়ী সুনীল সরকার, সাধন ভৌমিকেরা বলেন, “আবর্জনা আমরা দোকানের পিছনে রাখি। বিকালে পুরসভার গাড়ি এসে তা নিয়ে যায়। এই রিং-র জন্য সমস্যা বাড়তে পারে। পুরসভা না বসানোয় কে এগুলিকে পরিষ্কার করবে তা জানি না।” কাছারি রোড, ত্রিধারা পাড়ার বাসিন্দা বিশু রায়, রমেন মণ্ডল বলেন, “রিংগুলি থেকে আবর্জনা তুলতে সমস্যা হতে পারে। এতদিন ধরে রিংগুলি বিভিন্ন এলাকায় বসানো হল আর পুরসভা দেখল না, এটা কেমন বিষয়।” বাসিন্দারা জানান, ইতিমধ্যে রিংগুলিতে ফেলা পচা ফল, সবজির পাতা খেতে গরুর দল ভিড় করতে শুরু করেছে। আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়ানোর আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। বালুরঘাটের সদর মহকুমাশাসক প্রতিমা দাস বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। পুরসভাকে ব্যবস্থা নিতে বলছি।” |