অবসরের লগ্নি

বসরের পর দুটি জিনিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুস্থতা এবং সচ্ছলতা। মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা আবার নির্ভর করে আপনি কতটা সচ্ছল তার উপর। অর্থাৎ অবসরের পর নিশ্চিত হতে হবে আয়। অবসরের আগেই জেনে যাবেন প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, ছুটি বিক্রি ইত্যাদি বাবদ কত টাকা পাবেন। স্বনির্ভর মানুষেরা জানেন, তাঁদের তহবিলের অঙ্ক। তাই অঙ্ক কষা শুরু করুন আগে থেকেই। পরিকল্পনা ছকা থাকলে টাকা হাতে আসার পর পরামর্শের জন্য ছোটাছুটি করতে হয় না।
এ বার করে ফেলুন একটি খরচের তালিকা। দেখবেন, যেন কিছু বাদ না যায়। মাথায় রাখুন দাম বাড়ার ভাবনা। অজানা খরচের ব্যবস্থাও যেন থাকে। এটি তৈরি হয়ে গেলে আপনি জেনে যাচ্ছেন কতটা আয় প্রয়োজন। তহবিলের আকার দেখে অনুমান করতে পারবেন বাজারে চালু সুদে তা থেকে কী আয় হতে পারে। সম্ভাব্য আয় পর্যাপ্ত মনে না-হলে বাজেটকে কাটছাঁট করতে হবে। উল্টোটাও করা যায়। অর্থাৎ সম্ভাব্য আয় দেখে বাজেট তৈরি করা। বোঝার সুবিধার জন্য সঙ্গে দেওয়া হল অবসর নিতে যাচ্ছেন এমন এক চাকরিজীবীর কাল্পনিক বাজেট।

যা করা বাঞ্ছনীয়
• অবসরের পর লগ্নি করুন শুধু মাত্র ১০০% সুরক্ষিত প্রকল্পে।
• সঞ্চয়ের অভ্যাস বজায় রাখুন। তা মূল্যবৃদ্ধি সামাল দিতে সাহায্য করবে।
• কর সাশ্রয়কারী প্রকল্পে লগ্নি করুন। অর্থ রাখতে পারেন করমুক্ত বন্ডেও।
• ব্যাঙ্কে সুদ বেশি থাকলে দীর্ঘ মেয়াদে টাকা রাখুন। করদাতারা ভাবতে পারেন মিউচুয়াল ফান্ডের এফএমপি প্রকল্পের কথা।
• ব্যাঙ্কে স্থায়ী আমানতে টাকা রাখলে নানা মূল্যের একাধিক সার্টিফিকেট নিন। মেয়াদ শেষের আগে প্রয়োজনে একটি-দুটি ভাঙান। পুরোটা ভাঙাবেন না।

যা এড়িয়ে চলতে হবে
• ঝুঁকিপূর্ণ অজানা-অচেনা প্রকল্প যতই আকর্ষণীয় দেখাক, তা এড়িয়ে চলুন।
• ঝোঁকের মাথায় এমন কোনও ব্যবসায় নামবেন না, যা আপনি বোঝেন না।
• পিপিএফ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করবেন না। বাৎসরিক সুদ তুলে নিতে বা প্রয়োজনে টাকা জমাতে পারেন কর বাঁচানোর জন্য।
• শুধুমাত্র এজেন্ট এবং ব্রোকারের কথায় লগ্নির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন না। ভাল মন্দ এবং নিজের প্রয়োজন বুঝে লগ্নি করুন।
• ‘তিন বছরে ডবল হবে’ এই ধরনের প্রতিশ্রুতিতে নির্ভর করে লগ্নি করবেন না। বাজারের তুলনায় যে-প্রকল্পে সুদের প্রতিশ্রুতি যত বেশি, তাতে ঝুঁকিও তত বেশি।

যা মাথায় রাখতে হবে
• প্রবীণ নাগরিকেরা অতিরিক্ত সুবিধা পাবেন আয়কর, ব্যাঙ্ক-সুদ ও রেল- ভ্রমণের ব্যাপারে (মহিলাদের ৫৮ বছর)।
• প্রবীণদের জন্য ২.৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত। ৫ লক্ষ পর্যন্ত কর দিতে হবে ১০% হারে। ১০ লক্ষ পর্যন্ত ২০% হারে।
• বাৎসরিক ব্যাঙ্ক-সুদ ১০,০০০ টাকা বা তার বেশি হলে ব্যাঙ্ক উৎসমূলে ১০% কর কাটে। প্যান দাখিল করা না-হলে কর কাটা হতে পারে ২০% হারে। করযোগ্য আয় না থাকলে সময়ে ১৫এইচ ফর্ম দাখিল করুন।
• সব রকম লগ্নি ও সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নমিনেশনের ব্যবস্থা রাখুন।
• লগ্নির তথ্য ডায়েরিতে লিখে রাখুন। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রাখুন লগ্নির কাগজ।
• রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তফসিলভুক্ত ব্যাঙ্কে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা ডিআইসিজিসি দ্বারা গ্যারান্টি প্রদত্ত। কিছু বেসরকারি ব্যাঙ্ক এখন সেভিংস অ্যাকাউন্টে ৭% পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিয়মিত খরচের টাকা সেখানে রাখা যেতে পারে।

যা ধরে নেওয়া হয়েছে
• সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রবীণ নাগরিক
• মোট বাৎসরিক আয় ৩,৬০,১৯২ টাকা
• ত্রৈমাসিক সুদকে মাসিকে রূপান্তরিত করা হয়েছে
• করমুক্ত বন্ডে রাখা ৫ লক্ষ টাকা থেকে প্রতি বছর ১ লক্ষ কর সাশ্রয়কারী প্রকল্পে লগ্নি
• ৮০ডি ধারায় বছরে মেডিক্লেম প্রিমিয়াম বাবদ কর সাশ্রয়
• ন্যূনতম সরকারি পেনশন ছাড়া অন্য কোনও পেনশন নেই
• অবসরের আগের সঞ্চয়কে হিসাবে ধরা হয়নি
• সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির গাড়ি থাকলে মাসিক খরচ বাড়বে
• গ্র্যাচুইটির ঊর্ধ্বসীমা ১০ লক্ষ টাকা হলেও এ ক্ষেত্রে ৭.৫ লক্ষ টাকা। কারণ অনেকেই সর্বোচ্চ গ্র্যাচুইটি পান না।

প্রাপ্তিযোগ (টাকা)
প্রভিডেন্ট ফান্ড ৩৩,০০,০০০
গ্র্যাচুইটি ৭,৫০,০০০
ছুটি বিক্রি ২,৫০,০০০
মোট প্রাপ্তি
৪৩,০০,০০০

মাসিক বাজেট (টাকা) ৩০,০০০
২,০০০;১,৫০০; ১৫,০০০;
১,৫০০; ১,৫০০; ২,০০০;
১,০০০; ১,০০০;১,৫০০;
১,০০০; ২,০০০


ডাকঘর মাসিক আয় প্রকল্প ৯,০০,০০০ ৮.৫% ৬,৩৭৫
সিনিয়র সিটিজেন প্রকল্প ১৫,০০,০০০ ৯.৩% ১১,৬২৫
এইচডিএফসি প্ল্যাটিনাম
মাসিক আয় প্রকল্প
৬,০০,০০০ ৯.৩% ৪,৬৫০
ব্যাঙ্ক ফিক্সড ডিপোজিট ৮,০০,০০০ ৯.২৫% ৬,১৬৬
সরকারি পেনশন

১,২০০
মোট ৩৮,০০,০০০
৩০,০১৬
করমুক্ত বন্ড ৫,০০,০০০ ৮.০০%

বাৎসরিক সুদ ৪০,০০০ টাকা যা সেভিংস অ্যাকাউন্টে আপৎকালীন খরচের জন্য জমবে।

লেখক ম্যাকলিওড রাসেল ইন্ডিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কোম্পানি সেক্রেটারি,
(মতামত ব্যক্তিগত)


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.