মায়ানমারে বিরোধী গণ আন্দোলনে ভারতের সমর্থন পাননি— মুক্তির পর এমন অভিযোগই করেছিলেন আউং সান সু চি।
আজ প্রায় সিকি শতাব্দী পর নয়াদিল্লিতে পা রেখে কিন্তু সেই হতাশা অনেকটাই কাটিয়ে উঠলেন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির প্রধান এই নেত্রী। সনিয়া গাঁধীর আমন্ত্রণে ভারতে এসে জওহরলাল নেহরু স্মারক বক্তৃতায় ভারত-বন্ধু হিসেবেই নিজেকে তুলে ধরেছেন সু চি। অন্য দিকে মায়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও সদর্থক বার্তা দিয়েছেন। আগামী বছর সে দেশে নির্বাচন হওয়ার কথা। সম্ভাব্য রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে নয়াদিল্লিও কোনও ঝুঁকি না নিয়ে মায়ানমার-নীতির প্রশ্নে ভারসাম্য বজায় রেখেই চলছে। |
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। নেহরুর জন্মদিনে নয়াদিল্লিতে সু চি। ছবি: পিটিআই |
গত কয়েক বছর ধরেই জুন্টা সরকারের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে সাউথ ব্লক। যে দেশে যারা প্রশাসনিক নেতৃত্বে থাকে, তাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত সাউথ ব্লক এটাই নয়াদিল্লির অবস্থান। কিন্তু মায়ানমারের ক্ষেত্রে এ বার বিরোধী দলনেত্রী সু চি-র সঙ্গেও সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে চাইছে নয়াদিল্লি। তাঁর সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, “আমাদের শুভেচ্ছা আপনার সঙ্গে রয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য আপনার সংগ্রামের প্রতিও আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। যে সাহস আপনি দেখিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়।”
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, নতুন করে মায়ানমার গড়ে তোলার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে মনমোহন এবং সু চি-র মধ্যে। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সামরিক নেতা থান শোয়ে
এবং সু চি দু’জনেরই প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে বিজ্ঞানভবনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সু চি বলেছেন, “ভারত আমাদের কাছ থেকে কতটা দূরে সরে গিয়েছে বা আমরা ভারতের সঙ্গে কতটা দূরত্ব তৈরি করেছি, এ সবের মধ্যে আজ আর আমি যেতে চাই না। শুধু চাই দু’দেশের মধ্যে যেন চিরস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সরকার আসবে যাবে। কিন্তু দু’দেশের মানুষের মধ্যে যোগসূত্র যেন দৃঢ় হয়।”
সনিয়া গাঁধীও বিজ্ঞান ভবনে তাঁর বক্তৃতায় উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন সু চি কে। বলেছেন, মায়ানমারের এই নেত্রীর স্থান ‘কোটি কোটি ভারতবাসীর হৃদয়ে’। সু চি-র বক্তৃতা শুনতে হাজির ছিলেন রাহুল গাঁধী, বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ, বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা, কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি প্রমুখ। |