কালীপুজোর রাতে জুয়া খেলার অভিযোগে বর্ধমানের এক ডজন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত হয়েছে লাখ দুয়েক টাকার ‘বোর্ড মানি’। বুধবারই অবশ্য বর্ধমান সিজেএম আদালত তাঁদের জামিনে ছেড়ে দিয়েছে।
দীপাবলির সময়ে জুয়া খেলার রেওয়াজ বহু জায়গাতেই চালু আছে। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ বর্ধমান শহরে চাল ব্যবসায়ীদের গদিতে হানা দেয়। প্রতি বছর সেখানে মোটা টাকার জুয়া খেলা হয় বলে পুলিশের কাছে খবর ছিল। ১২ জন ধরা পড়ে। এ ছাড়া, বিভিন্ন থানা অভিযান চালিয়ে মোট ৬৫ জনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানায়, চালের গদিতে যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁরা মূলত পরিবহণ ব্যবসায়ে যুক্ত। তাঁদের নাম উজ্জ্বল মণ্ডল, অশোক সাউ, চিরঞ্জিৎ সিংহ, জগজিৎ সিংহ, হরপ্রীত সিংহ, লক্ষ্মী সাউ, রঞ্জিত সিংহ, প্রমোদ অগ্রবাল, কিশোরকুমার সাউ, দ্বারকা প্রসাদ ও অমরবন্ধু সাহা। পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “প্রথম জনের বাড়ি রায়নার সেহারাবাজারে। বাকি ১১ জন বর্ধমানের বিভিন্ন প্রান্তে বাস করেন।” তাঁর দাবি, “ওই জায়গা থেকে মোট ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ২০ টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আটক করা হয়েছে মদের বোতল, গ্লাস, তাস ইত্যাদি।” |
জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরেই মোটা টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলার রেওয়াজ রয়েছে। পুলিশের কাছে খবর ছিল, কালীপুজোর রাতে ফের জুয়ার আসর বসবে। এসডিপিও-র নির্দেশে তাই পুলিশ ওখানে অভিযান চালায়। সে সময়ে যাতে পুলিশের বিরুদ্ধে ‘নিরীহ’ ব্যবসায়ীদের উপরে জুলুমের অভিযোগ না ওঠে তার জন্য গোটা অভিযানটির ভিডিও-ছবি তুলিয়ে রাখা হয়েছে।” মামলার চলাকালীন সেটি আদালতে পেশ করা হবে বলে পুলিশ জানায়।
এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) অম্লানকুসুম ঘোষের কথায়, “বিশেষ নির্দেশে অভিযান চালাতে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে টাকা ছড়িয়ে। পড়ে রয়েছে মদের গ্লাস, বোতল ইত্যাদি। সব গুছিয়ে বর্ধমান থানায় পৌঁছোতে আমাদের রাত ১টা বেজে যায়। ধৃতেরা অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁরা শুধু মদ্যপান করছিলেন। কিন্তু চারদিকে যে ভাবে প্রচুর টাকা ও তাস ছড়িয়ে ছিল, তাতে সেখানে জুয়া খেলারই প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে।”
ওই রাতেই বর্ধমান শহর ছাড়াও কাটোয়া, কালনা, কাঁকসা, মেমারি, আউশগ্রাম ইত্যাদি থানার বিভিন্ন জায়গায় জুয়ার আসরে হানা দিয়েছিল পুলিশ। তাতে আরও ৬৫ জন ধরা পড়েন। উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৯৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে কাঁকসার রণডিহা মোড় ও খাটাল এলাকা থেকে ১১ জন ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়েছেন। আটক হয়েছে ৬ হাজার ৭৩০ টাকা। কাটোয়ায় ৪৩ হাজার এবং কালনায় ৩০ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। |
বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |