অনেক দিন বাদে ভারতে একটা সিরিজ নিয়ে বেশ উৎসাহ দেখছি। সবাই ভারত-ইংল্যান্ড যুদ্ধের প্রথম বল পড়ার অপেক্ষায়! আসলে শেষ অস্ট্রেলিয়া সফরের পর ভারত তেমন বড় মাপের টেস্ট সিরিজ খেলেনি। আগামী চার মাসে সেটা সুদে-আসলে উসুল হওয়া উচিত। ভারত-ইংল্যান্ড ও ভারত-অস্ট্রেলিয়া, আটটা মারকাটারি টেস্ট ম্যাচ। টেস্ট ক্রিকেটের আসল স্বাদ তারিয়ে উপভোগ করা যাবে। একই সঙ্গে ভারতের এটা ভেবে খুশি হওয়া উচিত যে, সিরিজ দু’টো ঘরের মাঠে। যেখানে ভারতকে হারানো সব সময় ভীষণ কঠিন কাজ। আর এটাই দুই হাই প্রোফাইল সিরিজের আগে ভারতকে খানিকটা নিশ্চিন্ত করবে।
ভারতের সুবিধা হল, দলের প্রায় প্রত্যেকেই চার দিনের ম্যাচ খেলে টেস্টের মন্থর গতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। তবে সবার চোখ থাকবে সচিনের দিকে। সচিনকে যে রকম ফোকাসড দেখছি, তাতে মন বলছে, বড় সিরিজে জ্বলে ওঠার জন্য বড় প্লেয়ার তৈরি। ওকে আগেও যেটা করতে দেখেছি। তবে আগের তুলনায় সামনের আটটা টেস্ট সম্ভবত ওর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সচিন জানে, এই আট টেস্টে সমস্ত ফোকাস ওর উপর থাকবে। তবে দিন দুই আগে ব্রিসবেনে কালিসের ইনিংসটা থেকে ও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিতেই পারে! |
ভারতে আসা দলগুলোর মধ্যে আমার মতে সবথেকে শক্তিশালী ২০০১-এ স্টিভ ওয়ের অস্ট্রেলিয়া। ২০০৭-এর শেষ দিকে, ২০০৮ আর ২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকানরাও শক্তিশালী দল ছিল। কিন্তু স্টিভের দলের দাপট আর আগুন ওদের ছিল না। তবে আসন্ন দুই সিরিজের দু’টো দলকে যদি কাটাছেঁড়া করতে বলেন তা হলে সাফ বলছি, ফেব্রুয়ারিতে যে অস্ট্রেলিয়া আসবে তাদের তুলনায় ইংল্যান্ড অনেক শক্তিশালী। কুককে দেখে মনে হচ্ছে উপমহাদেশে ইংল্যান্ডের রেকর্ড ভাল করতে ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। অধিনায়ক হিসাবে এটাই ওর প্রথম টেস্ট সিরিজ। একটা বাড়তি উৎসাহ তো কাজ করছেই।
ইংল্যান্ড কিন্তু এই সিরিজের জন্য জবরদস্ত প্রস্তুতি নিয়েছে। গা-ঘামানোর ম্যাচগুলো যদি প্রস্তুতির মাপকাঠি হয়, তা হলে কুকের ইংল্যান্ড ইতিমধ্যেই বহু গজ এগিয়ে! ফিন আর ব্রডের চোট ওদের সামান্য সমস্যায় ফেলেছে ঠিকই। কিন্তু প্রথম টেস্টে ব্রড খেললে আমি অন্তত অবাক হব না। ফিনের ক্ষেত্রে অবশ্য চোটটা ঠিক কতটা গুরুতর সেটা আগে জানা দরকার।
ভারতের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ইংল্যান্ডের বোলারদের তুলনায় ওদের ব্যাটসম্যানদের কাছে অনেক বেশি জরুরি। সোয়ানের ফিরে এসে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়াটাও কুককে নিশ্চয়ই স্বস্তি দিয়েছে। আশা করি সোয়ানের অসুস্থ মেয়ে ভাল আছে। সিরিজ শুরুর মুখে দেশ থেকে ঘুরে আসাটা ওর জন্য ভাল হল। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে আসায় অনেক তরতাজা থাকবে।
ইংল্যান্ডের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ফোকাস ধরে রাখা। তিনটে প্রস্তুতি ম্যাচের পরে চার টেস্ট। যথেষ্ট লম্বা সফর। যেটা দেখতে হবে, সেটা হল কুকরা মানসিক ভাবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত তাজা থাকতে পারে কি না। স্টিভ ওয়ের সেই দলটা ভারতে এসে সবথেকে বড় যে কাজটা করেছিল, সেটা হল নিজেদের দেশের সঙ্গে এ দেশের পরিবেশের বৈচিত্রকে মেনে নিয়ে দেশটাকে চেনার অভিজ্ঞতাটা উপভোগ করা। ইংল্যান্ডও যদি এটা করতে পারে, তা হলে ভাল। |