উত্তরের চিঠি

দক্ষিণ দিনাজপুর শিল্পবিহীন জেলা
সারা পশ্চিমবাংলার মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর একমাত্র জেলা যেখানে স্বাধীনতার ৬০ বছর পরেও কোনও শিল্প গড়ে ওঠেনি বা কোনও শিল্প উন্নয়ন হয়নি। এটি উত্তরবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বঞ্চিত ও শোষিত জেলা যেখানে আজ পর্যন্ত কোনও বিমান যোগাযোগ ও ভাল চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এই জেলা তীব্র বেকার সমস্যায় জর্জরিত। শিল্প গড়ে না ওঠার অন্যতম কারণ হল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগের অভাব এবং জেলা প্রশাসনের অবহেলা। আর একটি কারণ হল, দঃ দিনাজপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই খারাপ। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগীরা যাতে সহজ সরল শর্তে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পায় তার কোনও চেষ্টাই করছে না জেলা শিল্প দফতর এবং জেলা প্রশাসন। দক্ষিণ দিনাজপুরে বিমানপথ বিহীন হওয়ায় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা, টেলিফোন ব্যবস্থা ও সড়কপথগুলির অবস্থা খুবই খারাপ থাকায় কোনও বড় শিল্পপতিই জেলায় নতুন করে শিল্পস্থাপন করতে চাইছেন না। জেলায় ক্ষুদ্র শিল্প বলতে রাসপুর ও ফুলবাড়িতে কয়েকটি চালের মিল রয়েছে, তাও আবার কয়েকটি বন্ধের মুখে। জেলায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চোরাচালানের জন্য মিলগুলি ধান সংগ্রহ করতে পারছে না। হিলিতে ক্ষুদ্র বিড়ি শিল্প ও বালুরঘাটে পরিবহণ শিল্প আছে। যে জেলায় শিল্পায়ন সম্পূর্ণ বন্ধ, সেখানে চাকরি কোথা থেকে জন্ম নেবে? তাই স্বাধীনতার চার দশক পরেও আজও সারা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সর্বত্র দারিদ্র, অশিক্ষা, অস্বাস্থ্য, বেকারত্ব তথা সামগ্রিক অনগ্রসরতা বিষণ্ণতার বাতাবরণ। শিল্পবিহীন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় কোনও কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় বাধ্য হয়ে রুটি-রুজির খোঁজে ভিন্ন রাজ্যে পাড়ি দিতে হচ্ছে জেলার শিক্ষিত বেকার ও যুবকদের। ২০১১ সালের সেনসাস রিপোর্ট অনুযায়ী জেলার জনসংখ্যা ১৬ লক্ষ ৭০৯৩১ জন। গঙ্গারামপুরের তাঁত শিল্প এক সময় ভাল সাড়া ফেললেও রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় আজ তা মৃতপ্রায়। এ ছাড়া বাঁশ ও বেত প্রভৃতি শিল্পীদের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। বালুরঘাটের মাহিনগরে একটি মাত্র আই টি আই আছে। কিন্তু সেখানে প্রয়োজনের তুলনায় আসন সংখ্যা খুবই কম। ফলে বৃত্তিমূলক শিক্ষার সুযোগ জেলায় প্রায় নেই বললেই চলে। জেলার বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর, কুমারগঞ্জ, কুশমণ্ডি ও তপন ব্লকের শিক্ষিত যুবক ও কিশোররা বেশির ভাগই কাজের খোঁজে ও উপার্জনের জন্য গুজরাত, রাজস্থান, হায়দরাবাদ ও দুবাই ইত্যাদি জায়গায় চলে যাচ্ছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মূলত কৃষিভিত্তিক জেলা। জেলার ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষিকর্মের উপরেই নির্ভরশীল। তাই এই জেলায় কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে ওঠা সম্ভব। বালুরঘাটের বিধায়ক তথা রাজ্যের কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী, বালুরঘাটের প্রাক্তন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী, বালুরঘাটের সংসদ প্রশান্ত মজুমদার, জেলার হরিরামপুরের বিধায়ক বিপ্লব মিত্র, জেলা সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মু, বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান সুচেতা বিশ্বাস দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় শিল্প ও কর্মসংস্থান গড়ে তোলার জন্য অনেক আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে সরকারি পর্যায়ে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জেলায় বামফ্রন্ট ও তৃণমূল কংগ্রেস শিল্প গড়ে তোলার ব্যাপারে কোনও আন্দোলন ও বিক্ষোভ দেখায়নি। আগামী দিনে দক্ষিণ দিনাজপুরে শিল্প উন্নয়নে জোয়ার আনতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মানব-সম্পদের ক্ষয় হচ্ছে রোগে
ডায়াবেটিস ও মানসিক প্রতিবন্ধী এই দুই রোগ সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক ভারতের মানবসম্পদকে কুরে কুরে খাচ্ছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, বিশ্বে মোট ১০৭১ লক্ষ ডায়াবেটিসের রোগী আছে। তার মধ্যে ৩৩০ লক্ষ ভারতেই। ২০২৫ সালে ভারতে এরোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৭৪০ লক্ষ। পাশাপাশি মানব সম্পদ মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ছেন শেঁকলের বাঁধনে। সংবাদপত্র খুললেই মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে শেঁকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বাধা মানুষের অমানবিক ছবি। চিকিৎসা বিজ্ঞান আজ উন্নতির শৃঙ্গে। চোখ, লিভার, শিরা তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম ভাবে। সম্প্রতি জাপানের ইয়োকোহামাসিটি বিশ্ববিদ্যালয়, রাইকেন সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজির বিজ্ঞানীরা দাবি করলেন, দেহের স্টেম সেল থেকে লিভার, চোখের মণির একাংশ তৈরিতে সাফল্য এসেছে। এমনকী ‘দ্য ল্যান সেট’ পত্রিকা জানাচ্ছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুচিত্রা সুমিত্রন একই পদ্ধতিতে স্টেম সেল থেকে গবেষণাগারে তৈরি করেছেন শিরা। সেই শিরা প্রতিস্থাপনেও মিলেছে সাফল্য। জলপাইগুড়ির ৯ বছরের মানসিক প্রতিদ্বন্দ্বী অনিরুদ্ধ সেনগুপ্ত স্টেমসেল থেরাপির চিকিৎসায় সুস্থ জীবনে ফিরেছে। এই চিকিৎসাতেই ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন উৎপাদনকারী যে কোষগুলি অক্ষম হয়ে পড়ে সে ক্ষেত্রে প্লুরিপোটেন্ট স্টেমসেল সেই কোষ বানিয়ে কঠিন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করা যায়। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন দফতর-এর নিকট আবেদন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতা ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের বর্তমান পরিস্থিতি, তার উপর নজর দিয়ে রাষ্ট্রগঠনের একক মানব সম্পদকে রক্ষা করতে আধুনিক চিকিৎসা স্টেমসেল থেরাপি সরকারি স্তরে রাজ্যে চালু করা হোক।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.