কংগ্রেস কর্মী খুনের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল জলঙ্গিতে। রবিবার সকালে জলঙ্গি থানার সাতভাইয়াপাড়া গ্রামের মহাবুল সেখ (৩৮) নামে ওই কর্মীকে একদল দুষ্কৃতী বোমা ছুড়ে খুন করে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, মূল অভিযুক্ত প্রতিবেশি ওবাইদুল ইসলাম সহ মোট ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা গ্রামে পুলিশি টহল চলছে। বিরাট পুলিশ বাহিনী নিয়ে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর ঘটনাস্থলে যান। অন্যদিকে এই খুনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই জলঙ্গি বাজারে প্রায় ঘন্টাখানেক করিমপুর-বহরমপুর রাজ্যসড়ক অবরোধ করে রাখে কংগ্রেস সমর্থকেরা। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মৃতদেহ তুলতেও বাধা দেয় গ্রামবাসীরা। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা অভিযুক্ত ওবাইদুলের বাড়িও ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।
পুলিশ ও স্থানীয়সূত্রে জানা গিয়েছে এদিন সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ মহাবুল বাড়ি থেকে মাঠে যাচ্ছিলেন। সেইসময় প্রতিবেশি ওবাদুলের বাড়ির ছাদ থেকে মুড়ি মুড়কির মতো বোমা এসে পড়ে মহাবুলের উপর। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। মৃত্যুর পরেই ওই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা গোলাম রেজাউল সরকারের দাবি, ‘‘দিনকয়েক থেকেই সিপিএমের লোকজন এলাকায় দিনে মিটিং করছে। আর রাতে বোমাবাজি করছে। গোটা ঘটনাটাই জলঙ্গি থানার পুলিশকে জানিয়েছিলাম। একটা কিছু দুর্ঘটনা যে ঘটতে পারে এমন আশঙ্কার কথাও পুলিশকে বলেছিলাম। কিন্তু তারপরেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।’’
অন্যদিকে যে রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এই খুনের ঘটনায় আঙুল উঠেছে সেই সিপিএমের জলঙ্গি জোনাল কমিটির সম্পাদক ইউনুস সরকার অবশ্য এই খুনকে গ্রাম্য বিবাদের পরিণতি বলেই মনে করছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গ্রামের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ রয়েছে। সেই পুরনো গন্ডগোলের জেরেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। এতে অহেতুক রাজনৈতিক রঙ লাগানোর চেষ্টা চালাচ্ছে কংগ্রেস।’’
যদিও জলঙ্গি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের পাল্টা দাবি, ‘‘সিপিএম ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে নিজেদের দলের সমাজ বিরোধীদের কাজে লাগিয়ে এই খুন করেছে। মহাবুল ওই এলাকায় কংগ্রেসের দক্ষ সংগঠক হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে সিপিএম ওকে খুন করল।’’
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘ওই গ্রামে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একটি বিয়েকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের গন্ডগোল ছিল। তাছাড়া মাস দুয়েক আগে ওবাইদুলকে জাল টাকা-সহ পুলিশ গ্রেফতার করে। ওবাইদুলের ধারণা ছিল যে মহাবুলই তাকে চক্রান্ত করে ফাঁসিয়েছিল জেরায় এমনটাই জানিয়েছে সে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সবদিক আমরা খতিয়ে দেখছি।’’ |