মাত্র ৬ দিনেই বেলডাঙার সোনাপট্টিতে সোনার দাম প্রায় ১ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেল। ধনতেরাসের ঠিক আগে তাই আনন্দে নেই মধ্যবিত্ত থেকে ব্যবসায়ীরা। বাজারের গতিবিধি দেখে বিশেষজ্ঞদের অনেকের ধারনা হয়েছিল, ধনতেরাসে সোনার বিকিকিনি ভালোই হবে। রবিবার ১০ গ্রাম গয়না সোনার দাম ৩০ হাজার ৫০০ টাকা যা গত ৬ তারিখেও ছিল ২৯ হাজার ৬৫০ টাকা। এই এক হাজার টাকা দাম বাড়ায় ছোট অলঙ্কারের দামে কিছুটা ফারাক করে দেবে বলেই ধারণা সোনা ব্যবসায়ীদের। তাই কেনাকেটা নিয়ে চিন্তিত বেলডাঙার ব্যবসায়ীরা।
এই এক হাজার টাকা বৃদ্ধিতে বাজারে ঠিক কী হচ্ছে? বেলডাঙার স্বর্ণশিল্পী দশরথ বিশ্বাস বলেন, “ধরুণ, আমাদের দোকানের এক পরিচিত তরুণী সামান্য কয়েকটা প্রাইভেট টিউশন করেন। ধনতেরাসের আগে প্রতি বছরই সে নিয়ম করে ছোট কানের দুল, আংটি বা নাকছাবি তৈরি করে। আমরাও তার অর্ডার ও পছন্দ মেনে জিনিস তৈরি করে দিই। আজই সে সকালে এসেছিল তার পছন্দের নাকছাবি নিতে। কিন্তু দাম দেওয়ার সময় ১০০ টাকা কম নিয়ে এলো। আমরা বললাম গত সপ্তাহ হলেও কম নেওয়া যেত। কিন্তু এ সপ্তাহে সেই উপায় নেই। ফলে আমরা তাকে সন্তুষ্ট করতে পারলাম না।” সুখেন মন্ডলের কথায়, “আমাদের বাড়ির পাশের নব বিবাহিতা এক মহিলা একটি ঝোলা কানের বাহারি দুল তৈরি করতে দিয়েছেন অনেক দিন আগে। কিন্তু নেওয়ার সময় সোনার দাম বেড়ে যাওয়ার দরুণ তাঁকে কিছুটা দাম বেশি দিতে হল। ফলে ব্যবসাদার হিসেবে আমরা তাকে যথার্থ দামে দিলেও তাঁকে খুশি করতে পারিনি।” স্কুল শিক্ষিকা শবনম খাতুন বলেন, “সোনার দাম বাড়ার কথা খবরের কাগজে দেখি। কিন্তু কয়েকদিন কাজে ব্যস্ত থাকায় দেখতে পাইনি। দোকানে গিয়ে দেখলাম গত কয়েক দিনে সোনার দাম বেড়েছে। ফলে আমার লোকসান হল।” সোনার ব্যবসায়ী কার্তিক দাস বলেন, “আমাদের সোনা কেনা ও বিক্রি উভয়তেই সমস্যা। কারণ বিগত দিনে ২৫০০-৪০০০ টাকায় কানের দুল বিক্রি করেছি। হাতের তৈরি বারোমাসের গলার হার ২১ হাজার-২২ হাজার। সেটা দেওয়া যাচ্ছে না। প্রতি ১০ গ্রামে সেই হিসেবে ১ হাজার টাকা বেড়ে যাওয়ার ফলে দাম কিছুটা বেড়েছে বইকি।”
বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির রাজ্য কমিটির সম্পাদক টগরচন্দ্র পোদ্দার বলেন, “সোনার দামের এই লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধিতে স্বর্ণশিল্পী থেকে কারবারী সকলেই দিশাহীন। তবে ধনতেরাসের আগে আবার বৃদ্ধিতে কিছুটা সমস্যা বাড়লই।”
সোনাশিল্পী অর্জুন সেন বলেন,“মগর মুখ বালা ৫৫ হাজার টাকার কিছু কমে দেওয়া যাচ্ছিল। বর্তমানে তা যাচ্ছে না। বাউটি ৪৫ হাজার থেকে কমে হচ্ছে না।”
রঙ্গন তাই দীপাবলিতে এ বার প্রিয়াঙ্কাকে আংটি দিতে পারেননি। ২৫০০ টাকার একটা টপ দুল দিয়েছে। সুছন্দা বিয়ের জমানো টাকায় যা সোনা কেনার কথা ভেবেছিলেন, ধনতেরাসে তাঁর সেই ইচ্ছে পূর্ণ হয়নি। |