বিধ্বস্ত মায়ানমার
ভূকম্পে ভাঙল সেতু, খনিতে ধস
সাতসকালে সবে রাস্তায় বেরিয়েছেন মায়ানমারবাসী। হঠাৎই কেঁপে উঠল মাটি। কয়েক সেকেন্ডের এই কম্পনেই ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গিয়েছে সে দেশের উত্তর অংশ। বাকি অংশেও প্রভাব তো পড়েইছে, কম্পনের হাত থেকে রেহাই পায়নি তাইল্যান্ড, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলও।
মায়ানমার প্রশাসন জানিয়েছে, এ দিন রাত পর্যন্ত অন্তত ১২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ইরাবতী নদীর উপরে একটি নির্মীয়মাণ সেতু ভেঙে পড়ায় ৫ জন মারা গিয়েছেন। বিধ্বস্ত এলাকার নানা প্রান্ত থেকে শ’খানেক লোককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের তলায় অনেকে আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ দিন ভারতীয় সময় সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ (মায়ানমারে তখন সাতটা বিয়াল্লিশ) প্রথম কেঁপে ওঠে উত্তর মায়ানমার। প্রভাব পড়েছে সে দেশের বাকি অংশেও। কম্পন সব চেয়ে বেশি অনুভূত হয়েছে উত্তর মায়ানমারের শেবোতে। সেটিই ভূকম্পের কেন্দ্রস্থল। রিখটার স্কেলে প্রথম কম্পনটির তীব্রতা ছিল ৬.৫। কম্পনের উৎসস্থল মাটি থেকে অন্তত ১০ কিলোমিটার নীচে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
ইরাবতীর উপর এই সেই নির্মীয়মাণ রদনা থিঙ্গা সেতু। ছবি: রয়টার্স
মায়ানমারের সব চেয়ে বড় বিপর্যয় হয়েছে শেবো শহরের কাছে ইরাবতীর উপর নির্মীয়মান রদনা থিঙ্গা সেতুটি ভেঙে পড়ায়। পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, সেতুটিতে কাজ চলার জন্য বহু শ্রমিক ছিলেন। আচমকা তা ভেঙে পড়ায় অধিকাংশই নদীর জলে ভেসে যান। তার মধ্যে পাঁচ জনের দেহের হদিস মিলেছে। বাকিরা এ দিন রাত পর্যন্ত নিখোঁজ। ওই এলাকা থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে জনা পনেরো বাসিন্দাকে। ভেঙে পড়েছে প্রচুর বৌদ্ধমঠ, প্যাগোডা এবং মন্দিরও। ক্ষতিগ্রস্ত আরও অনেকগুলি। শেবোর কাছকাছি বিভিন্ন ছোটখাটো শহরও বিপর্যস্ত। থাবেইকিনে কয়েকটি সরকারি ভবন, একটি প্রাথমিক স্কুল-সহ শ’খানেক বাড়ি ভেঙে পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে অন্তত চার জনের। জনা ষাটেক নাগরিককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
মোগকের কাছে খনিগুলিতে ধস নেমেছে বলে খবর। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মোগকের পশ্চিম দিকেই ভূকম্পের উৎসস্থল হওয়ায় খনিগুলি রেহাই পায়নি। তার মধ্যে কয়েকটি সোনার খনিও রয়েছে। মোগকের কয়েকটি চুনিপাথরের পরিত্যক্ত খনির অবস্থাও বিপজ্জনক বলে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন।
সংবাদসসংস্থা পিটিআইয়ের মত মায়ানমারে বিপর্যয় মোকাবিলার ব্যবস্থা খুবই খারাপ। তার উপরে এ বারে ভূকম্পের কেন্দ্রস্থল অত্যন্ত অনুন্নত। তার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। অনুন্নত এলাকা হওয়ায় উদ্ধারকাজেও সুবিধা হচ্ছে। বিপর্যয়ের ধাক্কা বছর কয়েক আগেও সামলেছে মায়ানমার। ২০০৮ সালে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
প্রথম কম্পনের পরেও এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনবার কম্পন হয়। এর প্রভাব পড়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি রাজ্যেও। সকাল থেকে দু’তিন দফায় কম্পন অনুভূত হয়েছে। মণিপুরে কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬.৪। তবে কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.