ওকোলি ওডাফার রেকর্ডটা তা হলে এ বার ছুঁয়ে ফেলছেন? আই লিগে চার বার সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড?
ভ্রু কুঁচকে তাকান র্যান্টি মার্টিন্স। “আমার কাছে নিজের সাফল্যের চেয়ে দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা অনেক বেশি প্রয়োজন।” ধুর্ত শেয়ালের মতো গোলের আশেপাশে যিনি ঘুরে বেড়ান, নতুন ডাচ কোচের পাশে বসে তিনি কেমন যেন জড়সড়।
ওডাফার সঙ্গে তাঁর সাপে-নেউলে সম্পর্ক। সেই গোয়া থেকেই। এতটাই যে, কেউ কারও নাম সচরাচর মুখে আনেন না। ওডাফা ফেড কাপ শুরুর আগে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “ডেম্পোতে ও মাঝমাঠের সাহায্য পেত। দেখি না এখানে কেমন করে।” এ দিন সকালে দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরে মোহনবাগান অধিনায়ক ছিলেন সাউথ সিটির ফ্লাটে ঘরবন্দী। র্যান্টির হ্যাটট্রিক-সহ পাঁচ গোল করে সবার উপরে (১১ গোল) চলে যাওয়া টিভিতে তিনি দেখেছেন কিনা জানা যায়নি। ফোন করলে বলে দিলেন, “ব্যস্ত আছি।”
যুবভারতীতে তাঁর সৌজন্যে ইতিহাস সৃষ্টি করেও কেমন যেন উদাসীন র্যান্টি। পাঁচটি গোলের মধ্যে কোনটা সেরা? “সব ক’টাই। যে কোনও গোলই আমার কাছে সেরা মনে হয়,” বললেন প্রয়াগ স্ট্রাইকার। ডেম্পোকে পাঁচ বার আই লিগ জিতিয়েছেন। একটা ম্যাচে জোড়া হ্যাটট্রিক আছে। যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই শুরু। |
গোলের হুঙ্কার। শনিবার যুবভারতীতে র্যান্টি। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
রসায়নটা কি? ‘থ্রি ডি’-কেই কৃতিত্ব দেন র্যান্টি। “ডেডিকেশান, ডিটারমিনেশন অ্যান্ড ডিসিপ্লিন।”
ওডাফা, টোলগে, চিডিঅন্য দুই প্রধানের তিন বিদেশি তারকা গোল করলে যে উচ্ছ্বাসে ভাসে যুবভারতী, র্যান্টির দুর্দান্ত গোলের সময় তা উপস্থিত ছিল না। স্পনসরদের উদ্যোগে নিয়ে আসা হাজার খানেক সমর্থক হইচই করছিলেন র্যান্টির ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’-এর পুরষ্কার নেওয়ার সময়। “ও সবে কিছু যায় আসে না। আমি যে দলে থাকি সেই দলকে চ্যাম্পিয়ন করার চেষ্টা করি। প্রয়াগকে চ্যাম্পিয়ন করাই আমার লক্ষ্য,” স্টেডিয়ামের টানেল দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বলে দেন র্যান্টি। সঙ্গে জানিয়ে দেন, “কার্লোস আমার কাছাকাছি খেলায় সুবিধা হয়েছে। অনেক বল পেয়েছি। আমি একা নই, পুরো টিম আজ ভাল খেলেছে।”
গাড়িতে উঠে বাড়ি ফেরার সময় ক্লাবের এক বড়কর্তাকে ডেকে বলে গেলেন, “কোচ বদলটা খুব জরুরি ছিল। ড্রেসিংরুমের পরিবেশটাই বদলে গিয়েছে।” আর সাংবাদিকদের সামনে এসে বলে দিলেন, “নতুন কোচ বলেছিলেন মাঠে ডিসিপ্লিনড থাকতে, সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিটি বলের জন্য লড়াই করতে। সবাই সেটা করেছে।”
সত্তর মিনিটে বসিয়ে দেওয়ায় কোস্টারিকার বিশ্বকাপার কার্লোস এ দিন ম্যাচের পরই গজগজ করতে করতে বেরিয়ে গেলেন ড্রেসিংরুম থেকে। তাতে অবশ্য র্যান্টির মনোভাবের কোনও পরিবর্তন হয়নি। তিনি বললেন, “যত দিন যাবে ততই আমরা ভাল খেলব।” |
গোল-গল্প |
একাই যখন একশো |
• র্যান্টি মার্টিন্স (ডেম্পো) ৭ গোল (বনাম এয়ার ইন্ডিয়া, ২০১০-১১)
• ওডাফা ওকোলি (চার্চিল) ৬ গোল (বনাম ভাস্কো, ২০০৮-০৯)
• ভাইচুং ভুটিয়া (জেসিটি) ৫ গোল (বনাম মহীন্দ্রা, ১৯৯৬-৯৭)
• ওডাফা ওকোলি (চার্চিল) ৫ গোল (বনাম এআইএফএফ একাদশ, ২০১০-১১)
• র্যান্টি মার্টিন্স (প্রয়াগ ইউনাইটেড) ৫ গোল (বনাম ইউনাইটেড সিকিম, ২০১২-১৩) |
প্রতিপক্ষ যখন পাতালে |
• ডেম্পো ১৪-০ এয়ার ইন্ডিয়া (মারগাও, ২০১০-১১)
• প্রয়াগ ১০-১ ইউনাইটেড সিকিম (যুবভারতী, ২০১২-১৩)
• মহীন্দ্রা ৯-০ মহমেডান স্পোর্টিং (মুম্বই, ২০০৬-০৭)
• চার্চিল ৯-১ ভাস্কো (মারগাও, ২০০৮-০৯)
• ভাস্কো ৮-০ হ্যাল (মারগাও, ২০০২-০৩) |
এলকো সাটোরি: ১০ গোলে জেতা আমার কাছেও বিস্ময়!
আই লিগের পরিসংখ্যান: হরিপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় |
|