জার্মানির গভীর জঙ্গলে জুলিয়াস সিজারের দুর্গ
তদূর চোখ যায় ঘন জঙ্গল। সেই জঙ্গলের অন্ধকার থেকেই ভেসে আসছে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। সঙ্গে অদ্ভুত একটা গন্ধ। পুরো পরিবেশের মধ্যেই যেন কী রকম একটা থমথমে ভাব। অথচ এই জঙ্গলের মধ্যেই নাকি রয়েছে খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চাশ সালের এক দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। তা-ও আবার যে সে দুর্গ নয়। গলের যুদ্ধের সময় রোমান সেনাদের থাকার জন্য যে দুর্গ বানিয়েছিলেন স্বয়ং জুলিয়াস সিজার, প্রত্নতাত্ত্বিকদের দাবি এটি নাকি সেই দুর্গ। সম্প্রতি জার্মানির একটি জার্নালে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
সেই তথ্যই বলছে, জায়গাটি জার্মানির হার্মেস্কেইল শহরের মধ্যে। ফ্রান্সের সীমান্ত লাগোয়া শহরটিতে বেশ অনেক দিন ধরেই সন্ধান চলছিল এই দুর্গের। প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান ছিল, ওই এলাকাতেই রয়েছে গলের যুদ্ধের সমসাময়িক দুর্গটি। এমনকী, প্রমাণ হিসাবে জঙ্গলের ভিতর থেকে দুর্গের দেওয়ালের ধ্বংসাবশেষও খুঁজে বার করেন তাঁরা। কিন্তু সেই প্রমাণ প্রথমে ধোপে টেকেনি। কেন? বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, দেওয়াল এবং আনুষঙ্গিক নমুনাগুলি যে সিজারের সময়েরই, তার প্রমাণ ছিল না প্রত্নতাত্ত্বিকদের হাতে। সেই প্রমাণেরই হদিস দিয়েছেন জার্মানির জোহানেস গুটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেজিইউ) এক দল গবেষক।
কী রকম সেই প্রমাণ?
জেজিইউ-এর গবেষক দলের অন্যতম গবেষক সাবিনে হরনাঙ্গ জানাচ্ছেন, প্রমাণের সন্ধানে দু’ধাপে অভিযানটি পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। প্রথমেই দুর্গের আনুমানিক আয়তন মাপার চেষ্টা করেন হরনাঙ্গ এবং তাঁর দল। সেটা ২০১০ সালের মার্চ মাসের কথা। সেই সময়েই তাঁরা জানতে পারেন ১ লক্ষ ৮২ হাজার বর্গমিটার আয়তনের পুরো সেনা-ঘাঁটিটিই আয়তাকার। যার মধ্যে সেনাদের জন্য জলের ব্যবস্থা করতে একটি ঝর্না রাখা হয়েছিল। দুর্গের এলাকার আনুমানিক ছবিটা পরিষ্কার হতেই দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু করেন তাঁরা। এবং এই ধাপেই উঠে আসে সেই বহুকাঙ্খিত প্রমাণ।
অভিযান চালাতে চালাতে আচমকাই দুর্গের একটি দরজা খুঁজে পেয়েছিলেন গবেষকরা। সেই সংলগ্ন চত্বরেই মিলেছিল বেশ কিছু জুতোর পেরেকও। প্রত্নতাত্ত্বিকদের দাবি, ওগুলি আসলে সিজারের রোমান সেনাদের জুতো থেকে খসে পড়া পেরেক। দরজা দিয়ে যাতায়াতের পথে সেগুলি খসে পড়েছিল সেনাদের জুতো থেকে। গবেষকরা বলছেন, পেরেকের মধ্যে এমন কিছু চিহ্নের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যেগুলি সিজারের সময়েই মিলত। একই সঙ্গে মাটির তৈরি বেশ কিছু বাসনকোসনেরও সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। যা পরীক্ষা করে তাঁরা একরকম নিশ্চিত, ওগুলি সবই সিজারের গল-যুদ্ধের সময়ের এবং দুর্গটিও সমসাময়িক।
স্বাভাবিক ভাবেই সিজারের দুর্গের সন্ধান মেলায় বেশ খুশি জেজিইউ-এর গবেষক দল। তবে খুশির কারণটা অন্যত্র। আসলে গল-যুদ্ধের সময়কাল নিয়ে ইতিহাসবিদ্দের মধ্যে মতবিরোধ বেশ অনেক দিনের। এই নতুন প্রমাণগুলি সেই মতবিরোধ মিটিয়ে দিতে পারবে বলে আশা করছেন হরনাঙ্গরা। স্পষ্ট করে দেবে ঠিক কোন সন্ধিক্ষণে রোমকে রোমান-সাম্রাজ্যে পরিণত করতে প্রথম যুদ্ধে নেমেছিলেন সম্রাট সিজার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.