নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন দুর্গাপুরের কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ন্যাশনাল পাওয়ার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট’-এর (এনপিটিআই) বি-টেক, চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার পঠন-পাঠন বন্ধ রেখে সারা দিন ধরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
এনপিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল থেকে ওই ইনস্টিটিউটের প্রায় ৫০ জন পড়ুয়া বিক্ষোভে সামিল হন। ক্যাম্পাসিং হচ্ছে না কেন, তার জবাব চেয়ে ঢোকার মুখে পোস্টার লাগিয়ে দেন তাঁরা। পরে ভিতরেও পোস্টার দেওয়া হয়। ভিতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় কর্মীদেরও। পরে অবশ্য বিক্ষোভকারী ছাত্রেরা তাঁদের পথ ছেড়ে দেন। অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের তরফে পড়ুয়াদের সঙ্গে বার বার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও পড়ুয়ারা সহযোগিতা করেননি। বিকেল পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। পুলিশকে খবর দেন কর্তৃপক্ষ। কিছুক্ষণ পর কলেজ ছেড়ে চলে যান পড়ুয়ারা।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্রতিবার ক্যাম্পাসিংয়ের জন্য বেশ কিছু সংস্থা আসে ইনস্টিটিউটে। অনেকের চাকরিও হয়। কিন্তু এ বার তা হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পড়ুয়ার বক্তব্য, “অনেক আশা নিয়ে এই সরকারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু এখন দুশ্চিন্তা হচ্ছে।” বি-টেকের চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া গৌরাঙ্গপ্রসাদ মণ্ডলের দাবি, “চাকরির আশায় পড়তে এসেছিলাম। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোনও সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছেন না বলেই সমস্যা বাড়ছে।” বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে সহমত প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য পাঠ্যক্রমের পড়ুয়াদের একাংশও। তেমনই এক জন, অর্ণব চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “জানি না কি ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে!” তাঁদের আরও অভিযোগ, এই ইনস্টিটিউটের পড়াশোনার মান নেমে গিয়েছে অনেকটাই। |
তবে ছাত্রদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর সুবীরকুমার বসু। তাঁর দাবি, ইনস্টিটিউটের পক্ষে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “আমাদের তরফে কোনও খামতি নেই। সংস্থাগুলি যদি কর্মী-নিয়োগের ক্ষেত্রে দেরি করছে। কিন্তু তার দায় আমাদের ঘাড়ে চাপানো অর্থহীন।” অন্য দিকে, শিক্ষার মানের অবনতি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম মেনে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। কিছু পড়ুয়া পড়াশোনা করে না বলে কম নম্বর পেয়েছে। তাই এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” তিনি জানান, কাজেই পড়ুয়াদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
১৯৬৮ সালে কেন্দ্রীয় শক্তি মন্ত্রকের অধীনে সারা দেশে গড়ে ওঠে এনপিটিআইয়ের মতো ৯টি ইনস্টিটিউট। পূর্ব ভারতের এক মাত্র এই ইনস্টিটিউটটি গড়ে ওঠে দুর্গাপুরে। পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং-য়ে বি-টেক পড়ানোর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা কোর্সও করানো হয় এই ইনস্টিটিউটে। পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি শিল্প সংস্থায় কর্মরত ৩০ হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে এই সংস্থা প্রশিক্ষণ দিয়েছে বলে এনপিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। |