হাসপাতালেই ফাটে শব্দবাজি, নিয়মিত মজলিসও দুষ্কৃতীদের
মাস খানেক আগে রেজিনগরের শক্তিপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত হলেও, পরিষেবাগত সমস্যা রয়ে গিয়েছে ঠিক আগের মতোই।
স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধি সকলেরই অভিযোগ, জ্বর, পেটের গন্ডগোল ও স্বাভাবিক প্রসব ছাড়া কোনও কিছুরই চিকিৎসা মেলে না হাসপাতালে। শিশুদের জন্য আইসোলেশন বিভাগের আলাদা ঘর হওয়ার কথা তাকলেও এখনও তা হয়ে ওঠেনি। চিকিৎসকদের উপস্থিতি অনিয়মিত। অপরিচ্ছন্ন শৌচাগার।
স্বাস্থ্য দফতর এ ব্যাপারে বিশেষ কোনও আশার কথা শোনাতে পারেনি। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস বলেন, “আগে জেলা হাসপাতালগুলির সমস্যা মিটুক। তারপর ওই ধরনের হাসপাতালগুলির দিকে নজর দেওয়া হবে।”
শক্তিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের দীপক মহান্ত বলেন, “ওই হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কোনও ডাক্তার থাকে না। ফলে রাতবিরেতে কেউ হাসপাতালে এলে চিকিৎসা পান না। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কেউ হাসপাতালে এলে বাড়ি থেকে বেরোতেই ডাক্তারের আধ ঘন্টা লাগবে। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আমরা এ বিষয়গুলি মেটানোর দাবি জানিয়েছি।”
তবে এই হাসপাতালের সব থেকে বড় সমস্যা শৃঙ্খলাহীনতা। স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সন্ধ্যা নামলেই হাসপাতাল চত্বরেই বসে মদের আসর। ৩ নভেম্বর রাত ৯টা নাগাদ হাসপাতাল চত্বরেই দীর্ঘ সময় ধরে শব্দবাজি ফাটে। হাসপাতালে তখন জনা দশেক রোগী। হাসপাতালের ভিতরেই ছিলেন চিকিৎসকেরা। ছিলেন বিএমওএইচ-ও। কিন্তু শব্দবাজি রুখতে তাঁদের এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। বরং পরে তাঁদেরই একজনকে বলতে শোনা যায়, “সব ব্যাপারেই চিকিৎসকদের এগিয়ে যেতে হবে নাকি?”
শক্তিপুরের সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক শ্যামল দুবে বলেন, “অব্যবস্থাপনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। হাসপাতালে ভিতরে ডাক্তার, বিএমওএইচ থাকা সত্ত্বেও ওই দিন হাসপাতালের মধ্যেই শব্দবাজি ফাটল। বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েও আজও তার কারণ জানতে পারিনি।” বিএমওএইচ-কে জানাননি কেন? শ্যামলবাবু বলেন, “আগে অনেক বিষয়ই বিএমওএইচ-কে জানিয়েছি। দেখেছি উনি শুনেও শোনেননা। তাই আর তাঁর কাছে যাইনি।”
রেজিনগরের বিধায়ক কংগ্রেসের হুমায়ুন কবীর বলেন, “অনেক সময় হাসপাতালের অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু পেতেও সাধারণ মানুষকে ২০ কিলোমিটার দূরে বহরমপূুরে যেতে হয়।” ওই হাসপাতালের উন্নতিকল্পে আপনি কী করেছেন? তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীকেও এলাকার হাসপাতালের উন্নয়নে সামিল করার ইচ্ছা রয়েছে।” কিন্তু সাধ্য থাকলেও তাঁর কী সেই সাধ্য আছে? প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েই। আর কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এসেই যে জিয়নকাঠি ছুঁইয়ে হাসপাতালে সুদিন ফেরাবেন এমন ভরসাই বা কোথায়!
বেলডাঙা-২ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অনুপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সমস্যা থাকলেও আগের তুলনায় হাসপাতাল ভালোই চলছে। হাসপাতালে কর্মীর সংখ্যা কম। কর্মীর সংখ্যা বাড়লে সমস্যার সুরাহা হবে। অনেক সময় কোনও ডাক্তার বা নার্স ছুটি নিলে রোগীরা অসুবিধায় পড়েন। সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করারও থাকে না।” হাসপাতালের মধ্যেই বাজি ফাটানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিডিও-র কাছ থেকে বিষয়টি জেনে হালপাতালের সামনে এসে দেখি বাইরে পটকা ফাটছে। তাও তাদের নিষেধ করেছি আমি। চিকিৎসা পরিষেবার বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.