প্রবন্ধ ৩...
এ পথে আমি যে
পুজো শেষ। শহরের রাস্তা জুড়ে তৈরি হওয়া প্যান্ডেলগুলো থেকে খুলে নেওয়া বাঁশ, কাঠ, প্লাইউড, কাপড় আবার ডেকরেটরের ভ্যানে চেপে পরের পুজো অবধি অপেক্ষা করতে যাচ্ছে। এ বছরের সূর্যতপস্যা হয়তো সামনের বছর অন্ধকারের বন্ধু হয়ে ফিরবে।
তবু কিছু পেরেক রহিয়া গেল।
বিজয়ায় উপেক্ষিতা পেরেক। প্যান্ডেল বাঁধার সময় যার কোনও বিকল্প ছিল না, সাত দিন পরে সম্পূর্ণ মূল্যহীন। বাঁশ, কাঠ, প্লাইউড থেকে একে একে উপড়ে ফেলে পথের ধারে অথবা মাঝখানেই ফেলে যাওয়া পেরেক। অবোলা না হলে যারা কিশোরকুমারের মতো গাইত: পথে ফেলে দিলে আমায় পথেই পড়ে রই।
মোটরবাইক চালাই। প্রতি বছর পুজোর পর কয়েক দিন বাইক আমায় যত ক্ষণ বয়, আমিও বাইককে তত ক্ষণ বই। ডেকরেটরের লোকদের ফেলে যাওয়া পেরেক ঝরা শিউলির মতো রাস্তা ছেয়ে থাকে। পাংচার হওয়া বাইক ধাক্কিয়ে টায়ারওয়ালার দোকানে নিয়ে যেতে হয়। লক্ষ্মীপুজোর আগের দিনও গেলাম। টায়ারওয়ালা উৎফুল্ল সকাল থেকে পাংচার পার্টি এসেই চলেছে।
আপনি যদি কমিউনিস্ট হন (এখনও!), বলবেন এ হল সর্বহারার প্রতিশোধ। প্রয়োজন ফুরোলে যাদের ছুড়ে ফেলা হয়, এটা তাদের অন্তর্ঘাত। ফ্যাতাড়ু স্টাইল। আর একটু ভাঁজ দিয়ে বলতে পারেন: বিকেন্দ্রিত পরিসরে সাবঅল্টার্নের নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার প্রক্রিয়া।
ঈশ্বরবিশ্বাসীর চোখে, এটা দৈব মার। যে হতচ্ছাড়ারা পুজোর চার দিন ‘উফ্, জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেল, আ মোলো যা, পাঁচপেঁচি অশিক্ষিতদের সঙ্গে আমাকেও মোচ্ছব করতে হবে নাকি’ জাতীয় কথা বলে নিজেদের একই সঙ্গে আঁতেল ও নাস্তিক প্রমাণ করার চেষ্টা করে, রাস্তার পেরেক ঈশ্বরের হয়ে তাদের একটু কাঠি করে আর কী। নে, এ বার বিশমণি বাইক ধাক্কিয়ে দেখ ক্যামন লাগে।
ক্রমে পায়ে পায়ে পেরেকগুলো রাস্তা থেকে সরে যাবে। একটা-দুটো থাকবে, কিন্তু ম্যালিগন্যান্ট নয়।
তবে পেরেকরা জানে, আসছে বছর আবার হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.