পুকুর খনন করতে মাটি কাটা, রাস্তা মেরামত বড়জোর বন সৃজন। একশো দিনের কাজে চেনা এই শ্রম-তালিকায় এ বার নতুন সংযোজন কলা কিংবা লেবু বাগান পরিচর্যা।
আবশ্যক শুধু নিজস্ব পাঁচ কাঠা জমি। আর তা থাকলে কলা চাষের জন্য চারা, প্রয়োজনীয় সার এমনকী কৃষকের জন্য মহাত্মা গাঁধী জাতীয় কর্ম সংস্থান যোজনার দৈনিক ১৩৬ টাকা হিসেবে ৬০ দিনের মজুরিও বরাদ্দ করছে রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয়, বছর তিনেক পরে কলার ফলন হলে তার পূর্ণ দাবিদারও সংশ্লিষ্ট কৃষক।
একশো দিনের কাজে শ্রম দিবস বাড়াতেই সরকারের এই উদ্যোগ। এমনই দাবি রাজ্যের উদ্যানপালন দফতরের মন্ত্রী উজ্জল বিশ্বাসের। তিনি বলেন, “একশো দিনের কাজে এমন ব্যক্তিগত লাভজনক প্রকল্প এই প্রথম। মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রথম য়উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। জেলার ৯টি ব্লকের সাত হাজার কৃষককে ৫ কাঠা জমিতে কলা চাষের জন্য উন্নত মানের য়চারা ও সার দেওয়া হবে। চাষ করার জন্য পাবেন ৬০ দিনের মজুরিও।” দশ জন কৃষক পিছু এক জন সুপার ভাইজার থাকবেন। কলা গাছের বাড় বৃদ্ধি দেখে তাঁর রিপোর্টের ভিত্তিতেই চাষিরা দৈনিক মজুরি পাবেন। চাষিদের প্রশিক্ষণ দেবেন উদ্যান পালন দফতরের বিশেজ্ঞরা।
উদ্যোগ সফল হলে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ওই প্রকল্পে হাত দেবে সরকার। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যকে সামনে রেখে ওই প্রকল্পটি তৈরি করেছেন উদ্যান পালন দফতরের উপ-অধিকর্তা শুভদীপ নাথ। তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত লাভজনক এই প্রকল্পে একই সঙ্গে উৎসাহী হবেন ছোট কৃষকেরা। পাশাপাশি জাতীয় কর্মসংস্থান যোজনার মূল, শ্রম দিবস বাড়ানো, তাতেও সাফল্য আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।” চাষি তাঁর ৫ কাঠা জমিতে কলা চাষ করবেন। এর জন্য কৃষককে বিনামূল্যে ১০০টি উন্নত মানের কলার চারা ও সার দেওয়া হবে। এছাড়াও এই কলা বাগান তৈরির জন্য কৃষক পাবেন দৈনিক ১৩৬ টাকা হিসেবে ৬০ দিনের মজুরী। এই মজুরীর টাকা দেওয়া হবে জাতীয় কর্ম সংস্থান সুনিশ্চিত যোজনার মাধ্যমে। ৫ কাঠা জমিতে এই বাগান তৈরির জন্য প্রায় ১৩,৬০০ টাকা খরচ হবে বলে ধারনা উদ্যান পালন দফতরের। এই চাষের সমস্ত লাভই চাষি পাবেন।
প্রাথমিক ভাবে কলা চাষকে বেছে নেওয়া হলেও পরে লেবু, বিদেশী কুল, পেঁপের মতো আটপৌরে ফল চাষেও উৎসাহীত করা হবে চাষিদের। মন্ত্রী বলেন, “প্রাথমিক ভাবে এমনই আটটি ফলকে এই তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। যে জেলায় যে ফলের চাষ ভাল হয়, সেখানে সেই ফলের চাষ করতে উৎসাহীত করা হবে চাষিদের।” |