স্বাস্থ্য প্রকল্পের কাজ দেখতে পরিদর্শন
জেলায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল
ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন (এনআরএইচএম) প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থে ঠিক কী কী কাজ হয়েছে, স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামো নিয়ে রোগীদের বক্তব্য কী, এ সব খতিয়ে দেখতে পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছে এক কেন্দ্রীয় দল। ৮ সদস্যের এই দলটি জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শন করা শুরু করেছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দুই আধিকারিকও কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে রয়েছেন। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দলটি পশ্চিম মেদিনীপুরে থাকতে পারে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক দফা বৈঠক হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের। বৈঠকে এনআরএইচএম প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থে এ জেলায় কী কী কাজ চলছে, কাজ এগোতে কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, সে সব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পরিদর্শন শেষে ফের একদফা বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র বলেন, “এনআরএইচএম প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে একটি কেন্দ্রীয় দল এসেছে। দলের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শন করছে।” এসএন মিনা’র নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ওই দলটি রবিবার থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শন শুরু করে।
চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
রবিবার সন্ধ্যায় দলটি পৌঁছয় মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাঁচখুরি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। তার আগে মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে দীর্ঘক্ষণ ধরে বৈঠক হয়।
কেন এই পরিদর্শন? জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের উপর নজরদারি বাড়ানোর জন্য আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে নির্দেশ এসেছিল। দফতরের সচিব এম কে ভরদ্বাজ গত মে মাসে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে এক নির্দেশ পাঠান। তার প্রেক্ষিতে জঙ্গলমহল এলাকার তিন জেলাশাসকের কাছে ওই নির্দেশ পাঠিয়েছিল রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। জানানো হয়, এ ক্ষেত্রে ‘ক্লোজ মনিটরিং’ করা প্রয়োজন। নির্দেশ পেয়ে নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। নির্দেশের প্রেক্ষিতে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তার একটি রিপোর্টও পাঠানো হয়। গ্রামীণ স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের উন্নতির জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার এনআরএইচএম প্রকল্প চালু করেছে। বরাদ্দ অর্থে মূলত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়। জেলা প্রশাসনেরই এক সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রকল্পের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। এই প্রকল্পে আগে থেকে ২০ কোটি ৫২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৩৬১ টাকা পড়েছিল। পরে ২০১১- ’১২ আর্থিক বছরে জেলার জন্য আরও ৩৫ কোটি ৯৫ লক্ষ ৯ টাকা বরাদ্দ হয়। এর মধ্যে বেশ কয়েক কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। একটি প্রকল্পের ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪১২ টাকা আবার ফেরতও চলে গিয়েছে।
গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর একাংশ সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। কোথাও ছাঁদ চুঁইয়ে জল পড়ছে। কোথাও বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একাধিক ঘর ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ নিয়ে এক সময় বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। এনআরএইচএম প্রকল্পের টাকা কেন হাসপাতাল রক্ষণাবেক্ষণে খরচ করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন একাংশ আধিকারিক। প্রকল্পের প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণ, শৌচাগার সংস্কার, নতুন সাইকেল স্ট্যান্ড তৈরি-সহ বিভিন্ন খাতে খরচ করা হয়েছে। মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, সরকারি নিয়ম মেনে কাজ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কলেজ কাউন্সিলের অনুমোদনও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে জেলায় এসেছে কেন্দ্রীয় দলটি। সোমবার সকালে দলটি প্রথমে দাসপুর গ্রামীণ হাসপাতালে পৌঁছয়। দলের প্রতিনিধিদের কাছে পেয়ে রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন নানা অভাব-অভিযোগ জানান। কারও বক্তব্য, এখানে রোগীদের খাবার দেওয়া হয় না। কারও বক্তব্য, হাসপাতালে জেনারেটর না থাকায় লোডশেডিং হলে সমস্যা হয়। দলের প্রতিনিধিদের একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে। হাসপাতালগুলির প্রসূতি ওয়ার্ড-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডও পরিদর্শন করে দলটি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.