চালু হয়নি নয়া ভবন, বেহাল স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ
দু’বছর আগে নতুন ভবন তৈরি হয়ে গেলেও তা এখনও চালু হয়নি। জরাজীর্ণ পুরনো ভবনে চলে চিকিৎসা। প্রবেশ পথের চার পাশ জঙ্গলে ঢাকা। একমাত্র চিকিৎসকের দেখা কখনও মেলে, কখনও মেলে না বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। এই অবস্থাতেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে বলাগড়ের গুপ্তিপাড়া-২ পঞ্চায়েত এলাকার একমাত্র প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। ফলে, দুর্ভোগে পড়ছেন গ্রামবাসীরা। এ নিয়ে তাঁদের ক্ষোভও রয়েছে। অবিলম্বে তাঁরা প্রয়োজন মতো চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করে নতুন ভবনে চিকিৎসা পরিষেবা শুরু করার দাবি তুলেছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে শীঘ্রই ভাল ভাবে চিকিৎসা পরিষেবা শুরুর আশ্বাস দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বেশ পুরনো। গ্রামবাসীরা জানান, অন্তত বছর ২০ আগে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রসূতি বিভাগে ১০টি শয্যা ছিল। কিন্তু বর্তমানে আর প্রসূতিদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা হয় না। রয়েছে শুধু বহির্বিভাগ। সেখানে শুধু প্রাথমিক চিকিৎসাটুকই মেলে। কাগজে-কলমে ২ জন চিকিৎসক, ২ জন নার্স, তিন জন ফার্মাসিস্ট থাকলেও সকলের দেখা কখনই মেলে না। এক জন চিকিৎসকই অবস্থা সামাল দেন। তা-ও তিনি অনিয়মিত ভাবে আসেন বলে অভিযোগ।
তালাবন্ধ নতুন ভবন। ইনসেটে পুরনো বাড়ি। ছবি তুলেছেন তাপস ঘোষ।
এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে গুপ্তিপাড়া-১ ও ২, সোমরাবাজার-১ এবং বাকুলিয়া-ধোবাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু মানুষ নির্ভরশীল। তা ছাড়াও নদিয়ার শান্তিপুরের গঙ্গার চর সংলগ্ন কিছু এলাকার বাসিন্দা, রানাঘাটের তারাপুর, সুরেশনগর গ্রামেরও বহু মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন। কিন্তু চিকিৎসকের দেখা না পেলে তাঁদের যেতে হয় ২০ কিলোমিটার দূরের কালনা হাসপাতাল অথবা ১০ কিলোমিটার দূরের জিরাট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। অবস্থাপন্নেরা অবশ্য স্থানীয় নার্সিংহোমে চলে যান।
গুপ্তিপাড়া-১ গ্রামের বাসিন্দা সনাতন চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির দিকে স্বাস্থ্য দফতরের কোনও নজর নেই। নতুন ভবন তৈরি হওয়ার পরে দু’বছর কেটে গেলেও এখনও তা চালু হয়নি। রোগীদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পথে অনেক সময়ে অঘটন ঘটে যায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অ্যাম্বুল্যান্স মেলে না। সব মহলেই এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে। কিন্তু কিছুই হয়নি।’’ গুপ্তিপাড়া-২ গ্রামের বাসিন্দা মুক্ত ভড় বলেন, “মেয়ে সন্তানসম্ভবা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির যা হাল, দুশ্চিন্তায় রয়েছি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নতির জন্য প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।” একই কথা বলছেন গুপ্তিপাড়া-২ পঞ্চায়েতের প্রধান চায়না বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ব্যাপারে অনেক জায়গায় জানিয়েও সুরাহা হচ্ছে না। এক জন চিকিৎসক সারা দিনে এক থেকে দু’ঘণ্টা থাকেন। এর মধ্যে যাঁরা আসেন, তাঁরাই পরিষেবা পান।” ২০০৯ সালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পুরনো ভবনের পাশে নতুন ভবন তৈরি হয়। দু’বছর কেটে গেলেও এখনও তা তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রাতে জুয়া-মদের আড্ডা চলে বলে অভিযোগ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ঘিরে সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন বলাগড়ের বিএমওএইচ নিটুন বালা। তিনি বলেন, “চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। তাই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বেশি সংখ্যক চিকিৎসক দেওয়া যাচ্ছে না। নতুন ভবনটি এখনও স্বাস্থ্য দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। ভবনটি চালু করতে যে সংখ্যক চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী প্রয়োজন, তা এখনও অপ্রতুল। চেষ্টা চলছে দ্রুত সমস্যা মেটানোর।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তণিমা মণ্ডল জানান, গ্রামবাসীদের কথা মাথায় রেখে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে শীঘ্রই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে পরিষেবা চালু করা যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.