শিকে ছিঁড়েও ছিঁড়ছে না।
খোদ মন্ত্রীর ঘোষণার পরেও জমি হাতে পায়নি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা আইটিসি ইনফোটেক। মাস চারেক আগে শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, সংস্থাটিকে রাজারহাটে ১৫ একর জমি দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, জমির দাম সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে রয়েছে চূড়ান্ত অনুমোদন। ফলে অন্তত ৫০০-৭০০ কোটি টাকা লগ্নির সম্ভাবনাও এখন দূর অস্ৎ।
আইটিসি ইনফো-কে পুরনো দামে জমি দিতে মন্ত্রিসভার দ্বারস্থ হয় তথ্যপ্রযুক্তি দফতর। যে দরে ইনফোসিস ও উইপ্রোকে জমি দেওয়া হয়েছে, সেই দামেই জমি চায় এই সংস্থাও। কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়ায় হিডকো পুরনো দরে জমি দেওয়ার দায় নিতে চায় না। মন্ত্রিসভাও দাম নিয়ে বিতর্কের ঝুঁকি নিতে নারাজ। আপাতত বিষয়টি দাম নির্ধারক কমিটির টেবিলে।
শিল্পের জমি নিয়ে অন্যান্য রাজ্যের মতো এ রাজ্যেও সমস্যা বেড়েই চলেছে। জমির দাম ও ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নিয়েও বিতর্ক থামেনি। দামে সামঞ্জস্য আনতে রাজ্য সচিব পর্যায়ের এক কমিটি তৈরি করেছে। সেই কমিটির সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করছে আইটিসি ইনফো-র কলকাতা ক্যাম্পাসের ভবিষ্যৎ।
বিগত সরকারের আমলে এখানে ক্যাম্পাস তৈরির জন্য ২৫ একর জমি চেয়েছিল আইটিসি ইনফোটেক। রাজ্যের তরফ থেকে ৫ একর জমি দেওয়ার কথা বলা হয়। দাম ধরা হয় একর প্রতি ২.১৬ কোটি টাকা। এই চড়া দামের জেরে পিছিয়ে যায় সংস্থা। ফলে এখানে লগ্নি নিয়ে আর উচ্চবাচ্য করেনি তারা। পরে ইনফোসিস ও উইপ্রোকে একরে দেড় কোটি টাকা দরে জমি দেওয়া হলেও আই টি সি ইনফো-র ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি।
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সংস্থা ফের ক্যাম্পাস তৈরির আগ্রহ প্রকাশ করে। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বেঙ্গালুরু সফরের সময়ে যা আরও দানা বাঁধে। শুরু হয় জমির খোঁজ। এ বার সংস্থা ৪৫-৫০ একর জমি চায়। কিন্তু সেটা সম্ভব নয় বলে আগেই জানিয়েছে রাজ্য। কারণ রাজারহাটে নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে না। ফলে এক লপ্তে ৫০ একর জমি দেওয়া যাবে না। আপাতত ইনফোসিস ও উইপ্রো -র দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের মধ্যবর্তী জমি এই সংস্থার জন্য বরাদ্দ করেছে রাজ্য। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে দাম নিয়ে। হিডকো জানিয়েছে, একর প্রতি দেড় কোটি টাকা দরে জমি দেওয়া যাবে না। কারণ বাজার দর এর অনেক বেশি। এ দিকে অন্যান্য সংস্থা যে দামে জমি নিয়েছে, আইটিসি ইনফো তার বেশি দিতে নারাজ। তাই পুরনো দরে জমি দিতে মন্ত্রিসভার সায় নিতে এগোয় তথ্য-প্রযুক্তি দফতর। সে পথও আপাতত বন্ধ। |